তারাবিতে আজ নারী ও শিশু অধিকারসহ যে বিধানগুলো পড়া হবে


প্রকাশিত: ০৯:০০ এএম, ৩০ মে ২০১৭

চলতি রমজানের ৪র্থ তারাবি অনুষ্ঠিত হবে আজ। রক্তপণ (দিয়ত), নারী ও শিশু অধিকার প্রতিষ্ঠা, হিজরত, সত্য সাক্ষ্য, ন্যায়বিচার, অজু ও তায়াম্মুমের বিধানসহ, হারাম মাসে শিকার, বিয়ে ও দাম্পত্য জীবনে শান্তি আনয়নের কৌশলসহ ইয়াতিমের অধিকার সম্পর্কিত আয়াতগুলো পাঠ করা হবে আজ।

আজকের দেড় পারায় থাকছে সুরা নিসার ৮৮ নং আয়াত থেকে শেষ পর্যন্ত (১৭৬ আয়াত) এবং সুরা মায়িদার ০১-৮২নং আয়াত পর্যন্ত। আজকের পঠিত অংশের সংক্ষিপ্ত আলোচ্য বিষয়গুলো তুলে ধরা হলো-

সুরা নিসা
‘সুরা নিসা’ কুরআনুল কারিমের ৪র্থ সুরা। সুরাটি মদিনায় তৃতীয় হিজরির শেষ দিক থেকে নিয়ে চতুর্থ হিজরির শেষ দিক এবং পঞ্চম হিজরির প্রথম দিকে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অংশ নাজিল হয়। ২৪ রুকুর এ সুরাটির আয়াত সংখ্যা ১৭৬। তৃতীয় তরাবিতে পাঠ করা হয়েছিল ১ থেকে ৮৭ নং আয়াত পর্যন্ত। আজ ৪র্থ তারাবিতে পাঠ করা হবে ৮৮নং আয়াত থেকে ১৭৬ন আয়াত পর্যন্ত।

৮৮ আয়াত থেকে শেষ পর্যন্ত বিষয়াবলী
মুনাফিকদের ব্যাপারে কুরআনের নীতি : ওহুদ যুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য রওয়ানা হয়ে যারা পিছু হটেছিল, তাদের ব্যাপারে আলোচিত হয়েছে।
দিয়ত বা রক্তপণের বিধান। এক মুসলিম আরেক মুসলিমকে হত্যা করলে তার দিয়ত বা রক্তপণ কি হবে এ সম্পর্কিত বিষয়াদি ওঠে এসেছে সুরা নিসার ৯২নং আয়াতে।

হিজরত প্রসঙ্গ। দ্বীন এবং ঈমান বাঁচানোর লক্ষ্যে হিজরত করা ইসলামে ফরজ। হিজরতের বিধান, পরিচয়, উপকারিতা, বরকত ও ফজিলত আলোচিত হয়েছে সুরা নিসার ৯৭ থেকে ১০০ আয়াতে।

নামাজে কসরের বিধান, কখন কসর করা যাবে। আবার শত্রুর আক্রমনে নামাজের বিধান কেমন হবে বা ভয়কালনি নামাজের পদ্ধতিই বা কেমন হবে এ প্রসঙ্গে আলোচিত হয়েছে সুরা নিসার ১০১ থেকে ১০৪নং আয়াতে।

ক্ষমা লাভে তাওবার গুরুত্ব, তাওবার জরুরি বিষয়াবলী, গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণে ইজমার গরুত্ব, তা অস্বীকারের পরিণতি এবং জুলুম-অত্যাচারের ধরন ও আল্লাহর সঙ্গে অংশীদার সাব্যস্তের শাস্তি, মানুষের প্রকাশ্য দুশমন শয়তানের কর্মফল নির্ধারণের মূলনীতি আলোচিত হয়েছে ১১০ নং আয়াত থেকে ১২৬নং আয়াতে।

সুরা নিসার গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নারী ও শিশু অধিকার, দাম্পত্য জীবনে একাধিক স্ত্রী গ্রহণ ও ভারসাম্য রক্ষা করার নীতি আলোচিত হয়েছে ১২৭ ও ১২৮নং আয়াতে।

দুনিয়ায় মানুষের কর্মফল নির্ধারণের মূলনীতি আলোচিত হয়েছে ১৩৪নং আয়াতে।

কোনো ঈমানদারের কুফরি করার পরিণতি ও মুনাফিকের পরিচয় ও তা থেকে বেঁচে থাকার উপায় আলোচিত হয়েছে ১৩৭-১৪৭নং আয়াতে।

ইয়াহুদিদের অঙ্গীকার ভঙ্গ, হঠকারিতা, ঈসা আলাইহিস সালামের আগমন এবং ইয়াহুদিদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যদানের বিষয়সহ প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি ঈমান গ্রহণের শর্ত ও তাঁর মুজিযা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে ১৫৩ থেকে শেষ পর্যন্ত আয়াতে।
তৃতীয় তারাবিতে যে বিষয়গুলো পাঠ করা হয়েছে-

সুরা মায়িদা
কুরআনুল কারিমের ৫ম সুরা ‘সুরা মায়িদা’। এর আয়াত সংখ্যা ১২০ রুকু সংখ্যা ১৬। সুরাটি মদিনায় অবতীর্ণ হয়েছে। হুদায়বিয়ার সন্ধির পর ৬ হিজরির শেষের দিকে অথবা ৭ হিজরির প্রথম দিকে এ সুরাটি নাজিল হয়। আজকের সুরায় ওহুদ যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে মদিনা ও তার পাশ্ববর্তী অঞ্চলে অবস্থা এবং হুদায়বিয়ার সন্ধির সময়কার উল্লেখ যোগ্য বিষয়াবলী নিয়ে নাজিল হয়েছে সুরা মায়িদা। আজ এ সুরার ১ থেকে ৮২নং আয়াত পর্যন্ত পড়া হবে।

আয়াত ১ থেকে ৮২
ইহরাম অবস্থায় শিকারের বিধান, যুদ্ধ বিগ্রহ নিষিদ্ধ বছরর ৪টি সন্মানিত মাসে আলোচনা, ঈদ আনন্দ উদযাপনের ইসলামি নীতিমালাসহ প্রাণী বা জন্তু শিকার ও তার বিধান ওঠে এসেছে এ সুরায়।

আহলে কিতাব (ইয়াহুদি-খ্রিস্টান) নারীদের বিয়ে করার বিধানের পাশাপাশি মুশরিক নারীদের বিয়ে করার বিধানও আলেচিত হয়েছে এখানে।

নামাজের জন্য অজু ও তায়াম্মুমের বিধান, দুনিয়ার যাবতীয় কাজে সাক্ষ্য দানের রীতিনীতি, আহলে কিতাবের অঙ্গীকার ভঙ্গে বিস্তারিত বিবরণ ওঠে এসেছে।

লেনদেন তথা করজে হাসানার বিধান, বনি ইসরাইলের প্রতি আল্লাহ তাআলার নেয়ামতের বর্ণনা, হাবিল কাবিলের ঘটনা ও আনুষাঙ্গিক তাৎপর্য, মানুষ হত্যার পরিণতি, কুরআনি আইন বাস্তবানের অভিনব ও বৈপ্লবিক পদ্ধতি এবং ইসলামি শরিয়তের শাস্তির ধরন আলোচিত হয়েছে।

চোরের শাস্তি, ইসলামি রাষ্ট্রে অমুসলিমের মামলা-মুকাদ্দমা বিধান, আল্লাহ তাআলা সম্পর্কে আহলে কিতাবদের ধৃষ্ঠতাপূর্ণ উক্তি ও তার পরিণতির ঘোষণা, বনি ইসরাইলের কুপরিনাম ও নাসারাদের মানসিকতা আলোচিত হয়েছে আজকের পঠিত তারাবিহ অংশে।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কুরআনের উল্লেখিত বিষয়গুলো বুঝে বাস্তব জীবনে আমল করার তাওফিক দান করুন। কুরআনের সমাজ বিনির্মাণের তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।