ভাষা শহীদদের প্রতি মুসলিম উম্মাহর করণীয়


প্রকাশিত: ০৭:২৩ এএম, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

৮ ফাল্গুন ১৩৫৯ বাংলা, ২১ ফেব্রুয়ারি ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দ বাংলা ভাষাভাষী মানুষের জন্য ঐতিহাসিক স্মরণীয় দিন। বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী যারা সাবলীলভাবে বাংলা ভাষায় কথা বলে, তাদের কাছে ভাষা শহীদদের মর্যাদা যেমন অনেক গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করাও সমান গুরুত্বের দাবিদার।

বাংলা ভাষাকে মাতৃভাষা হিসেবে পাওয়ার দাবিতে একদল অকুতোভয় বীর সন্তান নিজেদের জীবন বিলিয়ে দিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন। আমাদের জন্য প্রতিষ্ঠা করেছেন ভাষার অধিকার। তাদের স্মরণে বাংলা ভাষাভাষী মুসলিম উম্মাহর অনেক করণীয় রয়েছে।

৬৫ বছর আগে সালাম জব্বার রফিক বরকতসহ নাম না জানা অসংখ্য বীর সেনানি সেদিন নিজেদের জীবন বিসর্জন দিয়েছেন মাতৃভাষার জন্য। তাদের জন্য দোয়া করা সব বাংলা ভাষাভাষী মুসলমানের একান্ত দায়িত্ব ও কর্তব্য।

কারণ মাতৃভাষা ব্যবহার করার অধিকার সৃষ্টিগতভাবে মানুষের জন্মগত অধিকার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। আল্লাহ তাআলা কুরআনে ইরশাদ করেন, ‘দয়াময় আল্লাহ। তিনিই শিক্ষা দিয়াছেন কুরআন। তিনিই সৃষ্টি করেছেন মানুষ। তিনিই তাহাকে ভাব (ভাষা) প্রকাশ করার শিক্ষা দিয়েছেন। (সুরা আর-রহমান : আয়াত ১-৪)

আলোচ্য আয়াতে মানুষের সৃষ্টির সঙ্গে ভাষার ব্যবহারের সুস্পষ্ট ইঙ্গিত রয়েছে। তাই মাতৃভাষা মানুষের একটি সৃষ্টিগত অধিকারও বটে। সুতরাং মাতৃভাষা রক্ষার আন্দোলনে যারা নিজেদের জীবন বিসর্জন দিয়েছেন, আল্লাহ তাআলা তাদেরকে শহীদি মর্যাদা দান করুন।

বাংলাদেশের মাতৃভাষা বাংলা। আবার বাংলাদেশ একটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ। আমরা যারা মাতৃভাষা বাংলায় কথা বলি। তাদের উচিত ভাষার জন্য জীবন উৎসর্গকারী প্রত্যেকের জন্য দোয়া ও মাগফিরাত কামনা করা।

মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষায় যারা প্রাণ বিসর্জন দিয়েছে, তাঁরা যদি ইসলামি শহাদাতের শর্তগুলো পূরণ করে থাকে, তবে  কুরআন-হাদিসের আলোকে তারা জান্নাতি। তাদের নাজাতের ব্যাপারে আল্লাহই সর্বজ্ঞাত।

আর ভাষার জন্য নিহত ব্যক্তিদের মাঝে যদি ইসলামি শাহাদাতের শর্তাবলী অনুপস্থিত থেকেও থাকে, তবুও তারা যেহেতু আমাদের ভাষার অধিকার আদায়ের সংগ্রামে নিজেদের তাজা প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন সেহেতু একজন মুসলমান হিসেবে তাদের জন্য আমাদের কর্তব্য হলো- আল্লাহ তাআলার কাছে তাদের জন্য মাগফিরাত কামনা করা, ক্ষমা ভিক্ষা চাওয়া।

হাদিসের বর্ণনা মতে ভাষা শহীদদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা সদকায়ে জারিয়ার মতো কাজ। হাদিসে এসেছে, ‘যদি কেউ কোনো সদকায়ে জারিয়ার মত সৎকর্ম সম্পাদন করে, তাহলে যত প্রাণী তা থেকে উপকৃত হবে, সে ঐ সব মানুষের নেকির একটি অংশ পেয়ে যাবে। (মুসলিম)

হাদিসের বর্ণনা মতে, আজ যারা বাংলা ভাষায় স্বাধীনভাবে কুরআন-হাদিসের খেদমত করছেন, ওয়াজ-মাহফিল ও ইসলামি আলোচনাসহ যত ভালো কাজ করছেন এর একটি অংশ ভাষা শহীদদের নিকট অবশ্যই পৌছে যাচ্ছে।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ভাষা শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করার তাওফিক দান করুন। ভাষা শহীদদেরকে আল্লাহ তাআলা ক্ষমা করে দিন। আমিন।

এমএমএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।