যে কাজ রমজানের রোজাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে


প্রকাশিত: ০৪:০১ এএম, ২৯ মে ২০১৭

রমজান মাস আল্লাহ তাআলার অতি প্রিয় মাস। হাদিসের ভাষায় এ মাসে যে ব্যক্তি অন্যায় কাজ পরিহার করে রোজা পালন করবে; স্বয়ং আল্লাহ তাআলা ওই ব্যক্তির রোজার প্রতিদান দিবেন।

রমজান মাস প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেন, ‘রমজান মাসই হল সে মাস, যাতে নাজিল করা হয়েছে কুরআন; যা মানুষের জন্য হেদায়েত এবং সত্যপথ যাত্রীদের জন্য সুষ্পষ্ট পথ নির্দেশ আর ন্যায় ও অন্যায়ের মাঝে পার্থক্য বিধানকারী। কাজেই তোমাদের মধ্যে যে লোক এ মাসটি পাবে, সে এ মাসের রোযা রাখবে।’

এ পবিত্র মাসে কোনো ব্যক্তি যদি রোজা রেখে অন্যায় পরিহার না করে; তবে তার রোজা রাখা শুধুমাত্র উপবাস বৈ কিছুই নয়। তাই রমজান মাসের ফজিলত লাভে যে কাজগুলো পরিত্যাগ করা খুবই জরুরি। তা তুলে ধরা হলো-

>> জবানের হেফাজত না করা
রোজা রেখে মিথ্যা, গিবত, পরনিন্দাসহ অশ্লীল কথাবার্তা ও ঝগড়া থেকেও রিবত থাকাও জরুরি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘রোজা অবস্থায় তোমাদের কেউ যেন অশ্লীল কথা না বলে এবং শোরগোল, হট্টগোলে লিপ্ত না হয়। বরং যদি কোনো ব্যক্তি কোনো রোজাদারের সঙ্গে গালিগালাজ বা মারামারি-কাটাকাটিতে লিপ্ত হতে চায় তবে সে যেন (অনুরূপ আচরণ না করে) বলবে, আমি রোজাদার।’

অন্য হাদিসে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রোজা অবস্থায় মিথ্যাচার ও মন্দ কাজ ত্যাগ করেনি তার পানাহার ত্যাগে আল্লাহর কোনো প্রয়োজন নেই।’ (বুখারি)

উল্লেখিত হাদিসের আলোকে বুঝা যায় যে, রোজা অবস্থায় মারামারি ও ঝগড়াঝাটি তো দূরের কথা, শোরগোল করাও রোজার আদব পরিপন্থী। আর এ সব কাজ জবান দ্বারা হয়ে থাকে।

জবানের হেফাজতে অশ্লীল কথা ও কাজ থেকে বিরত থেকে সর্বদা জিকির-আজকার, কুরআন তেলাওয়াতসহ ইবাদত-বন্দেগি এবং যথাযথ দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে সময় অতিবাহিত করা উচিত।

>> দৃষ্টি সংযত না রাখা
রমজান মাসে দৃষ্টি সংযত রাখা জরুরি। তাই রোজা রেখে মাহরাম ব্যতিত অন্য নারীদের থেকে নিজের চোখকে হেফাজত করা। তা হোক টিভি-সিনেমা কিংবা ইন্টারনেট; ম্যাগাজিন বা পত্রিকায় অথবা সরাসরি। রোজার হক আদায়ে দৃষ্টিকে সংযত রাখুন।

Vision

>> কানের হেফাজত না করা
রমজানের পবিত্রতা রক্ষা এবং ফজিলত লাভে গান, বাদ্য-বাজনা, খারাপ কথা ও কাজ, পরনিন্দা-গিবত ও অশ্লীল মন্তব্য ও কথা শুনা থেকেও বিরত থাকা জরুরি।

>> হাত-পাসহ অন্যান্য অঙ্গের হেফাজত না করা
রমজানের দিন অন্যায় পথে হাত ও পা বাড়ানো থেকে বিরত থাকা জরুরি। জবানের হেফাজতের পাশাপাশি অন্যায় ও খারাজ কাজ থেকে হাত ও পাসহ অন্যান্য সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে বিরত রাখা।

>> অন্তরের হেফাজত না করা
রমজানের পবিত্রতা রক্ষায় মনের গহিনে অলিক চিন্তাভাবনা ও কল্পনা করা থেকে বিরত থাকা জরুরি। রোজা পালনরত অবস্থায় কোনো গোনাহের কল্পনা করা; বিগত দিনের কোনো অন্যায় বা গোনাহের কথা স্মরণ করে তৃপ্তি লাভ ইত্যাদি পরিহার করা জরুরি। অন্তরকে সব ধরনের খারাপ ও মন্দ চিন্তা, হিংসা, কু-ধারণা ও কল্পনা থেকে হেফাজত করা।

রমজানের রোজা পালনের জন্য সাহরি ও ইফতারে হারাম আহার পরিহার করা জরুরি। কারণ ইবাদত কবুলের পূর্বশতই হলো হালাল রুটি ও রুজি। হারাম ভক্ষণে কোনো ইবাদতই কবুল হয় না।

ইমাম গাজ্জালি রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি সারাদিন রোজা রেখে হারাম খাবার দ্বারা ইফতার করে সে যেন একটি অট্টালিকা বা দালানঘর নির্মাণ করে আর একটি শহর ধ্বংস করে।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে উল্লেখিত কাজগুলো পরিহার করে রমজানের রোজা পালনের তাওফিক দান করুন। রমজান মাসের এ শিক্ষাকে সারা জীবন আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।