প্রার্থনা করতে হবে শুধু আল্লাহর কাছে


প্রকাশিত: ০৯:২৮ এএম, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৬

আল্লাহ তাআলা সমগ্র বিশ্বের একচ্ছত্র অধিপতি। ভালো-মন্দ, বাঁচা-মরা, সন্তান দান, হালাল রিজিক দান, চাকরি ও ব্যবসা-বাণিজ্যের সুব্যবস্থা ইত্যাদি বিষয়ের একচ্ছত্র মালিক তিনি। এজন্য দুনিয়া ও পরকালের সব চাওয়া-পাওয়ার আশা করতে হবে শুধু আল্লাহ তাআলার কাছে।

আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো কাছে কোনো কিছু প্রার্থনা করা যাবে না। কুরআনে অন্যের কাছে কোনো কিছু চাওয়াকে কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর নির্দেশ হয়েছে আল্লাহ ব্যতীত এমন কাউকে ডাকা যাবে না, যে তোমার ভালো কারতে পারবে না আবার মন্দও করতে পারবে না। বস্তুত তুমিও যদি এমন কাজ কর, তাহলে তখন তুমিও জালেমদের (অত্যাচারীদের) অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে। (সুরা ইউনুছ : আয়াত ১০৬)

আল্লাহ তাআলা ব্যতীত দুনিয়াতে কোনো মানুষকে কোনো কিছু দেয়ার ক্ষমতা কারো নেই। তিনি তাঁর ক্ষমতা বর্ণনা করতে গিয়ে অন্য আয়াতে বলেন, ‘তিনি রাতকে দিনে প্রবিষ্ট করেন এবং দিনকে রাতে রূপান্তরিত করেন। তিনি সূর্য ও চন্দ্রকে কাজে নিয়োজিত করেছেন। প্রত্যেকটি আবর্তন করে এক নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত। তিনিই আল্লাহ; তোমাদের পালনকর্তা, (এ বিশাল) সাম্রাজ্য তাঁরই। তাঁর পরিবর্তে তোমরা যাদের ডাক, তারা তুচ্ছ খেজুর আঁটিরও অধিকারী নয়।’ (সুরা ফাতির : আয়াত ১৩)

মানুষের দুনিয়া ও পরকালের চাহিদা অনুযায়ী সবকিছু দেয়ার একচ্ছত্র মালিকই হচ্ছেন মহান আল্লাহ। তাই আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্যের কাছে চাওয়া মূলত তারই নির্ধারিত অধিকারে অন্যকে অহেতুক অংশীদার বানানোর সমান, যা মারাত্মক অপরাধ।

সুতরাং আল্লাহ ব্যতীত অন্যের কাছে কিছু চাওয়া, এমনকি কোনো নবি-রাসুলের কাছেও অহেতুক কোনো কিছু চাওয়া শিরকের অন্তর্ভুক্ত।

হাদিসে এসেছে, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সময়ে একজন মুনাফিক ছিল। সে মুমিনদেরকে কষ্ট দিত। কেউ কেউ বললেন, চলুন আমরা রাসুলুল্লাহর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এই মুনাফিক হতে মুক্তি পাওয়ার জন্য প্রার্থনা করি।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, এই ধরণের  মুক্তি আমার থেকে চাওয়া উচিত নয়, বরং তা আল্লাহর কাছেই চাইতে হবে।’ (আত-তাবারানি)

ভাবনার বিষয়
আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশে সাধারণত মৃতব্যক্তি, অলী, পীর, মুরুব্বি, খাজাবাবা প্রমুখ ব্যক্তিদের কাছে দুনিয়া ও পরকালের সব কল্যাণ ও সফলতা চাওয়ার প্রবণতা ব্যাপকভাবে লক্ষ্য করা যায়। অথচ তা স্পষ্ট শিরকের অন্তর্ভূক্ত।

অথচ কুরআনুল কারিমে চাওয়ার পদ্ধতি বর্ণিত রয়েছে, ‘এবং তোমাদের রব (প্রতিপালক) বলেছেন, আমার কাছে চাও (প্রার্থনা কর); আমি তা কবুল করব বা তোমাদের দেব। (সুরা মুমিন : আয়াত ৬০)

পরিশেষে...
কুরআন সুন্নাহর ফয়সালা হলো- দুনিয়াতে ছোট থেকে বড় পর্যন্ত যত চাহিদাই রয়েছে, সবকিছুই চাইতে হবে শুধুমাত্র আল্লাহ তাআলার কাছে। কোনো সৃষ্টির কাছে মানুষের কোনো কিছু চাওয়ার অর্থই হলো মহান আল্লাহ তাআলার অধিকার বা ক্ষমতাকে খর্ব করা।

কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে সঠিক পথ ও মতের ওপর থেকে শিরকমুক্ত জীবন গঠন করে ফিতনা, শিরক ও কুফরমুক্ত সমাজ বিনির্মাণ করে বিশ্বনবির আদর্শ বাস্তবায়ন করাই ঈমানের দাবি।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে আল্লাহ ব্যতীত অন্যের কাছে কোনো চাওয়া থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুন। শুধুমাত্র আল্লাহর ওপর ভরসা করার এবং তাঁর কাছে সাহায্য চাওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।