ফিতরা আদায় করবেন যারা


প্রকাশিত: ০৬:১৪ এএম, ১৩ জুন ২০১৭

রমজান মাসের রোজার ত্রুটি-বিচ্যুতি দূর করতেই সাদকাতুল ফিতরকে আবশ্যক করা হয়েছে। নামাজের ত্রুটি বিচ্যুতি দূর করতে যেমন সাহু সিজদা আদায় করতে হয় তেমনি রমজানের ত্রুটি বিচ্যুতি দূর করতে ফিতরা আদায় করতে হয়।

রমজান মাসে সিয়াম সাধনার পর ঈদের দিন যাতে ধনী-গরিব উভয়ে উত্তম পোশাক ও উন্নতমানে খাবার খেতে পারে; অন্যান্য সময়ের মতো অভাব অনুভব করতে না হয় সে জন্য নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিকদের জন্য এ ফিতরা আদায় করা আবশ্যক।

যাদের জন্য ফিতরা ওয়াজিব
সাদকাতুল ফিতর আদায় করা যাদের ওপর ওয়াজিব। এ বিষয়টির ব্যাপারে ইসলামি শরিয়ত কিছু শর্ত আরোপ করেছে। তা হলো-
>> সাদকাতুল ফিতর আদায়কারীকে স্বাধীন হতে হবে। গোলাম তথা পরাধীন ব্যক্তির ওপর সাদকাতুল ফিতর ওয়াজিব নয়।
>> মুসলমান হতে হবে। অমুসলিমদের ওপর সাদকাতুল ফিতর ওয়াজিব নয়।
>> নিসাব পরিমাণ সম্পদের অধিকারী হতে হবে। যদি কেউ নিসাব পরিমান সম্পদের মালিক না হয়, তবে তার ওপর সাদকাতুল ফিতর ওয়াজিব নয়।
>> নিসাব পরিমাণ সম্পদ প্রয়োজনীয় সব নিজিস থেকে অতিরিক্ত হতে হবে।

তবে বিষয়টি এমন নয় যে, নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক না হলে ফিতরা দেয়া যাবে না। বরং ফিতরা ওই সব লোকদের আদায় করা উচিত, যারা ঈদের রাত ও দিনে নিজের এবং পরিবারের সবার একান্ত প্রয়োজনীয় আহার নির্বাহের পর অতিরিক্ত খাদ্য বা সম্পদ মজুদ থাকে।

ফিতরা দেয়ার জন্য জাকাত ফরজ হওয়ার বিষয়াবলীর কোনো বিধান নেই। সুতরাং এ কথা বলা যাবে না যে, ‘আমার ওপর তো জাকাত ফরজ নয়; বা আমারতো নিসাব পরিমাণ সম্পদ নেই।

যারা ফিতরা আদায় করতে পারবেন
>> যাদের কাছে রমজানের শেষ রোজায় ঈদের যাবতীয় খরচাদি মিটিয়ে অতিরিক্ত অর্থ থাকবে, তাদের জন্য পরিবারের সব সদস্যদের পক্ষ থেকে ফিতরা আদায় করা উত্তম।

>> ফিতরা দেয়ার জন্য জায়গা-জমি, বাড়ি-গাড়ি, ধন-সম্পদ নিসাব পরিমাণ মালের মালিক হওয়া জরুরি নয়। এ সাদকা কাফফারার মতো যা ধনী-গরিব সকলেই আদায় করতে বাধ্য।

Vision

>> পরিবারের সবার জন্য নির্ধারিত হারে ফিতরা দিতে হবে। পরিবারের দায়িত্বশীল ব্যক্তি শুধুমাত্র নিজের ফিতরা নয়, বরং তার অধীনস্থ ছোট-বড় পরিবারের সব সদস্যদের এমনকি ঈদের নামাজের পূর্বে সদ্য ভূমিষ্ট বাচ্চার জন্যও সাদকাতুল ফিতর দিতে হবে।

>> যে ব্যক্তির ফিতরা আদায় করার মতো কিছু সম্পদ আছে; কিন্তু ওই ব্যক্তির সমপরিমাণ দেনা বা ঋণও আছে; তবুও সে ব্যক্তি ফিতরা আদায় করতে পারবে। তবে যদি ঋণদাতা তার ঋণ পরিশোধ করার জন্য তাগাদা দেয়; তাহলে সেক্ষেত্রে ফিতরা না দিয়ে আগে ঋণ পরিশোধ করা আবশ্যক।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সব সামর্থবান নারী ও পুরুষদেরকে রোজার ত্রুটি বিচ্যুতি থেকে মুক্ত হওয়ার পাশাপাশি গরিব দুঃখীর মুখে হাসি ফোটাতে অসহায়দের পাশে দাঁড়ানোর তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।