ইবাদত-বন্দেগিতে বাধা প্রদান সবচেয়ে বড় জুলুম
আল্লাহ তাআলা মানুষকে তাঁর ইবাদত-বন্দেগি করার জন্য সৃষ্টি করেছেন। আর দুনিয়াতে মানুষের শ্রেষ্ঠ ইবাদতখানা হচ্ছে মসজিদ। মসজিদে প্রবেশ করে ইবাদত-বন্দেগি করতে বাধা প্রধানকারী ব্যক্তি দুনিয়ার সবচেয়ে বড় জালেম।
কুরআনুল কারিমে আল্লাহ তাআলা এ বিষয়ে সুস্পষ্ট ভাষায় উল্লেখ করেছেন, ওই ব্যক্তিই সবচেয়ে বড় জালেম; যে আল্লাহর ঘরে তাঁরই স্মরণে (ইবাদত-বন্দেগিতে) বাধা দেয়। এখানে মুসলিম উম্মাহর সর্বশ্রেষ্ঠ তীর্থস্থান, হৃদয়ের স্পন্দন বাইতুল্লাহ’র কথা বলা হয়েছে।
যারা মানুষকে বাইতুল্লাহ প্রবেশে বাধা দেয় আল্লাহ তাআলা তাদেরকে সবচেয়ে বড় জালেম হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন-
‘আর তার চেয়ে বড় জালেম কে হবে, যে আল্লাহর ঘরে তাঁর নাম স্মরণ করা থেকে মানুষকে বাধা দেয় এবং সেগুলোকে ধ্বংস করার প্রচেষ্টা চালায়, এই ধরনের লোকেরা এসব ইবাদাত গৃহে প্রবেশের যোগ্যতা রাখে না। আর যদি কখনো প্রবেশ করে, তাহলে ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায় প্রবেশ করতে পারে। তাদের জন্য রয়েছে এ দুনিয়ার লাঞ্ছনা এবং আখিরাতের বিরাট শাস্তি। (সুরা বাক্বারা : আয়াত ১১৪)
৬ষ্ঠ হিজরিতে বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ১৪০০ (চৌদ্দশত) নিরস্ত্র সাহাবি নিয়ে মদিনা হতে ওমরা পালনের উদ্দেশ্যে বাইতুল্লাহ জিয়ারতে রওয়ানা হন। হুদাইবিয়া নামক স্থানে গেলে মক্কার কুরাইশরা তাঁকে বাইতুল্লাহ জিয়ারতে মক্কায় প্রবেশে বাঁধা প্রদান করে।
বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এ সফরের উদ্দেশ্য ছিল বাইতুল্লায় ওমরা পালন করা। কোনো ধরনের যুদ্ধ-বিগ্রহের চিন্তাই ছিল না।
প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওমরা পালনের কথা নিশ্চিত হওয়ার পরও মক্কার পৌত্তলিকরা তাঁকে বাইতুল্লায় প্রবেশে বাধা দেয়। যার ফলে আল্লাহ তাআলা এ আয়াত নাজিল করেন। (ইবনে জারির)
অন্য বর্ণনায় এসেছে, ‘হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন, খ্রিস্টান রাজা তাইতুস ইবনে আছিয়ানুস ইয়াহুদিদের বিরুদ্ধে যু্দ্ধ করতে গিয়ে বাইতুল মুকাদ্দাস তছনছ ও তাওরাত কিতাব পুড়িয়ে দিয়েছিল, ওই ঘটনা স্মরণ করানোর লক্ষ্যে আল্লাহ তাআলা এ আয়াত নাজিল করেন।
পরিশেষে...
কোনো উপসনাগৃহে কাউকে ইবাদত-বন্দেগি করতে বাধা প্রদান করা যাবে না। যারাই ইবাদতকারী ব্যক্তিকে তার স্মরণ থেকে বাধা প্রদান করবে; সে-ই ব্যক্তিই জালেম।
সর্বোপরি এ আয়াত যখন যে কারণেই নাজিল হোক না কেন, মসজিদে প্রবেশে বাধা প্রদান শুধু ইসলামের প্রাথমিক যুগেই হয়নি বরং যুগ যুগ ধরেই মসজিদে প্রবেশে তথা ইবাদত-বন্দেগিতে বাধার কার্যক্রম চলে আসছে, এখনো চলছে, ভবিষ্যতেও ইসলাম বিদ্বেষীরা এ কাজ অব্যাহত রাখবে।
আল্লাহ তাআলা এ সব ব্যক্তিদের ব্যাপারেই কুরআনুল কারিমে তাদের দুনিয়ার লাঞ্ছনা-অপমান এবং পরজগতের কঠিন শাস্তির কথা ঘোষণা করেছেন।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে এ ধরনের ঘৃণিত ও জঘন্য অপরাধ থেকে হেফাজত করুন। শুধু মসজিদই নয়, কুরআন-সুন্নাহ বিরোধী যে কোনো বিধান লঙ্ঘণ থেকে উম্মাতে মুসলিমাকে হেফাজত করুন। কুরআনের বিধি-বিধান দুনিয়ার সব জায়গায় যথাযথ বাস্তবায়ন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/এমএস