কাবা শরিফে নতুন গিলাফ পরানো হবে আজ

ধর্ম ডেস্ক
ধর্ম ডেস্ক ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫:৩৬ এএম, ৩১ আগস্ট ২০১৭

প্রতি বছরের ন্যায় এবারও পবিত্র কাবা শরিফের গিলাফ পরানো হবে। সুপ্রাচীন প্রথা অনুযায়ী আজ ৩১ আগস্ট (সৌদি আরবে ৯ জিলহজ) কাবা শরিফের পুরনো গিলাফ পবির্তন করে নতুন গিলাফ পরানো হয়।

এ দিন সব হাজি হজ পালনে আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করেন। আর বাইতুল্লাহ ভিড় কম থাকে। এ সুযোগেই সৌদি আরবের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কাবা শরিফে নতুন গিলাফ পরিয়ে থাকেন।

মিনা, আরাফা, মুজাদলিফার কাজ শেষ করে হাজিগণ যখন বাইতুল্লাহ আসেন তখন নতুন গিলাফ দেখতে পান। এ যেন নিষ্পাপ মানুষের জন্য প্রথম নতুন কোনো জিনিস দেখা। যেমনি মায়ের উদর থেকে ভূমিষ্ঠ হয়ে নবজাতক পৃথিবীর নতুন আলো ও সৌন্দর্য অবলোকন করে।

হজের সময় কাবা শরিফের গিলাফ নিচ থেকে তিন ফুট গুটিয়ে রাখা হয়। আর ভাজ করে রাখা গিলাফকে সাদা কাপড়ে মুড়িয়ে রাখা হয়। কারণ হাজিরা গিলাফের মধ্যে ঢুকে যায়। আর এমনটি ইহরামে পরিপন্থী কাজ।

গিলাফের বিবরণ
৬৭০ কেজি রেশম, ১৫০ কেজি সোনা ও রূপার তার, ৪৭ থান সিল্কের কাপড় সম্বনয়ে দক্ষ কারিগরের সহযোগিতায় নির্মিত হয় কাবার ‘কিসওয়া’ বা গিলাফ। কাবা শরিফের গিলাফের মোট আয়তন ৬৫৮ বর্গ মিটার। প্রতিটি টুকরোর ১ মিটার লম্বা, ৯৫ সেন্টিমিটার চওড়া। যা একটার সঙ্গে আরেকটাকে সেলাই করে যুক্ত করা হয়।

পবিত্র কাবা শরিফের গিলাফের মধ্যে কুরআনের আয়াতের ক্যালিগ্রাফি গুলোকে নিখুঁতভাবে স্বর্ণের প্রলেপযুক্ত তার দিয়ে সেলাই করা হয়।

আর সম্মানজন কাজটি করে থাকেন বনি শায়বা এবং বনি তালহা গোত্রের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। পবিত্র কাবা শরিফের চাবি হেফাজতের গুরুদায়িত্বও তাদের কাছেই।

বর্তমানে যে গোত্রপতির কাছে কাবা শরিফের চাবির দায়িত্ব রয়েছে; তিনি হলেন- আব্দুল আজিজ আল শায়বা।

প্রতি বছর ২টি গিলাফ তৈরি করা হয়। যার একটি ৮-৯ মাস সময়ে হাতে তৈরি করা হয়। আর অন্যটি মেশিনে ১ মাসে তৈরি করা হয়।

কাবা শরিফের ‘কিসওয়া’ তথা গিলাফ তৈরির পাশাপাশি মদিনা শরিফের প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হুজরার গিলাফও একই স্থান থেকে তৈরি করা হয়।

পবিত্র মক্কা নগরী থেকে ৪ কিলো মিটার দূরে উম্মুল জুদ এলাকায় অবস্থিত একটি কারখানায় এ গিলাফ তৈরি করা হয়।

বাদশাহ আব্দুল আজিজ আল-সৌদ তাঁর শাসনামলে ১৩৪৬ হিজরি সালে উম্মুল জুদ আঞ্চলে এ কারখানাটি স্থাপন করেন।

এ কারখানা স্থাপনের আগে মিশর, তুরস্ক ও পাকিস্তান থেকে এ গিলাফগুলো তৈরি করে আনা হতো।

উল্লেখ্য যে, বাদশাহ ফাহাদের সময়কালে ১৪০৩ ও ১৪১৭ হিজরিতে কাবা শরিফের গিলাফ পরিবর্তন করা হয়। এর আগে প্রত্যেক বছর কাবা শরিফে গিলাফ পরিবর্তন করা হতো না। তখন থেকেই প্রতি বছর কাবা শরিফের গিলাফ পরিবর্তন করা হয়।

কাবার গিলাফ পরিবর্তন করে নতুন গিলাফ পরানো এবং কাবা শরিফ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করাকে ইসলামের পূর্ব যুগ থেকেই সম্মানের কাজ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যা আজও বিদ্যমান।

মালিক তুব্বা নামক এক শাসক সর্বপ্রথম কাবা শরিফের গিলাফ পরিধান করান।

এমএমএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।