কুরআনে ঈমানের পরিচয় প্রদান


প্রকাশিত: ০৭:৫৭ এএম, ০২ নভেম্বর ২০১৬

আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমে ঈমানের পরিচয় প্রদান করেছেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে যখন কেউ ঈমান সম্পর্কে কোনো  প্রশ্ন করতেন, তখন তিনি কুরআনুল কারিমের সুরা বাকারার ১৭৭নং আয়াত তুলে ধরতেন। তাফসিরে ইবনে মিরদুওয়াই’তে এ প্রসঙ্গে একটি হাদিস উল্লেখ করা হয়েছে। হাদিসটি তুলে ধরা হলো-

হজরত আবু যার রাদিয়াল্লাহু আনহুকে এক ব্যক্তি প্রশ্ন করেন যে, ঈমান কি? তখন তিনি সুরা বাকারার ১৭৭নং আয়াতটি তিলাওয়াত করেন। আর তা হলো-

Hadith

লোকটি (হজরত আবু যার রাদিয়াল্লাহু আনহুকে) বললো, জনাব! আমি আপনাকে মঙ্গল তথা পূণ্য সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করিনি বরং আমার প্রশ্ন ঈমান সম্পর্কে।

হজরত আবু যার রাদিয়াল্লাহু আনহু তখন বলেন, ‘এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে এ প্রশ্নই করেছিল। (ঐ ব্যক্তির উত্তরে) তিনি এ আয়াতটিই পাঠ করেছিলেন (এবং) ঐ লোকটিও তখন তোমার মতো অসন্তুষ্ট হয়েছিল।

অতপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছিলেন, ‘মু’মিন যখন সৎ কাজ করে তখন তার প্রাণ খুশি হয় এবং সে পূণ্যের আশা করে আর যখন পাপ করে তখন তার অন্তর চিন্তিত হয় এবং সে শাস্তিকে ভয় করতে থাকে।

এ আয়াতে ঈমানদার ব্যক্তি যে জিনিসগুলোর প্রতি পরিপূর্ণ আস্থা এবং বিশ্বাস করতে হবে তা ওঠে এসেছে। আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন-

আল্লাহর প্রতি ঈমান
আল্লাহ তাআলা পবিত্র সত্তা এবং তাঁর যাবতীয় গুণাবলীর প্রতি আন্তরিক বিশ্বাস রাখা। আল্লাহ তাআলাকে সৃজনশীল বা পরিবর্তনশীলতার উর্ধ্বে তুলনাহীন মনে করা এবং তাঁর বিকল্প বা বিপরীত কোনো সত্তা নেই বলে মুখের স্বীকৃতি, অন্তরের বিশ্বাস এবং তাঁর নির্দেশিত কর্মের বাস্তবায়ন করা।

শেষ দিনের প্রতি বিশ্বাস
কিয়ামতের দিনের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা। এ দিনটি হলো সর্বশেষ দিন। ব্যাপকভাবে কিয়ামতের দিন বলতে বুঝায়- কবরে জীবিত করার সময় থেকে নিয়ে অনন্ত কাল পর্যন্ত। এ দিনেই হিসাব-নিকাশসহ, শাফাআত-মাগফিরাত, সাওয়াব-গোনাহের বিচারে জান্নাত-জাহান্নাম লাভ ইত্যাদি এ দিনের অন্তর্ভূক্ত।

ফেরেশতাদের প্রতি বিশ্বাস
এ কথা বিশ্বাস করা যে, তারা নূর দ্বারা সৃষ্টি আল্লাহর একান্ত অনুগত। তারা বিয়ে-শাদী, পানাহার থেকে মুক্ত। তাঁদের কাজ হলো সর্বদা শুধুমাত্র আল্লাহ তাআলা হুকুম পালন করা। আল্লাহ তাআলা তাঁদেরকে বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত করে রেখেছেন। তাদেরও মৃত্যু হবে এবং আবার জীবিত করা হবে।

কিতাবের প্রতি বিশ্বাস
কিতাব হলো আল্লাহ তাআলা প্রেরিত সকল আসমানি কিতাব। কুরআনসহ পূর্ববর্তী সকল কিতাবকে আল্লাহর কিতাব বলে স্বীকার করা।

নবিগণের প্রতি বিশ্বাস
ঈমানের স্বাদ লাভ করবে সেই ব্যক্তি যে হজরত আদম আলাইহিস সালাম হতে বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পর্যন্ত সকল নবি-রাসুলগণের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে।

পরিশেষে...
ঈমান কি? এ প্রসঙ্গে স্বয়ং হজরত আবু যার রাদিয়াল্লাহু আনহু বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে প্রশ্ন করলে তিনি উল্লেখিত আয়াতটি পাঠ করেন। তিনি বিশ্বনবিকে তিনবার এ প্রশ্নটি করেন বিশ্বনবি তিনবারই এ আয়াতটি পড়ে শুনান।

সুতরাং আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে এ আয়াতটির মর্মার্থ অনুধাবন করে মুখের স্বীকৃতি, অন্তরের বিশ্বাস এবং কর্মের মাধ্যমে তাঁর বিধানের বাস্তবায়নের করে পরিপূর্ণ ঈমানদার হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।