মধ্যবর্তী নামাজ প্রসঙ্গে আল্লাহর বিধান

ধর্ম ডেস্ক
ধর্ম ডেস্ক ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৭:০১ এএম, ০৩ আগস্ট ২০১৭

দুনিয়ার পেরেশানিতে লিপ্ত হয়ে মানুষ ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত নামাজসহ আল্লাহর বিধান বাস্তবায়নে বেমালুম ভুলে যায়। যে কারণে দাম্পত্য জীবনের বিভিন্ন বিষয় আলোচনার মধ্যে আল্লাহ তাআলা নামাজের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন।

বিশেষ করে যে ওয়াক্তের নামাজের প্রতি মানুষ বেশি বেখেয়াল হয়; ওই ওয়াক্ত নামাজের প্রতি গুরুত্বারোপ করে তা বান্দার জন্য তুলে ধরেছেন। মধ্যবর্তী নামাজ আদায় সমস্যা সমাধান উল্লেখ করে আল্লাহ তাআলা বলেন-
Quran
আয়াতের অনুবাদ
Quran

আয়াত পরিচিতি ও নাজিলের কারণ
সুরা বাকারার ২৩৮ নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা বান্দাদেরকে দুনিয়ার লেনদেন, পারস্পরিক ঝগড়া-বিবাদে লিপ্ত থেকে যেমন মহান আল্লাহর ইবাদত বন্দেগিকে ভুলে না যায়। নামাজের প্রতি যেন নিয়মানুবর্তী ও যত্নবান হয়। সে বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরেছেন।
আলোচ্য আয়াতে বলা হয়েছে-

নামাজের প্রতি যত্নবান হওয়ার কথা উল্লেখের পাশাপাশি দিনের মধ্যবর্তী নামাজের কথাও উল্লেখ রয়েছে। কেউ কেউ মধ্যবর্তী নামাজ বলতে আসরের নামাজকে বুঝিয়েছেন। কারণ তা দিন ও রাতের মধ্যবর্তী সময়ের পাশাপাশি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজেরও মধ্যবর্তী নামাজ।

আর মানুষ আসরের নামাজের সময় সবচেয়ে বেশি ব্যস্ত থাকে। তাই আল্লাহ তাআলা এ নামাজের প্রতি যথাযথ খেয়াল রাখার প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন।

ইসলামি বিশেষজ্ঞগণ নামাজের সংরক্ষণ এবং নিয়মানুবর্তী হওয়ার বিষয়কে তিন স্তরে ভাগ করেছেন-

সাধারণ স্তর
সাধারণ স্তর হলো নামাজ যথা সময়ে আদায় করা। নামাজের ফরজ, ওয়াজিবগুলো যথাযথ আদায় করা।

মধ্যবর্তী স্তর
নামাজের জন্য শরীরের সব ধরনের নাপাকি থেকে পবিত্রতায় সজ্জিত হওয়া। স্বভাব ও অভ্যন্তর হালাল খাদ্য গ্রহণে অভ্যস্ত হওয়া। অন্তরে খুশুখুজু তথা বিনয় ও আকুতি থাকার পাশাপাশি নামাজের সুন্নাত ও মোস্তাহাব কাজগুলোর প্রতি যথাযথ সতর্ক দৃষ্টি রাখা।

বিশেষ ও সর্বোচ্চ স্তর
নামাজি ব্যক্তির উপলব্ধি এমন হবে যে, নামাজে হৃদয়ের উপস্থিতি ও একাগ্রতা-নিমগ্নতা সুগভীর হওয়া। যাতে নামাজি বান্দার মনে হবে সে আল্লাহর সামনে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করছে।

মধ্যবর্তী নামাজ
অধিকাংশ তাফসিরকারকগণ আসরের নামাজকে বুঝিয়েছেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওই হাদিস দ্বারা এটা নির্দিষ্ট যে, যাতে খন্দকের যুদ্ধের দিন তিনি ‘সালাতে উসত্বা’কে আসরের নামাজ বলে অভিহিত করেছেন।

পরববর্তী ২৩৯নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা নামাজের গুরুত্বের প্রতি জোর দিয়েছেন যে, নামাজ আদায় করতেই হবে। হোক তা যুদ্ধক্ষেত্রে অথবা বিপদকালীন সময়ে। কোনো অবস্থাতেই তা মাফ হবে না। এ সব অবস্থায়ও নামাজ বর্জনের কোনো অনুমতি নেই।

দুশমনের ভয়ের সময় যেভাবে সম্ভব নামাজ আদায় করে নিতে হবে। হাঁটতে হাঁটতে হোক আর বাহনের ওপর বসে হোক নামাজ পড়ে নেয়া। আর যখন ভয়ের অবস্থা দূর হয়ে যাবে তখন স্বাভাবিক অবস্থার মতো নামাজ আদায় করা। প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্বাভাবিক অবস্থায় যেভাবে নামাজ আদায় করেছেন।

পড়ুন- সুরা বাকারার ২৩৭ নং আয়াত

আয়াতের শেষের দিকে বলা হয়েছে, ‘তোমরা আল্লাহ তাআলাকে স্মরণ কর। তোমরা নামাজসহ ইসলামের যে সব বিধিবিধান পালন কর; যা ইতিপূর্বে পালনের নিয়ম-নীতি তোমরা জানতে না, ওই সবের মধ্যে যেগুলো শেখানো হয়েছে তা যথাযথ পালন কর।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহ দুনিয়ার সব পেরেশানি ও ভয়ের মধ্যেও দিনের মধ্যবর্তী নামাজ যথাযথ গুরুত্ব সহকারে আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।