মদিনায় বিশ্বনবির আগমনের আগে জুমআর নামাজ


প্রকাশিত: ০৮:০৫ এএম, ০১ ডিসেম্বর ২০১৬

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মদিনায় যাওয়ার পর সর্বপ্রথম মসজিদে কুবায় জুমআ’র নামাজ আদায় করেন। কিন্তু তিনি মদিনায় যাওয়ার আগেই জুমআ’র নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। যা ঐতিহাসিক ইবনে ইসহাক ঘটনাটি বর্ণনা করেনে। বণনাটি তুলে ধরা হলো-

ঐতিহাসিক ইবনে ইসহাক আব্দুর রাহমান বিন কাব বিন মালেক থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, ‘আমার পিতা অন্ধ হয়ে গেলে আমিই তাঁকে নিয়ে নামাজে যেতাম। আমি যখন তাঁকে নিয়ে জুমআ’র নামাজে যেতাম তখন তিনি জুমআ’র আজান শুনে আবু উমামাহ আসআদ বিন যুরারার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করতেন।

আমি যখন তাঁর কাছ থেকে আসআদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনার কথা শুনতাম তখন মনে মনে স্থির করতাম যে, অবশ্যই এ ব্যাপারে আমি তাকে জিজ্ঞেস করবো, কেন তিনি তার জন্য দোয়া করেন।

সুতরাং এক জুমআর দিন তিনি আসআদের জন্য দোয়া করার সময় তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, হে আমার পিতা! প্রত্যেক জুমআ’র আজান শুনেই আপনি আসআদ বিন যুরারার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন কেন?

তিনি বললেন, হে বৎস্য! শুন, আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মদিনায় আগমণের আগে আসআদ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) আমাদেরকে সর্বপ্রথম বনি বায়াদার অর্ন্তগত ‘হাযমুন নাবিত’নামক স্থানে জুমআ’র নামাজে একত্রিত করেছিলেন। আর এই স্থানটিকে ‘নাকিউল খাযমাত’ বলা হয়।

আব্দুর রাহমান বিন কাব বলেন, আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, আপনারা সেদিন সংখ্যায় কতজন ছিলেন? তিনি বললেন, চল্লিশজন পুরুষ।

অন্য বর্ণনায় এসেছে- হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস ও আবু মাসউদ আনসারি রাদিয়াল্লাহু আনহুমের বর্ণনা থেকে জানা যায়, হিজরতের কিছুকাল পূর্বে মক্কা নগরীতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর জুমআর নামাজ ফরজ হওয়ার বিধান নাজিল হয়। কিন্তু সে সময় তিনি এ নির্দেশের ওপর আমল করতে পারতেন না। কারণ মক্কায় সামষ্টিক কোনো ইবাদাত করা সম্ভব ছিল না। তাই যেসব সাহাবি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আগে মদিনায় হিজরত করেছিলেন, তিনি তাদের নির্দেশ পাঠিয়েছিলেন যে, তারা যেন সেখানে জুমআ কায়েম করে। অতএব প্রথম দিকে হিজরতকারীদের নেতা হজরত মুসআব ইবনে উমায়ের ১২ জন লোক নিয়ে মদিনায় প্রথম জুমআর নামাজ আদায় করেন। (তাবারানি, দারু কুতনি)

অতঃপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মদিনায় হিজরত করে আসার পর কুবায় সোম, মঙ্গল, বুধ এবং বৃহস্পতিবার এই চার দিন অবস্থান করেন। কুবার অধিবাসীদের জন্য তাদের মসজিদ নির্মাণ করান।

জুমআর দিন তিনি কুবা থেকে বের হলেন। বনি সালেম বিন আওফ গোত্রের নিকট আসতেই জুমআ’র নামাজের সময় হয়ে গেল। সেখানের উপত্যকায় অবস্থিত মসজিদেই তিনি মদিনায় প্রথম জুমআর নামাজ আদায় করেন। এটি ছিল মসজিদে নবরি নির্মাণ করার আগের ঘটনা।

যারা দুনিয়ায় মসজিদ নির্মাণ করে জুমআ এবং পাঞ্জেগানা নামাজের ব্যবস্থা করেন। তাদের জন্য দোয়া করা প্রত্যেক মুসলমানের কর্তব্য। যেমনটি করেছিলেন আবদুর রহমান বিন কা’ব বিন মালেক রাদিয়াল্লাহু আনহুর বাবা। তিনি প্রথম জুমআ আদায়ের একত্রকারী হজরত আসআদ বিন যুরারার জন্য দোয়া করেছিলেন।

এমএমএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।