বিশ্বমানবতার কল্যাণে আলোর দিশা প্রিয়নবি


প্রকাশিত: ০৫:২১ এএম, ১০ মে ২০১৭

আল্লাহ তাআলা চরম অজ্ঞতার যুগে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে শান্তি ও মুক্তির বারতা দিয়ে এ পৃথিবীতে প্রেরণ করেন। ইনসাফ প্রতিষ্ঠায় দান করেন পবিত্র কুরআনুল কারিম। প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বর্বর অন্ধকার যুগে কুরআনের আলোয় আলোকিত করে তুলে গোটা আরব ভূখণ্ড। অন্যায় ও অসত্যের যুগে তিনি হয়ে ওঠেন সত্য ও সুন্দরের জীবন্ত প্রতীক।

প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাতে গড়া ইসলাম আল্লাহ তাআলার একমাত্র মনোনীত ধর্ম। চিরন্তন সত্য ও মানবতার কল্যাণের মূর্ত প্রতীক হলো ইসলাম। বিশ্ব মানবতার সার্বিক কল্যাণ ও সাফল্যের একমাত্র ধারক ও বাহক ইসলাম।

আল্লাহ তাআলা মানুষের দুনিয়ার যাবতীয় কল্যাণ ও পরকালের সাফলতা লাভের বর্ণনা কুরআনুল কারিমের লিপিবদ্ধ করে দিয়েছেন। এ কল্যাণ ও সফলতার মূলমন্ত্র মানুষের নিকট পৌছে দেয়ার জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ এবং সর্বশেষ নবি হিসেবে হজরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সুসংবাদদাতা ও ভয় প্রদর্শনকারী হিসেবে প্রেরণ করেছেন। কুরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন-

‘(হে রাসুল!) নিশ্চয় আমি আপনাকে সত্য বাণী (কুরআন) নিয়ে সুসংবাদ দাতা ও ভীতি প্রদর্শনকারী হিসেবে (দুনিয়ায়) প্রেরণ করেছি। আর আপনাকে দোজখীদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে না। (সুরা বাক্বারা : আয়াত ১১৯)

আয়াতে কারিমায় আল্লাহ তাআলা তাঁর প্রিয় রাসুলকে সত্য ও ন্যায়ের মানদণ্ড এবং ইনসাফের প্রতীক হিসেবে মানুষের মাঝে আল্লাহ তাআলার অফুরন্ত রহমত বরকত ও কল্যাণের সুসংবাদ প্রদানকারী হিসেবে প্রেরণ করেছেন।

আবার দুনিয়ার এ ক্ষণস্থায়ী জীবনে অন্যায় ও অপরাধ থেকে মুক্ত থাকতে মুনকার ও ফাহেশা কাজের কঠিন পরিণতির কথা জানিয়ে দিতে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে ভয় প্রদর্শনকারী হিসেবে পাঠিয়েছেন।

প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুসংবাদ প্রদানকারী ও ভীতি প্রদর্শনকারীর প্রমাণ পাওয়া যায় তাঁর মক্কা ও মদিনার জীবনের দিনগুলোতে। যে লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য নিয়ে আল্লাহ তাআলা তাকে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন তিনি সে লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে সত্য ধর্ম (ইসলাম এবং কুরআন) নিয়েই সমগ্র বিশ্ব মানবতার নিকট ইসলামের সুমহান আদর্শ তুলে ধরেছিলেন।

মানুষকে সত্যের পথে আহ্বান করেছেন; সঠিক কল্যাণ ও সফলতার পথের সন্ধান দিয়ে তিনি তার মহান দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সঠিক দায়িত্ব পালনের ঘোষণা আল্লাহ তাআলা কুরআনে এভাবে দিয়েছেন-

‘আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে (ইসলাম) পূর্নাঙ্গ করে দিলাম, তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্যে দ্বীন (জীবন ব্যবস্থা) হিসেবে পছন্দ করলাম। অতএব যে ব্যাক্তি তীব্র ক্ষুধায় কাতর হয়ে পড়ে; কিন্তু কোনো গোনাহর প্রতি প্রবণতা না থাকে, তবে নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা ক্ষমাশীল।’ (সুরা মায়েদা : আয়াত ৩)

আল্লাহ তাআলার এ ঘোষণা ছিল প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি মহা পুরস্কার ও নবুয়তি জীবনের দাওয়াতে দ্বীনের কাজের চূড়ান্ত স্বীকৃতি।

প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আনীত সে ঐশীগ্রন্থ কুরআনুল কারিম আজও আমাদের মাঝে অবিকৃত অবস্থায় বিদ্যমান। দুনিয়ার শান্তি ও কল্যাণ লাভ এবং পরকালের চিরস্থায়ী জীবনের সফলতায় শুধুমাত্র এ কুরআনের বিধান বাস্তবায়নের সুসংবাদ গ্রহণ এবং অন্তরে তাঁর ভয় পোষণেই যথেষ্ট।

আর প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সত্যের দাওয়াত বর্জনকারীদের, ইসলামের বিধি-বিধান অমান্যকারীদের, এমনকি তাঁর প্রতি অবাধ্যমূলক আচরণকারীদের পরকালীন জিন্দেগির কঠোর শাস্তির কথা জানিয়েও সতর্ক করেছেন। তাইতো তিনি ছিলেন বিশ্ব মানবতার জন্য নাজির তথা ভয় প্রদর্শনকারী।

এ কারণেই আল্লাহ তাআলা কুরআনে সুস্পষ্ট ভাষায় উল্লেখ করেছেন, যারা প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সতর্কবাণী শুনার পরও ইসলামের বিধান মেনে চলেনি; তাদের ব্যাপারে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হবে না।

সুতরাং যারা বিশ্বনবির পথে ও মতে চলবে, তাদের জন্য সফলতা। আর যারা তাঁর অবাধ্য হবে, তারাই হবে ব্যর্থ এবং দোজখের অধিবাসী। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে বিশ্বনবির উপর নাজিলকৃত ঐশী বাণীর ওপর আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।