স্ত্রীদের সম্পর্কে স্বামীদের প্রতি কুরআনের নির্দেশ
কুরআনুল কারিম মানুষের একমাত্র মনোনীত পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা। মানুষের জীবনের এমন কোনো দিক নেই, যে বিষয়ে আল্লাহ তাআলা সুস্পষ্ট কোনো বিধান জারি করেননি। এমনকি আল্লাহ তাআলা মানুষের দাম্পত্য জীবনের একান্ত মুহূর্তগুলো কিভাবে কাটাবেন, সে বিষয় সম্পর্কেও সবিস্তার আলোচনা করেছেন। বাদ যায়নি স্ত্রীদের সঙ্গে একান্ত মিলনে স্বামীদের করণীয়। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা বলেন-
আয়াতের অনুবাদ
আয়াত পরিচিতি ও নাজিলের কারণ
সুরা বাকারার ২২৩ নং আয়াতে স্বামী-স্ত্রীর একান্ত মুহূর্তগুলো সম্পর্কে সুস্পষ্ট বিধান জারি করেছেন। তাফসিরে জালালাইনে এ আয়াতের ব্যাখ্যায় উল্লেখ করা হয়-
‘স্ত্রীগণ তোমাদের শষ্যক্ষেত্র অর্থাৎ সন্তান উৎপাদনের ক্ষেত্র। অতএব তোমরা তোমাদের শষ্যক্ষেত্রে অর্থাৎ তার নির্ধারিত স্থান যোনি-প্রদেশে যেভাবে ইচ্ছা দাঁড়িয়ে, বসে, শুয়ে, সামনে পিছনে সব অবস্থায় গমন করতে পার।
ইয়াহুদিরা বলতো, কেউ যদি যোনিপ্রদেশে পিছন দিক থেকে সঙ্গম করে তবে সন্তান ট্যারা হয়। ঐ ধারণা প্রত্যাখ্যানে এ আয়াত নাজিল হয়।
আগে তোমরা তোমাদের জন্য কিছু সৎ আমল যেমন- রমনের পূর্বে বিসমিল্লাহ বলে নিও এবং আল্লাহকে তাঁর আদেশ-নিষেধের বেলায় ভয় করিও।
আর জেনে রাখ! তোমরা পুনরুত্থানের মাধ্যমে তাঁর সম্মুখীন হতে যাচ্ছ। অনন্তর তিনি তোমাদের কাজের প্রতিফল প্রদান করবেন এবং যারা আল্লাহ তাআলাকে ভয় করে সে সব বিশ্বাসীদেরকে জান্নাতের সুসংবাদ দাও।’
সব তাফসিরকারক এ বিষয়ে একমত যে, ‘স্ত্রী সহবাসের ব্যাপারে কোনো অবস্থাতেই সামনের পথ ছাড়া অন্য কোনো পথ ব্যবহার করা যাবে না। অর্থাৎ যে পথে সন্তান ভূমিষ্ট হয়।
আবার স্ত্রীদের ঋতুস্রাবকালীন সময়ে তাদের সঙ্গে সহবাস করা নিষেধ। ইদ্দতকালীন সময় ছাড়া সব সময়ই তারা সন্তান ভূমিষ্ট হওয়ার পথ দিয়ে সহবাস করবে; অন্য পথে নয়। চাই তা সামনে থেকে হোক কিংবা পিছনে থেকে হোক। চাই তা দাঁড়িয়ে হোক বা বসে হোক বা শুয়ে হোক। তাতে কোনো বিধি নিষেধ নেই।
আর পেছনের দিক থেকে স্ত্রী সহবাস করলে তাদের মিলনে যে সন্তান হবে, সে হবে ট্যারা; ইয়াহুদিদের এ বক্তব্যটি একান্তই তাদের ভ্রান্ত ধারণা মাত্র।
পড়ুন- সুরা বাকারার ২২২ নং আয়াত
পরিষেশে...
স্ত্রীলোকদের সঙ্গে একান্ত মিলন তথা সহবাসের সময় সন্তান ভূমিষ্ট হওয়ার স্থানই ব্যবহার করতে হবে। অন্য কোনো পথেই স্ত্রী সহবাস অবৈধ ও হারাম। আর সহবাসের পূর্বে আল্লাহ সাহায্য লাভ এবং নেক আমলের নিয়তে বিসমিল্লাহ পড়ে নেয়াও উত্তম আমল।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কুরআনে ঘোষিত বিধি-বিধানগুলো মেনে চলার তাওফিক দান করুন। দাম্পত্য জীবনের সব বিষয়ে তাঁকে ভয় করার পাশাপাশি পরকালের স্থায়ী জীবনের সফলতা দান করুন। আমিন।
এমএমএস/এমএস