প্রিয়নবির কুরবানি ও পশু নির্বাচন

ধর্ম ডেস্ক
ধর্ম ডেস্ক ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০২:৩৬ এএম, ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৭

কুরবানি হলো আল্লাহ তাআলার জন্য ত্যাগ-তিতিক্ষা প্রদর্শনের অন্যতম ইবাদত। যা যুগে যুগে সব নবি-রাসুলের জন্যই বিধিবদ্ধ ছিল। আর বর্তমান কুরবানি আমাদের জন্য হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালাম কর্তৃক পালনীয় ঐতিহাসিক আদর্শ ইবাদত।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কুরবানি এবং পশু নির্বাচন আমাদের জন্য দিক-নির্দেশনা। বিশ্বনবির কুরবানি এবং পশু নির্বাচন সম্পর্কিত হাদিস তুলে ধরা হলো-

হজরত আনাস ইবনে মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত তিনি বলেন, ‘একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কুরবানির ঈদে ধূসর বর্ণের শিংবিশিষ্ট দু’টি দুম্বা নিজ হাতে কুরবানি করলেন। (জবাই করার সময়) ‘বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার’ বললেন।

হাদিস বর্ণনাকারী হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি দেখেছি, তিনি তাঁর পা (জবাই করার সময়) দুম্বাদ্বয়ের পাজরের ওপর রেখেছেন এবং ‘বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার’ বলেছেন। (বুখারি, মুসলিম ও মিশকাত)

প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কুরবানির পশু নির্বাচনের বিষয়গুলো হাদিসে সুস্পষ্টভাবে ওঠে এসেছে-

হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এমন একটি দুম্বা আনতে আদেশ করলেন, যার শিং আছে। যা কালোতে হাঁটে, অর্থাৎ যার পা কালো; কালোতে বসে, অর্থাৎ যার পেট ও পাঁজর কালো; কালোতে দেখে, অর্থাৎ যার চোখ কালো।

সুতরাং কুরবানির জন্য এরূপ একটি দুম্বা আনা হলো। তখন তিনি বললেন, হে আয়েশা! ছুরিটা দাও। তারপর বললেন, পাথরের ওপরে একে ধার দাও।

তখন আমি তাই করলাম। অতঃপর তিনি তা নিলেন এবং দুম্বাটিকে ধরলেন এবং কাত করে শোয়ালেন, তারপর বললেন- আমি আল্লাহর নামে শুরু করছি, হে আল্লাহ! তুমি এটা মুহাম্মাদ, মুহাম্মাদের পরিবার-পরিজন এবং মুহাম্মাদের উম্মতের পক্ষ থেকে গ্রহণ কর। অতঃপর তিনি তা দ্বারা সকলকে খাবার খাওয়ালেন। (মুসলিম, মিশকাত)

অন্য হাদিসে এসেছে, হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঈদগাহে (কুরবানির পশু) জবেহ করতেন এবং নহর করতেন। (বুখারি)

হাদিসের শিক্ষা
>> কুরবানিকারীর জন্য পশু নিজ হাতে কুরবানি করা উত্তম।
>> কোনো লোকের সাহায্য ব্যতিত কুরবানির পশু জবাই করতে চাইলে নিজের পা দ্বারা পশুকে চেপে ধরা বৈধ।
>> কুরবানির পশু জবাইয়ের সময় ‘বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার’ মুখে বলা সুন্নাত। যদিও তা আল্লাহ তাআলার উদ্দেশ্যেই কুরবানি করা হয়।
>> ঈদগাহে কুরবানি করা উত্তম।
>> কুরবানি বা দম দেয়ার ক্ষেত্রে দুম্বা এবং ভেড়া উভয়টিই বকরির সমতুল্য। বকরির দ্বারা যা আদায় করা যায় দুম্বা ও ভেড়া দ্বারাও তা আদায় করা যায়।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কুরবানি আদায়ে বিশ্বনবির আদর্শ অনুসরণ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।