‘সালাতুত তাসবিহ’র ফজিলত বর্ণনায় বিশ্বনবি
যে নামাজে বার বার ‘সুবহানাল্লাহি ওয়াল হামদুলিল্লাহি ওয়া লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার’ তাসবিহটি পড়া হয়, ওই নামাজকে সালাতুত তাসবিহ বা তাসবিহ-এর নামাজ। এ নামাজের ফজিলত বর্ণনা করেছে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। যা তিনি তাঁর চাচা হজরত আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুকে বর্ণনা করে শুনান। দীর্ঘ হাদিসটি তুলে ধরা হলো-
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, একদিন প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (আমার পিতা) হজরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিবকে বললেন, ‘হে আব্বাস, হে চাচাজান! আমি কি আপনাকে দেব না? আমি কি আপনাকে দান করব না? আমি কি আপনাকে সংবাদ দেব না? আমি কি আপনার সাথে দশটি সৎকাজ করব না? (অর্থাৎ দশটি উত্তম তাসবিহ শিক্ষা দেব না)
যখন আপনি তার (তাসবিহ) আমল করবেন তখন আল্লাহ তাআলা আপনার আগের, পরের, পুরাতন, নতুন, সব প্রকার গোনাহ, ইচ্ছাকৃত ও অনিচ্ছাকৃত গোনাহ, সগিরা গোনাহ, কবিরা গোনাহ, গুপ্ত ও প্রকাশ্য গোনাহ গোনাহ মাফ করে দেবেন।
আপনি চার রাকাআত নামাজ পড়বেন এবং প্রত্যেক রাকাআতে সুরা ফাতেহা পাঠ করবেন এবং যে কোনো একটি সুরা মেলাবেন।
>> প্রথম রাকাআতে যখন কেরাত পাঠ (সুরা মিলানো) সম্পন্ন করবেন; তখন আপনি দাঁড়ানো অবস্থায় বলবেন- سُبْحَانَ اللهِ وَالْحَمْدُ لِلهِ وَلَا اِلهَ اِلَّا اللهُ وَاللهُ اَكْبَرُ
(সুবহানাল্লাহি ওয়াল হামদুলিল্লাহি ওয়া লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার) ১৫ বার।
>> অতঃপর রুকু করবেন এবং রুকু অবস্থায় (এ তাসবিহ) ১০ বার পাঠ করবেন।
>> তারপর রুকু থেকে মাথা ওঠাবেন (সোজা হয়ে দাঁড়ানো অবস্থায় এ সাতবিহ) ১০ বার পাঠ করবেন।
>> অতঃপর সিজদায় মাথা নত করবেন এবং সিজদা অবস্থায় (এ তাসবিহ) ১০ বার পাঠ করবেন।
>> তারপর সিজদা থেকে মাথা ওঠাবেন এবং (বসা অবস্থায় এ তাসবিহ) ১০ বার পাঠ করবেন।
>> অতঃপর পুনরায় সিজদা করবেন এবং সিজদায় গিয়ে ১০ বার এবং
>> পুনরায় সিজদা থেকে মাথা ওঠিয়ে ১০ বার এ তাসবিহ পাঠ করবেন।
এ তাসবিহ প্রত্যেক রাকাআতে ৭৫ বার করে ৪ রাকাআত নামাজের প্রতি রাকাআতেই এভাবে আদায় করবেন।
এভাবে যদি প্রতিদিন একবার এ নামাজ পড়তে সক্ষম হন; তবে তা পড়বেন। আর যদি সক্ষম না হন, তবে প্রত্যেক জুমআর দিনে একবার পড়বনে।
তাও যদি না পারেন তবে প্রত্যেক মাসে একবার পড়বেন। তাও যদি না পারেন তবে প্রত্যেক বছর একবার পড়বেন, আর যদি তাও না পারেন তবে আপনার জীবনে অন্তত একবার পড়বেন। (তিরমিজি, আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ, মিশকাত)
উল্লেখিত দীর্ঘ হাদিসে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জীবনে একবার হলেও তাসবিহ নামাজ আদায়ের প্রতি গুরুত্ব প্রদান করেছেন। আর পবিত্র রমজান মাসই সাতাতুত তাসবিহ বা তাসবিহ-এর নামাজ আদায়ের উত্তম সুযোগ ও সময়।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে রমজান মাসে তাসবিহ নামাজসহ যে কোনো নামাজ এবং ইবাদত-বন্দেগি যথাযথ আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/পিআর