যেভাবে মানুষের পুনরুত্থান হবে


প্রকাশিত: ০৭:২৪ এএম, ১৮ ডিসেম্বর ২০১৬

আল্লাহ তাআলা মানুষের জন্য তিনটি জগৎকে নির্ধারিত করেছেন। দুনিয়ার জীবন, কবরের জীবন অতঃপর হাশরের ময়দানে প্রতিদান দিবসের পর পরকালের চিরস্থায়ী জীবন। পরকালের চিরস্থায়ী জীবনের পূর্বে কবর থেকে মানুষের পুনরুত্থান ঘটানো হবে। অতঃপর হাশরের ময়দানে হিসাব-নিকাশের পর চূড়ান্ত ফয়সালা অনুযায়ী চিরস্থায়ী আবাসস্থল নির্ধারণ হবে। সংক্ষেপে পুনরুত্থানের বর্ণনা তুলে ধরা হলো-

পুনরুত্থান
হজরত ইসরাফিল আলাইহিস সালাম যখন দ্বিতীয়বার শিঙ্গায় ফুৎকার দিবেন তখনই সব মৃতব্যক্তি জীবিত হয়ে হবে। আর তাই পুনরুত্থান দিবস। তখন মানুষ আল্লাহ তাআলার দরবারে খালি পায়ে, বস্ত্রহীন শরীরে ও খাৎনা ছাড়াই দাঁড়াবে। পুনরুত্থান সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন-
‘শিঙ্গায় ফুঁক দেয়া হবে, তখনই তারা কবর থেকে তাদের রবের দিকে ছুটে চলবে। তারা বলবে, হায় আমাদের দুর্ভোগ। কে আমাদেরকে নিদ্রাস্থল থেকে উত্থিত করল? রহমান আল্লাহ তো এরই ওয়াদা-প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন এবং রাসুলগণ সত্য বলেছিলেন।’ (সুরা ইয়াসিন : আয়াত ৫১-৫২)
অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা উল্লেখ করেন, ‘এরপর তোমরা মৃত্যুবরণ করবে। অতঃপর কিয়ামতের দিন তোমরা পুনরুত্থিত হবে।’ (সুরা মুমিনুন : আয়াত ১৫-১৬)

পুনরুত্থানের বর্ণনা
আল্লাহ তাআলা আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষণ করবেন ফলে মানুষ তখন উদ্ভিদের ন্যায় কবর থেকে বের হতে থাকবে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তিনিই বৃষ্টির পূর্বে সুসংবাদবাহী বায়ু (বাতাস) পাঠিয়ে দেন। এমনকি যখন বায়ুরাশি পানিপূর্ণ মেঘমালা বয়ে আনে, তখন আমি এ মেঘমালাকে একটি মৃত শহরের দিকে হাঁকিয়ে দেই। অতঃপর এ মেঘ থেকে বৃষ্টিধারা বর্ষণ করি। অতঃপর পানি দ্বারা সব ধরনের ফল উৎপন্ন করি। এমনিভাবে মৃতদেরকে বের করব। যাতে তোমরা স্মরণ কর। (সুরা আ’রাফ : আয়াত ৫৭)

হজরত ইসরাফিল আলাইহিস সালাম আল্লাহর হুকুমে প্রথম ফুৎকার দিলে কিয়ামত সংঘটিত হবে। অতঃপর তিনি আল্লাহর নির্দেশে দ্বিতীয়বার ফুৎকার দিলে সঙ্গে সঙ্গেই পুনরুত্থান সংঘটিত হবে। হাদিসে এসেছে-

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘দুই ফুৎকারের মাঝের সময়ের পরিমাণ হলো চল্লিশ। তাঁরা (সাহাবায়েকেরাম) বললেন, হে আবু হুরায়রা! ইহা কি চল্লিশ দিন? তিনি বলেন, আমি অস্বীকার করলাম। তাঁরা আবার বললেন, চল্লিশ মাস? তিনি বললেন, আমি অস্বীকার করলাম। তাঁরা বললেন, চল্লিশ বছর? তিনি বললেন, আমি অস্বীকার করলাম। অতঃপর আল্লাহ আকাশ থেকে বৃষ্টি বষর্ণ করবেন তখন মানষু উদ্ভিদের ন্যায় বের হতে থাকবে। মানুষের পশ্চাদাংশের পুচ্ছের একটি হাড় ছাড়া সমস্ত শরীর ক্ষয় হয়ে যাবে। আর তা থেকেই আবার কিয়ামতের দিন মানুষকে সৃষ্টি করা হবে। (বুখারি ও মুসলিম)

পরিশেষে...
কিয়ামত ও পুনরুত্থানের বিষয়ে কুরআন এবং হাদিসের এ আলোচনা থেকে আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে হিদায়াত লাভের তাওফিক দান করুন।

পুনরুত্থান দিবসে হাশরের ময়দানে তাঁর আরশের ছায়ায় অবস্থান করার মর্যাদা দান করুন। কুরআন ও সুন্নাহ মোতাবেক জীবন যাপন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।