মনের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে যেভাবে দোয়া করবেন
মানুষ জাগতিক বিপদাপদ তথা প্রয়োজনে আল্লাহর নিকট দোয়া করে। কারো দোয়া সঙ্গে সঙ্গে কবুল হয়ে যায়; আবার কারো দোয়া অনেক দেরিতে কবুল হয়; আবার কারো দোয়ার পরিণাম পরকালে প্রদান করা হবে। কিন্তু দোয়া করার আগে দোয়া কবুলের পরিবেশ তৈরি করতে হবে। যেভাবে দোয়া করলে আল্লাহ তাআলা বান্দার দোয়া কবুল করবেন। আল্লাহ তাআলা এ সব বিষয় কুরআনে মানুষকে জানিয়ে দিয়েছেন।
কিভাবে দোয়া করলে আল্লাহ তাআলা বান্দার আবেদন কবুল করবেন। বান্দা কিভাবে উত্তম ফলাফল লাভ করবেন এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমের সুস্পষ্ট দিক-নির্দেশনা প্রদান করেছেন। দোয়া কবুলে বান্দাকে অবশ্যই কুরআন-সুন্নাহর নির্দেশিত পদ্ধতিতেই দোয়া করতে হবে। দোয়ার ফলাফল লাভে সংক্ষেপে কিছু দিক-নির্দেশনা তুলে ধরা হলো-
>> বান্দার জন্য সব সময় আল্লাহ তাআলার দরবারে আনুগত্য, অসহায়ত্ব ও দীনতা-হীনতা প্রকাশ করে দোয়া করা উত্তম। আল্লাহ তাআলার নির্দেশও এমন। তিনি বলেন, ‘তোমরা স্বীয় প্রতিপালককে ডাক কাকুতি মিনতি করে এবং অতিগোপনে। তিনি সীমা অতিক্রমকারীদের পছন্দ করেন না। পৃথিবীকে কুসংস্কারমুক্ত ও ঠিক করার পর তাতে ফাসাদ সৃষ্টি করো না। তাকে ডাক, ভয় ও আশা সহকারে। নিশ্চয় আল্লাহর দয়া ও করুনা সৎকর্মশীলদের নিকটবর্তী। (সুরা আরাফ : আয়াত ৫৫-৫৬)
>> দোয়া করতে হবে পরিপূর্ণ ইখলাছ তথা একাগ্রতার সঙ্গে। কেননা আল্লাহ তাঁর বান্দাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘তিনি চিরঞ্জীব, তিনি ব্যতিত আর কোনো ইলাহ নেই। অতএব তাকে ডাক (তাঁর নিকট চাও) একনিষ্ঠ ইবাদতের মাধ্যম (সুরা মুমিন : আয়াত ৬৬)
>> মানুষের সব চেয়ে বড় দোয়া হলে ধৈর্য ও নামাজ। আল্লাহ তাআলা কুরআনের অনেক জায়গায় ধৈর্য এবং নামাজের মাধ্যমে তাঁর সাহায্য প্রার্থনা করতে নির্দেশ প্রদান করেছেন। আল্লাহ বলেন, তোমরা নামাজ এবং ধৈর্যের মাধ্যমে আমার কাছে সাহায্য চাও। এবং বিনীতগণ ব্যতিত আর সকলের নিকট নিশ্চিতভাবে উভয়টি (নামাজ ও ধৈর্য) অত্যন্ত কঠিন। (সুরা বাক্বারা : আয়াত ৪৫)
>> প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর উম্মতের জন্য দোয়া কবুলে চমৎকার দিকনির্দেশনা প্রদান করেছেন। হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, যখন তোমরা দোয়া করবে তখন প্রার্থিত (কাঙ্ক্ষিত) জিনিস লাভের বিষয়ে সুদৃঢ় বিশ্বাস রাখবে এবং বলবে হে আল্লাহ! যদি তুমি চাও আমাকে প্রদান কর, কেননা তোমাকে (আল্লাহ) বাধ্যকারী কেউ নেই। (বুখারি)
সর্বোপরি কথা হলো-
কুরআন ও হাদিসের দিক-নির্দেশনা মেনে আল্লাহ তাআলার নিকট দোয়া করাই বান্দার একান্ত দায়িত্ব ও কর্তব্য। বান্দা যখন সঠিক নিয়মে একনিষ্ঠতার সঙ্গে আল্লাহ তাআলার নিকট কোনো জিনিস কামনা করে; আল্লাহ তাআলা বান্দাকে তা দিতে কার্পণ্য করেন না। হাদিসের ভাষায়- বরং বান্দা যখন আল্লাহ তাআলঅর নিকট কোনো কিছু প্রার্থনা করেন; তখন আল্লাহ তাআলা বান্দাকে ফিরিয়ে দিতে লজ্জাবোধ করেন।
সুতরাং আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কুরআন সুন্নাহ মোতাবেক দোয়া করার তাওফিক দান করুন। বাস্তব জীবনে কুরআন-সুন্নাহ ভিত্তিক জীবন পরিচালনার তাওফিক দান করুন। মুসলিম উম্মাহকে দুনিয়া ও পরকালের সফলতা দান করুন। আমিন।
এমএমএস/জেআইএম