হজ প্রবর্তনের রহস্য

ধর্ম ডেস্ক
ধর্ম ডেস্ক ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:৪০ পিএম, ১০ আগস্ট ২০১৭

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর জন্য হজের মধ্যে রেখেছেন দুনিয়া ও পরকালের অসংখ্য কল্যাণ। যে কারণে বিশ্বের দূর-দূরান্ত থেকে আল্লাহর নির্দেশ পালনে ইবরাহিম আলাইহিস সালামের আহ্বানে সাড়া দিয়ে মুসলিম উম্মাহ আল্লাহ তাআলার সবচেয়ে প্রিয়স্থান বাইতুল্লাহ এবং আরাফায় এসে হাজির হয়।

হজ প্রবর্তনের পেছনে রয়েছে অনেক রহস্য। একে অপরের মিলন, পরস্পরের পরিচয় লাভ, কল্যাণকর ও তাকওয়ার কাজে সহযোগিতা করার এবং উপকারিতা লাভ করার সুযোগসহ তাদের কথা, কাজ ও জিকির এক ধ্বনিতে উচ্চারিত ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ স্লোগান হজের উপকারিতার অন্তর্ভূক্ত।

হজের এ দৃশ্য কিয়ামতের ময়দানের অবস্থাকে মানুষের মনে জাগ্রত করে দেয়; যার শুরু হয় কাফেনের সাদৃশ্য ইহরামের কাপড় পরিধানের মাধ্যমে। যার শেষ হয় নিষ্পাপ বান্দা হিসেবে নিজেকে সফলতার দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে।

হজ পালনে রয়েছে মানুষের আকিদায়, ইবাদতে, উদ্দেশ্য ও ওসিলাতে একত্রিতভাবে ঐক্যের প্রশিক্ষণ। হজের এ একত্রিত হওয়ার মাধ্যমেই পরস্পরের পরিচয় লাভ হয়; বন্ধুত্ব সৃষ্টি হয়; পরস্পরিক কুশলাদি বিনিময়ের সুযোগ লাভ হয়। যা কুরআনে আল্লাহ তাআলা এভাবে তুলে ধরেছেন-

‘হে মানুষ (সকল)! নিশ্চয়ই আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি এক পুরুষ ও এক নারী থেকে, পরে তোমাদেরকে বিভক্ত করেছি বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে, যাতে তোমরা একে অপরের সঙ্গে পরিচিতি লাভ করতে পার। তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তিই আল্লাহর নিকট অধিক মর্যাদাবান যে অধিক মুত্তাকি। আল্লাহ সবকিছু জানেন এবং সকল বিষয়ের খবরাখবর রাখেন। (সুরা আল-হিজরাত : আয়াত ১৩)

সর্বোপরি আল্লাহ তাআলা নিদর্শনসমূহ দেখতে যাওয়ার যে হুকুম তিনি হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালামের মাধ্যমে ঘোষণা করেছেন, তা-ও বাস্তবায়িত হয় কাবা, আরাফা, মুজদালিফা ও মিনায় উপস্থিত হওয়ার মাধ্যমে। আল্লাহ তাআলা বলেন-
‘এবং মানুষের নিকট হজের ঘোষণা করে দাও, তারা তোমার নিকট আসবে পায়ে হেঁটে ও সব ধরনের ক্ষীণকায় উটসমূহের পিঠে চড়ে; তারা আসবে দূর-দূরান্ত থেকে পথ অতিক্রম করে। যাতে তারা কল্যাণময় স্থানগুলোতে উপস্থিত হতে পারে এবং তিনি তাদেরকে চতুষ্পদ জন্তু হতে যা রিজিক হিসেবে দান করেছেন। উহার ওপর নির্দিষ্ট দিনগুলোতে আল্লাহর নাম উচ্চারণ করতে পারবে। (সুরা হজ : আয়াত ২৭-২৮)

আরও পড়ুন
>> হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালামের প্রবর্তিত করণীয় সুন্নাত
>> ঐতিহাসিক নিদর্শন ‘মাকামে ইবরাহিম’

পরিশেষে…
হজের মূল রহস্যই হলো পরকালের জন্য মানুষকে তৈরি করার প্রশিক্ষণ দেয়া। হজের মধ্যে পরকালের স্মরণে অনেক ইবাদতের সমাবেশ ঘটেছে। যার শুরু হয়েছে কাফন সাদৃশ্য ইহরামের পোশাক পরিধানের মাধ্যমে।

হাশরের ময়দানের অনুভূতি লাভে বাইতুল্লাহ তাওয়াফ এবং লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক ধ্বনি। সাফা ও মারওয়া পাহাড়ের দৌড়ানোর পেরেশানি। আরাফা, মিনা ও মুজদালিফায় অবস্থান, কংকর নিক্ষেপসহ আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য রোনাজারি করা।

মিনায় রাত যাপন এবং কংকর নিক্ষেপের পর কুরবানির পশু জবেহের মাধ্যমে নিজের মনের পশুকে কুরবানি করে মাথা মুণ্ডনের মাধ্যমে নিষ্পাপ হয়ে জান্নাতের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণই হলো হজ প্রবর্তনের মহান লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে তাঁর নৈকট্য অর্জনের জন্য বিনয়-নম্রতা প্রকাশ পূর্বক তাঁর দিকে ধাবিত হতে বেশি বেশি আল্লাহর স্মরণ করার তাওফিক দান করুন। হজের রোকনগুলো যথাযথ পালনের মাধ্যমে নিজেদের পাপ মোচন করে জান্নাতের জন্য তৈরি হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।