মুসলিম উম্মাহর তাওয়াফে বাইতুল্লাহ

ধর্ম ডেস্ক
ধর্ম ডেস্ক ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩:২৭ এএম, ২৯ জুলাই ২০১৭

তাওয়াফ এমন এক ইবাদত, যা সব সময় করা যায়। হজের ৫দিন যেমন ওমরা করা মাকরূহে তাহরিমি, বছরে নির্দিষ্ট কিছুদিন যেমন রোজা পালন করা যায় না, তাওয়াফের বেলায় সে ধরনের কোনো বিধি নিষেধ নাই। শুধুমাত্র নামাজ আদায়ের সময় ব্যতীত অবিরাম চলে তাওয়াফের কার্যক্রম। এটা আল্লাহ তাআলার এক অনন্য নির্দশন।

বাইতুল্লায় আগমনকারীদের প্রথম কাজ
আল্লাহ তাআলার ঘর বাইতুল্লাহয় ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ আমি উপস্থিত হে আল্লাহ! আমি হাজির’ বলে যারা উপস্থিত হয়। তাদের প্রথম কাজই হলো কাবা শরীফ তথা আল্লাহর ঘরকে তাওয়াফ করা।

তাওয়াফের প্রকার
আল্লাহ তাআলার ঘরকে তাওয়াফ করা বা কাবা শরীফের চারদিকে চক্কর দেয়ার অনেক প্রকার রয়েছে। অনেকে এ তাওয়াফকে ৭ ভাগে ভাগ করেছেন। যার মধ্যে তিনটি হজের সঙ্গে সম্পৃক্ত। এ তাওয়াফ হজ ও ওমরার জন্য ফরজ ইবাদত। তাছাড়া বাইতুল্লাহ তাওয়াফ করা ওয়াজিব সুন্নত এবং নফলও রয়েছে। যার শ্রেণি বিভাগগুলো তুলে ধরা হলো-

তাওয়াফে কুদুম
পবিত্র নগরী মক্কায় প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গে বাইতুল্লাহ তাওয়াফ করতে হয়। মিকাতের বাইরে অবস্থানকারী লোকদের মধ্যে যারা ‘হজে ইফরাদ’ বা শুধু হজ এবং ‘হজে কিরান’ বা এক ইহরামে হজ ও ওমরা পালন করবে তাদের জন্য এ তাওয়াফ সুন্নাত।

তাওয়াফে জিয়ারাত
এ তাওয়াফ করা হজের ৩টি ফরজের একটি। তাওয়াফে জিয়ারাত ১০ জিলহজ সুর্যোদয়ের পর থেকে শুরু করে ১২ জিলহজ সূর্যাস্তের আগে আদায় করা ওয়াজিব। এ তাওয়াফ আদায়ে দুটি করণীয় রয়েছে-

>> এ তাওয়াফে রমল এবং ইযতিবা আছে। তবে ১০ জিলহজ যারা মিনায় বড় শয়তানকে পাথর মেরে কুরবানি করে মাথা মুণ্ডনের মাধ্যমে হালাল হয়ে গেছেন তাদের জন্য এ তাওয়াফের রমল (বীরদর্পে হেলেদুলে) করা লাগবে। আর ইযতিবা (ইহরামের কাপড় ডান বগলের নীচ দিয়ে বাম কাঁধের ওপর ফেলা) করা লাগবে না।

>> যারা তাওয়াফে কুদম-এ (বাইতুল্লায় প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে যে তাওয়াফ) রমল এবং সাফা-মারওয়ায় সাঈ করেছেন। তারাও পুনরায় তাওয়াফে জিয়ারাতের সময় রমল এবং সাঈ করবে না।

বিদায়ী তাওয়াফ
এ তাওয়াফকে তাওয়াফে বিদা বা তাওয়াফে সদরও বলা হয়। মীকাতের বাইরে অবস্থানকারী হাজিগণ যখন দেশে ফিরে যাবেন তখন তাদের জন্য এ তাওয়াফ করা ওয়াজিব। এ তাওয়াফেও রমল, ইযতিবা ও সাঈ নেই।

উল্লেখিত তিনটি তাওয়াফ হজের সঙ্গে সম্পৃক্ত। এ ছাড়াও আরো ৪টি তাওয়াফ রয়েছে। আর তা হলো-
উমরার তাওয়াফ
উমরার নিয়তে যারা তাওয়াফ করবেন; তাদের জন্য এ তাওয়াফ ওমরার রুকন এবং তা আদায় করা ফরজ। এ তাওয়াফে রমল ও ইযতিবা করতে হয়। তাওয়াফের পর সাঈ করতে হয়।

মানতের তাওয়াফ
এ তাওয়াফ মানত হজ পালনকারীদের জন্য আদায় করা ওয়াজিব।

তাওয়াফে তাহিয়্যা
মসজিদে হারামে প্রবেশকারীদের জন্য এ তাওয়াফ আদায় করা মুস্তাহাব। তবে কেউ যদি অন্য কোনো প্রকার তাওয়াফ করে থাকেন তবে সেটিই তার জন্য এ তাওয়াফের স্থলাভিষিক্ত হয়ে যাবে।

নফল তাওয়াফ
এ তাওয়াফ যখন ইচ্ছা আদায় করা যায়। এ তাওয়াফে রমল, ইযতিবা এবং সাঈ নেই। আল্লাহ তাআলা প্রতিদিন বাইতুল্লায় ১২০টি রহমত নাজিল করেন। এর মধ্যে শুধুমাত্র বাইতুল্লাহর তাওয়াফকারীদের জন্যই ৬০টি রহমত নির্ধারিত।

মনে রাখতে হবে-
হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা একদিন। শুধুমাত্র ৯ জিলহজ দুপুরের পর থেকে সুর্যাস্তের আগ পর্যন্ত আরাফার ময়দানে অবস্থান। এ ছাড়া পবিত্র নগরী মক্কায় অবস্থানকালে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতই হলো বাইতুল্লাহয় তাওয়াফ করা।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর হজ, ওমরা ও যিয়ারতকারীদের জন্য বেশি বেশি বাইতুল্লাহ তাওয়াফ করার তাওফিক দান করুন। আল্লাহ তাআলার অফুরন্ত রহমত বরকত ও কল্যাণ লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।