তালাকপ্রাপ্ত নারীদের ইদ্দত ও ফিরে আসার বিধান


প্রকাশিত: ০৩:৫৭ এএম, ০৩ মে ২০১৭

কোনো নারীকে যদি কোনো পুরুষ তালাক প্রদান করে তবে ওই নারীর করণীয় কি হবে; আল্লাহ তাআলা তা কুরআনুল কারিমে বিষদ বর্ণনা করেছেন। তালাকপ্রাপ্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ওই নারীর অন্য কোথাও বিয়ে হওয়া বা তালাক প্রদানকারী স্বামীর নিকট পুনরায় ফিরে আসা বিষয়গুলো প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-

Quran
আয়াতের অনুবাদ

Quran

আয়াত পরিচিতি ও নাজিলের কারণ
সুরা বাকারার ২২৮  নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা স্বামী-স্ত্রীর বিবাহ বিচ্ছেদের পর করণীয় এবং আবার উভয়ে সংসার করতে চাইলে করণীয় নির্ধারণের আলোচনা করা হয়েছে।

আল্লামা ওসমানি এ আয়াতের তাফসিরে লিখেছেন, ‘মূলতঃ স্ত্রীর কর্তব্য হলো তার প্রকৃত অবস্থা প্রকাশ করা। যদি সে তালাকপ্রাপ্ত হওয়ার সময় অন্তঃসত্ত্বা হয়ে থাকে তবে তা প্রকাশ করা এবং সন্তান প্রসব হওয়া পর্যন্ত অন্য কোথাও বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া থেকে বিরত থাকা।

আর যদি তার গর্ভে সন্তান না থাকে তবে তালাক পরবর্তী তিন (হায়েজ) মাস ঋতুস্রাব হওয়া পর্যন্ত ইদ্দত পালন অর্থাৎ অপেক্ষা করা।

তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, ‘এ আয়াত শুধু ওই সব স্বামী ও স্ত্রীদের জন্য প্রযোজ্য; যারা বিবাহের পর স্বামী-স্ত্রী উভয়ে সহবাসে মিলিত হয়েছে; যাদের ঋতুস্রাব (মাসিক) হয় এবং যারা কারও ক্রীতদাসী নয়।

কারণ, ‘যদি বিবাহের পর স্বামী-স্ত্রী সহবাসে মিলনের আগেই তালাক সম্পাদন হয়; এমন স্ত্রীলোকদের জন্য ইদ্দত (তিন মাস অপেক্ষা) পালন করতে হয় না।

তাছাড়া যদি কোনো স্ত্রী লোকের বার্ধক্যের কারণে অথবা নিতান্ত অল্প বয়স্কা নারী হওয়ার কারণে যদি তাদের ঋতুস্রাব (হায়েজ) না হয় তবে তাদের ইদ্দত (অপেক্ষার সময়) হলো তিন মাস।

আর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীলোক; তালাকের আগেই যাদের গর্ভে সন্তান চলে এসেছে, তাদের ইদ্দত (অপেক্ষার সময়) হলো সন্তান প্রসব হওয়া পর্যন্ত।

আয়াতে আরও বলা হয়েছে-
কোনো স্ত্রীকে তালাক প্রদানের পর স্বামী যদি তাকে পুনরয় স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করতে চায় এবং দাম্পত্য জীবনকে সুন্দর ও উত্তমরূপে যাপন করতে অঙ্গীকার করে তবে পুনরায় ওই স্ত্রীকে গ্রহণের স্বামীর অগ্রাধিকার রয়েছে। পক্ষান্তরে যদি কোনো স্বামী নির্যাতনের লক্ষ্যে পুনরায় স্ত্রীকে গ্রহণ করে তবে তা হবে জুলুম।

অতঃপর আয়াতাংশে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘স্ত্রীদের ওপর স্বামীর যেমন হক আছে; ঠিক তেমিন স্বামীর ওপরও স্ত্রীর হক রয়েছে।’

পরস্পরের প্রতি পরস্পরের যে দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে তা সঠিকভাবে যদি পালন করা হয়; তবে দাম্পত্য জীবন হবে সুখ ও শান্তিময়। পাশাপাশি আল্লাহ তাআলা সংসার পরিচালনায় স্বামীকে যে উচ্চ মর্যাদা প্রদান করেছেন, তাকে আল্লাহ তাআলার অনুগ্রহ হিসেবে গ্রহণ করতে হবে।

আর স্বামীর দায়িত্ব হবে স্ত্রীর প্রতি যথাযথ দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট হওয়া। প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে উত্তম সে ব্যক্তি যে তার পরিবারবর্গের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করে আর আমি তোমাদের চেয়ে অধিকতর ভাল ব্যবহার করি আমার পরিবারবর্গের সঙ্গে।

পড়ুন- সুরা বাকারার ২২৬ ও ২২৭ নং আয়াত-

পরিষেশে...
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কুরআনে ঘোষিত বিধান অনুযায়ী সুখ ও শান্তিময় দাম্পত্য জীবন-যাপনে যথাযথ দায়িত্ব পালন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।