দুনিয়া ও পরকালের সফলতার জন্য যে আমল যথেষ্ট (ভিডিও)


প্রকাশিত: ০৯:৩৫ এএম, ০৭ মে ২০১৭

আল্লাহ তাআলা মানুষের কল্যাণে পবিত্র কুরআনুল কারিম নাজিল করেছেন। এ কুরআনে রয়েছে ফজিলতপূর্ণ বিশেষ বিশেষ সুরা এবং আয়াত। প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে সুরা ও আয়াতগুলোর বিশেষ আমলও ঘোষণা করেছেন। তন্মধ্যে সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াত অন্যতম।

হাদিসের বর্ণনায় সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াতের ফজিলত
>> প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, নির্ঘাত আল্লাহ তাআলা সুরা বাক্বারাকে এমন দুটি আয়াত দ্বারা শেষ করেছেন; যা আমাকে আরশের বিশেষ ধনভাণ্ডার থেকে দান করা হয়েছে। সুতরাং তোমরা তা শেখ এবং নিজেদের স্ত্রী ও সন্তান-সন্তুতিকে শিক্ষা দাও। (বাইহাকি)

>> হজরত আবু মাসউদ আনসারি রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, কেউ যদি (সুরা বাকারার) এই আয়াত দু`টি পাঠ (মনে প্রাণে বিশ্বাস করে সে অনুযায়ী আমল) করে; তবে তা (দুনিয়া ও আখিরাতে) তার জন্য যথেষ্ট। (বুখারি ও মুসলিম)

>> হজরত নোমান ইবনে বশির রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘আসমান-জমিন সৃষ্টির দু’হাজার বছর পূর্বে আল্লাহ তাআলা লিপিবদ্ধ করেছেন যে, সূরা বাকারার শেষ দু’আয়াত যে ঘরে তিনদিন পাঠ করা হবে; সে ঘরের কাছে শয়তান আসতে পারবে না।’ (বগবি, তাফসিরে মাজহারি)

>> হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন যে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘যখন আমাকে সিদরাতুল মুনতাহায় (মেরাজের রজণীতে) নিয়ে যাওয়া হয়; তখন তিনটি জিনিস দান করা হয়।
>> পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ;
>> সুরা বাকারার শেষ আয়াতসমূহ;
>> এ উম্মতের যে সব লোক শিরক না করে তাদের কবিরা গোনাহ মাফ হওয়ার সুসংবাদ। (মুসলিম, তাফসিরে মাজহারি)

>> হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে একটি বর্ণনা পাওয়া যায় যে, ‘দুটি আয়াত, যা পবিত্র কুরআনের সুরা বাকারার শেষে রয়েছে, এ আয়াতসমূহ (পরকালে মুক্তির জন্য) শাফায়াত করবে; এ আয়াত আল্লাহর অত্যন্ত প্রিয়।

>> এ কারণে হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু ও হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘আমাদের মতে যার সামান্যতম জ্ঞান আছে, ওই ব্যক্তি এ আয়াতদুটি পাঠ করা ব্যতিত নিদ্রা যাবে না।

সুরা বাক্বারার শেষ দুই আয়াত-

Fazilat

উচ্চারণ : আ-মানার রাসু-লু বিমা- উংযিলা ইলাইহি মির রাব্বিহি- ওয়াল মু’মিনু-ন। কুল্লুন আ-মান বিল্লা-হি ওয়া মালা-ইকাতিহি- ওয়া কুতুবিহি- ওয়া রুসুলিহি-। লা- নুফাররিক্বু বাইনা আহাদিম মির রুসুলিহি-। ওয়া ক্বা-লু- সামিনা- ওয়া আত্বানা- গুফরা-নাকা রাব্বানা- ওয়া ইলাইকাল মাছি-র।
লা- ইউকাল্লিফুল্লা-হু নাফসান ইল্লা- উসআ’হা- লাহা- মা- কাসাবাত ওয়া আলাইহা- মাকতাসাবাত, রাব্বানা- লা- তুআখিজনা- ইন্নাসিনা- আও আখত্বনা-, রাব্বানা- ওয়া লা- তাহমিল আলাইনা- ইছরাং কামা- হামালতাহু- আলাল্লাজি-না মিং ক্বাবলিনা-, রাব্বানা- ওয়া লা- তুহাম্মিলনা- মা- লা- ত্ব-ক্বাতা লানা- বিহি-, ওয়া’ফু আ’ন্না ওয়াগফিরলানা- ওয়ারহামনা-, আংতা মাওলা-না- ফাংছুরনা- আলাল ক্বাওমিল কা-ফিরি-ন। (সুরা বাক্বারা : আয়াত ২৮৫-২৮৬)

উচ্চারণ ও তেলাওয়াতের ভিডিওটি দেখুন

পরিশেষে…
মুসলিম শরিফের একটি হাদিসের উদ্ধৃতি তুলে ধরছি- সাহাবায়ে কেরাম একবার প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট বসা অবস্থায় ছিলেন। হজরত জিবরিল আলাইহিস সালামও সেখানে উপস্থিত। এমন সময় আকস্মাৎ আসমান থেকে একটি ভয়ংকর আওয়াজ আসল।

হজরত জিবরিল আলাইহি সালাম তখন ওপরের দিকে দৃষ্টিপাত করলেন এবং বললেন, ‘আসমানের এমন একটি দরজা উন্মুক্ত হলো- যা ইতিপূর্বে আর উন্মুক্ত হয়নি।

তখন সে দরজা দিয়ে একজন ফেরেশতা প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের খেদমতে হাজির হলেন এবং বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আপনি সন্তুষ্ট হোন। আপনাকে এমন দুটি নূর প্রদান করা হয়েছে; যা ইতিপূর্বে কোনো নবিকে প্রদান করা হয়নি।

তা হলো সুরা ফাতেহা এবং সুরা বাকারার শেষ আয়াতসমূহ; এর প্রত্যেকটি অক্ষরে আপনাকে নূর প্রদান করা হবে। (তাফসিরে ইবনে কাসির)

সুতরাং আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে আরশের ধনভান্ডার থেকে দান করা ফজিলতপূর্ণ আয়াতদ্বয় সকাল-সন্ধ্যায় পাঠ করার তাওফিক দান করুন। দুনিয়া ও পরকালের সব কল্যাণ দান করুন। আমিন।

এমএমএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।