ফিতরা আদায়ের উপকারিতা


প্রকাশিত: ০৯:২৯ এএম, ১২ জুন ২০১৭

ফিতরা রমজানের রোজার ভুলত্রুটির ক্ষতিপূরণ স্বরূপ যেরূপ নামাজের ভুলে সাহু সিজদা দিতে হয়। এ কারণে কল্যাণের আরেক নাম বলা হয় ফিতরাকে। এ ফিতরা আদায় করার বিষয়টি দ্বিতীয় হিজরির শাবান মাসে বিধিবদ্ধ হয়।

সাদকাতুল ফিতর
মানুষের মৌলিক প্রয়োজন পূরণ ও ঋণ আদায়ের পর জাকাতের নিসাব পরিমাণ সম্পদ অথবা ওই পরিমাণ সোনা ও রূপার মালিক হয়; এমন প্রত্যেক মুসলিম নারী ও পুরুষের ওপর সাদকাতুল ফিতর আদায় করা ওয়াজিব বা আবশ্যক।

এ ফিতরা আদায়ে আনন্দ-অনুভূতি লাভ করে সেই ব্যক্তি, যে বা যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের মহব্বত অন্তরে পোষণ করে ফিতরা আদায় করে। সামথ্যবান রোজাদারের জন্য ফিতরা আদায়ে রয়েছে কিছু গুরুত্বপূর্ণ হিকমত ও উপকারিতা।

Vision

ফিতরার উপকারিতা
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রোজাকে অনর্থক কথা ও অশালীন কথা হতে পবিত্র করার জন্য এবং নিঃস্বদের মুখে খাদ্য দেয়ার জন্য রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাদকায়ে ফিতর নির্ধারণ করেছেন। (আবু দাউদ, মিশকাত)

ফিতরা হলো রোজাদারের দ্বারা ঘটে যাওয়া সব অবাঞ্ছনীয় কাজ, যৌনাচার তথা ফাহেশা কাজ থেকে পবিত্র করার অন্যতম মাধ্যম। রোজা পালনরত অবস্থায় রোজাদার যে ভুল করেছে ফেলেছে তার ক্ষতিপূরণ স্বরূপ। কেননা আল্লাহ নিজেই বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই ভালো কাজ বা নেকির কাজ; মন্দকাজ বা পাপকে ধ্বংস করে দেয়।’ (সুরা হুদ : আয়াত ১১৪)

ঈদের দিন গরিব ও মিসকিনদের আনন্দ-বিনোদন, উত্তম খাবারের আয়োজনের সহজ ব্যবস্থাপনায় ফিতরা সহায়ক হয়ে থাকে। ফিতরা থেকে প্রাপ্ত অর্থে তারাও ধনীদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারে।

যারা অস্বচ্ছল, অন্যের সাহায্য লাভে খাবার যোগাড় করতে হয়; তাদেরকে অন্তত ঈদের দিনটাতে যাতে লাঞ্ছিত হতে না হয় এবং ঘরে খাবার তৈরির ব্যবস্থা দেখে তাদের মনের ভেতর যেন খুশির ঢেউ আসে; এ কারণেই সর্বযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ সমাজবিজ্ঞানী, উম্মতের দরদি প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ফিতরা প্রবর্তনের মাধ্যমে গরিবের জন্য এই সুব্যবস্থা করে গেছেন।

আল্লাহ তাআলার নিকট অনুতপ্ত হৃদয়ে গভীর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনের বহিঃপ্রকাশ হলো এই ফিতরা আদায়। কেননা আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে দীর্ঘ এক মাস রোজা রাখার তাওফিক দান করেছেন। রোজা পালন কালে ইচ্ছায় অনিচ্ছায় ছোট ছোট ত্রুটি হয়ে গেছে। যা থেকে ক্ষমা লাভ করে রোজার পরিপূর্ণ ফায়েদা ফিতরার মাধ্যমে অর্জিত হয়।

আল্লাহ তাআলা দীর্ঘ একটি বছর মুসিলম উম্মাহকে সুস্থ ও নিরাপদ রাখার পর পবিত্র রমজানের রোজা দান করেছেন। তাই এ দেহ সুস্থ রাখতে শুকরিয়া আদায়ের আর্থিক কুরবানিই হলো ফিতরা।

পরিশেষে…
রহমত, বরকত, মাগফিরাত ও নাজাতের মাসে রোজা পালন শেষে যাতে আত্মশুদ্ধির প্রক্রিয়া পরিপূর্ণ হয়। সে লক্ষ্যে আল্লাহর পথে মাল (অর্থ) খরচের মাধ্যমে নিজেদেরকে পবিত্রতা করার জন্যই প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম গরিব দুঃখীর জন্য ফিতরার ব্যবস্থা করেছেন।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ফিতরার বিবিধ উপকার লাভে গরিব ও অসহায়দের মাঝে ফিতরা আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।