আল্লাহকে ভয় করার উপদেশে অবাধ্য ব্যক্তিরা পাপাচারী
অহংকার ও আত্মাভিমান মানুষকে অধিকতর পাপাচারে লিপ্ত করে তোলে। পাপাচারের উৎপত্তি হলো এ রকম যে, কেউ উপদেশ দিল- আল্লাহকে ভয় কর; কিন্তু ওই ব্যক্তি আল্লাহকে ভয় কারার পরিবর্তে তাঁর অবাধ্যতায় লিপ্ত হলো। আল্লাহকে ভয় কারার নসিহত বা উপদেশ পাওয়ার পরও যারা তা থেকে বিরত থাকে তারাই অবাধ্য এবং আত্মাভিমানী বা অহংকারী।
এ অবাধ্যতা, আত্মাভিমান ও অহংকার মানুষকে পাপের দিকে ধাবিত করে। এ সব লোকের পরিণতি হলো নিশ্চিত জাহান্নাম। তাঁদের অহংবোধ, পাপাচার ও শেষ পরিণতি সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা কুরআনে সুস্পষ্টভাবে ইরশাদ করেন-
আয়াত পরিচিতি ও নাজিলের কারণ
সুরা বাকারার ২০৬ নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা সুস্পষ্ট ভাষায় ঘোষণা করেন, যারা আমাকে ভয় করার উপদেশ পাওয়ার পরও আমাকে ভয় না করে নাফরমানি করেছে; ইসলাম ও মুসলমানের শত্রুতায় নিজেদের লিপ্ত রেখেছে তারা পাপাচারী। তাদের শেষ ফল জাহান্নাম। আবাস হিসেবে তা অত্যন্ত নিকৃষ্ট।
এ আয়াত থেকে প্রমাণিত যে, মুনাফিকরা শুধু যে আল্লাহর নাফরমানিতে এবং ইসলাম ও মুসলমানদের শত্রুতায় লিপ্ত থাকতো শুধু তাই নয়, বরং তাদেরকে কেউ আল্লাহকে ভয়ের ব্যাপারে নসিহত করলে তারা আরো বেশি অহংকার এবং ঔদ্ধত্য প্রকাশ করতো। তারা আরো বেশি পাপাচারে লিপ্ত হতো। কারো নসিহত কবুল করার মতো ভাগ্য তাদের হতো না।
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন, অত্যন্ত বড় অপরাধ হলো এই যে, যদি কেউ কোনো মানুষকে বলে ‘তুমি আল্লাহকে ভয় কর’; তখন সে আল্লাহকে ভয় করার প্রতি উত্তরে বলে ‘তুমি নিজের চিন্তা কর, অপরকে উপদেশ দিও না। মূলত এটিই হলো অহংকারীদের পন্থা।
অথচ উপদেশের অবস্থা এমন হওয়া উচিত ছিল। যা হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহুর বেলা ঘটেছিল। একবার এক ব্যক্তি হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহুকে লক্ষ্য করে বলেছিলেন, আল্লাহকে ভয় করুন, তিনি সঙ্গে সঙ্গে আল্লাহর ভয়ে তাঁর সমীপে সেজদারত হন। অতঃপর বললেন, যদি আমাদেরকে কেউ নসিহত না করে তবে আমাদের ও তাদের মধ্যে কোনো কল্যাণই থাকে না।
এক ব্যক্তি হজরত মালেক ইবনে মাকউলকে বলেছিলেন, ‘আল্লাহকে ভয় করুন। বাক্যটি শুনে তিনি মাটিতে পড়ে গেলেন এবং আল্লাহ তাআলার ভয়ে ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে সেজদারত হলেন।
পড়ুন- সুরা বাকারার ২০৫ নং আয়াত
পরিষেশে...
আয়াত দ্বারা প্রমাণিত হচ্ছে যে, কেউ আল্লাহকে ভয় করার ব্যাপারে নসিহত করে, তবে তা বিনয়ের সঙ্গে গ্রহণ করাই মুসলমানের কর্তব্য। যারা আল্লাহকে ভয় করার নসিহতে ভীত-সন্ত্রস্ত হয় এবং তাঁর মহান দরবারে মাথা নত করে তারাই সফলকাম এবং মর্দে মুমিনের কাজ।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কুরআন-হাদিসের নসিহত অনুযায়ী তাঁকে ভয় করাসহ তাঁর আনুগত্য করার তাওফিক দান করুন। তাঁর অবাধ্য হয়ে অহংকারী হিসেবে চিহ্নিত হওয়া থেকে হিফাজত করুন। পরকালের চিরস্থায়ী জীবনে জাহান্নামের আজাব ও অবস্থান থেকে রক্ষা করুন। আমিন।
এমএমএস/এমএস