কুরআন ও হাদিসের বর্ণনায় নামাজ আদায়ের উপকারিতা
নামাজ দ্বীনের খুঁটি বা স্তম্ভ। আল্লাহ তাআলা বান্দার জন্য দিনে এবং রাতে ৫ ওয়াক্ত নামাজকে ফরজ করেছেন। ইসলামে ঈমান গ্রহণের পরেই নামাজের স্থান। উদ্দেশ্য হলো- ‘বান্দার সঙ্গে মাওলার সম্পর্ক গভীর করা। নামাজ আদায়ের মাধ্যমে মানুষ আল্লাহর ভয় এবং ভালোবাসা বাস্তব জীবনে জারি করা।’
আল্লাহ তাআলা নামাজ আদায়ের ফজিলত বা উপকারিতা বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, ‘আপনি আপনার প্রতি প্রত্যাদিষ্ট কিতাব পাঠ করুন এবং নামাজ প্রতিষ্ঠা করুন। নিশ্চয় নামাজ অশ্লীল ও অসৎ কাজ থেকে বিরত রাখে। আল্লাহর স্মরণ সর্বশ্রেষ্ঠ; তোমরা যা কর; আল্লাহ তাআলা তা জানেন।’ (সুরা আনকাবুত : আয়াত ৪৫)
আলোচ্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে কুরআন পাঠ এবং নামাজ প্রতিষ্ঠার প্রত্যাদেশ পাঠান। অতঃপর নামাজ পড়ার উপকারিতা বর্ণনা করেন। এবং নামাজ হলো আল্লাহ তাআলাকে স্মরণ করার সর্বশ্রেষ্ঠ মাধ্যম। যা এ আয়াত দ্বারাই প্রমাণিত।
নামাজই একমাত্র ইবাদাত যা মানুষকে দুনিয়ার সব অন্যায় অপরাধ থেকে মুক্ত রাখে। যে ব্যক্তি দুনিয়ার সব অপরাধ থেকে মুক্ত থাকবে; ওই ব্যক্তির পরকাল হবে সফলতায় ভরপুর। প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদিসে যার প্রমাণ পাওয়া যায়।
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি যে, (তিনি বর্ণনা করেন) তোমরা বলো : যদি তোমাদের মধ্যে কারো দরজার (বাড়ির) সামনে দিয়ে নদী প্রবাহিত হয় এবং ওই ব্যক্তি তাতে দৈনিক ৫ বার গোসল করে; তাহলে তার শরীরে কি কোনো ময়লা অবশিষ্ট থাকবে?
সাহাবাগণ নিবেদন করলেন, ‘কোনো ময়লাই আর অবশিষ্ট থাকবে না।’
রাসুলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘সুতরাং (দৈনিক) ৫ বার নামাজের দৃষ্টান্ত হলো এই যে, আল্লাহর এর মাধ্যমে গোনাহসমূহকে নিশ্চিহ্ন করে দেবেন। (বুখারি ও মুসলিম)
নামাজের উপকারিতা বর্ণনায় হজরত ওসমান ইবনে আফফান রাদিয়াল্লাহু আনহুর হাদিসটি মানুষের জন্য সর্বোত্তম উপমা ও উপদেশ। আর তা হলো- ‘যে মুসলমানেরই ফরজ নামাজের সময় হয়ে যায়, তারপর সে (নামাজের উদ্দেশ্যে) ভালোভাবে ওজু করে এবং খুশূ-খুজুর সঙ্গে (একনিষ্ঠ মনে) রুকু-সিজদা আদায় করে।
ওই ব্যক্তির জন্য এ নামাজ আদায় তার আগের জীবনের গোনাহের কাফফারা হয়ে যায়; অবশ্য সে যদি আর কবিরা (বড়) গোনাহে লিপ্ত না হয় এবং এ অবস্থার ওপর অটল থাকে। (মুসলিম)
দুনিয়ায় প্রত্যেক ধর্মপ্রাণ মুসলমানের উচিত নামাজের জন্য সদা প্রস্তুত থাকা এবং একনিষ্ঠ মনে নামাজ আদায় করা। এভাবে নামাজ আদায়ের মাধ্যমেই মাওলার সঙ্গে বান্দার প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হবে। মানুষ লাভ করবে দুনিয়া ও পরকালে গোনাহমুক্ত পরিস্ফুটিত সফল জীবন।
আল্লাহ তাআলা উম্মতে মুসলিমাকে নামাজের প্রতি যথাযথ যত্নবান হওয়ার তাওফিক দান করুন। হাদিসে বর্ণিত উপকারিতা লাভে সময় মতো নামাজ আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/আরআইপি