পবিত্র কাবা শরিফ তাওয়াফের ফজিলত

ধর্ম ডেস্ক
ধর্ম ডেস্ক ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৭:১১ এএম, ০২ আগস্ট ২০১৭

মুসলিম উম্মাহর হৃদয়ের স্পন্দন পবিত্র কাবা শরিফ। আল্লাহ তাআলা হজ ও ওমরার জন্য বাইতুল্লায় গমন এবং কাবা শরিফ তাওয়াফকে অকাট্য বিধানে পরিণত করেছেন। প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কাবা শরিফ তাওয়াফ ও তাঁর তাওয়াফকারীর অনেক মূল্যবান ফজিলত ও মর্যাদা ঘোষণা করেছেন।

তাওয়াফ আরবি শব্দ। যার অর্থ চক্কর দেয়া বা প্রদক্ষিণ করা। আল্লাহর ঘর কা’বা শরিফকে হাজরে আসওয়াদের কোনা থেকে শুরু করে কাবা শরিফের দরজা অতিক্রম করে চর্তুদিক ঘুরে আবার হাজরে আসওয়াদে এসে পৌছাকে তাওয়াফ বলে।

পবিত্র কাবা শরিফকে এভাবে ৭ বার চক্কর বা প্রদক্ষিণের মাধ্যমে এক তাওয়াফ সম্পন্ন করতে হয়।

পবিত্র কাবা শরিফ তাওয়াফ এমন এক ইবাদত; যা বছরব্যাপী করা যায়। ঈদের দিনে যেমন রোজা রাখা যায় না হজের সময় যেমন ওমরা পালন করা যায় না; তাওয়াফের জন্য এত দীর্ঘ সময়ের বিরতির কোনো বিধান নেই।

তবে শুধুমাত্র কাবা চত্ত্বরে জামাআতে নামাজ পড়া এবং খুতবা প্রদানের সময় ব্যতিত সারাক্ষণ তাওয়াফ করা যায়। হাদিসে তাওয়াফের অনেক ফজিলত ঘোষণা করা হয়েছে। যার কিছু তুলে ধরা হলো-

>> হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি; কেউ যদি যথাযথভাবে বাইতুল্লাহ তাওয়াফ করে এবং (মাকামে ইবরাহিমে) দুই রাকাআত নামাজ আদায় করে; তবে সে একটি গোলাম আজাদ করার ছাওয়াব পাবে।

তাওয়াফের প্রতিটি কদমে কদমে আল্লাহ তাআলা তাওয়াফকারীর জন্য ১০টি নেকি লেখেন, ১০টি গোনাহ ক্ষমা করেন এবং ১০টি মর্যাদা বৃদ্ধি করেন। (মুসনাদে আহমদ, তিরমিজি, বাইহাকি, মুসতাদরেকে হামিক, মিশকাত)

>> তাওয়াফের মর্যাদা এত বেশি যে প্রিয়নবি অন্য বর্ণনা উল্লেখ করেন- রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘হে আবদে মান্নাফের বংশধর! এ বাইতুল্লায় তাওয়াফ এবং নামাজ আদায়ে কাউকে বাঁধা দিবে না; চাই দিনে বা রাতে যে কোনো সময়ই ইচ্ছা করুক না কেন। (তিরমিজি, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ, মুসনাদে আহমদ)

>> কাবা শরিফ তাওয়াফকারীদের প্রতি আল্লাহ তাআলা বিশেষ রহমত বর্ষণ করেন। হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুর বর্ণনায় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘আল্লাহ তাআলা প্রতিদিন বাইতুল্লাহর ওপর ১২০টি রহমত নাজিল করেন, তন্মধ্যে ৬০টি রহমত শুধুমাত্র তাওয়াফকারীদের জন্য; ৪০টি মসজিদে হারামের মধ্যে নামাজ আদায়কারীদের জন্য; এবং অবশিষ্ট ২০টি ওই সব (সৌভাগ্যবান) লোকদের জন্য যারা (একাগ্রতার সঙ্গে আবেগ ও ভালবাসায়) বাইতুল্লা ‘র দিকে তাকিয়ে থাকে।’

পরিশেষে...
হজ ও ওমরা পালনকারীদের জ্ঞাতার্থে একটি বিষয় সুস্পষ্ট করতে চাই, ‘নামাজ বা অন্যান্য ইবাদত পৃথিবীর যে কোনো স্থানেই আদায় করা যায়। কিন্তু তাওয়াফ এমন এক ইবাদত যা শুধুমাত্র পবিত্র নগরী মক্কা মুকাররমার মসজিদে হারামের অন্তর্গত কাবা শরিফের চারদিকে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে চক্কর দেয়ার মাধ্যমে আদায় করতে হয়।

এ কারণেই এটি অন্য সব ইবাদতের চেয়ে আলাদা স্বাতন্ত্র বৈশিষ্ট্য এবং এর ফজিলত ও মর্যাদা অনেক বেশি।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে বাইতুল্লাহর হজ; আরাফা, মজদালিফা, মিনায় অবস্থান ও উপস্থিতি এবং মদিনার জিয়ারাত লাভের তাওফিক দান করুন। আল্লাহ এবং তাঁর রাসুলের ইশক, মহব্বত লাভের তাওফিক দান করুন। পরকালের সফলতার সৌভাগ্য দান করুন। আমিন।

এমএমএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।