আল্লাহর হুকুম অমান্যকারীরাই বিপদগামী


প্রকাশিত: ০৬:৫৯ এএম, ২০ অক্টোবর ২০১৬

আল্লাহ তাআলা তাঁর বিধানসমূহ বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর নাজিল করেছেন। অনিন্দ্য সুন্দর সমাজ বিনির্মাণে বিশ্বনবির ওপর নাজিলকৃত কুরআনের অনুসরণের বিকল্প নেই। বিশ্বনবি যখন ইয়াহুদিদেরকে কুরআনের দাওয়াত দেয় তখন ইয়াহুদিরা বলতে থাকে, আমাদের বাপ-দাদাদের যে পথ ও মতের পেয়েছি তা ব্যতিত অন্য কোনো বিধান আমরা মানবো না। যার ধারা এখনও অব্যাহত রয়েছে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা বলেন-

Quran

‘আর যখন তাদেরকে (ইয়াহুদি) কেউ বলে, ‘আল্লাহ তাআলা যে হুকুম নাজিল করেছেন তার অনুসরণ কর’। তারা বলে, (কখনো না) আমরা অনুসরণ করি তার, যার ওপর আমাদের পূর্ব পুরুষদেরকে পেয়েছি’। যদিও তাদের পূর্ব পুরুষরা কিছুই বুঝতে না পারে আর তারা সুপথগামীও ছিল না (তবুও)।’ (সুরা বাক্বারা : আয়াত ১৭০)

পূর্ববর্তী আয়াতে আল্লাহ তাআলা মুসলমানদেরকে সতর্ক করে দেন যে, শয়তান শুধু তোমাদের হালাল-হারামের ব্যাপারেই ধোঁকা দেয় না বরং তোমাদের দৈনন্দিন জীবনে সকল কাজ-কর্মেই সে অশ্লীল-বেহায়াপনা কাজের কুমন্ত্রণা দেয়। এমনকি ঐ কথা বলতে উদ্বুদ্ধ করে যে কথা বলতে আল্লাহ তাআলা নিষেধ করেছেন।

এ আয়াতে আল্লাহ তাআলা তাঁর অনুসরণ করার কথা বলা সত্ত্বেও ইয়াহুদিরা তাদের বাপ-দাদা তথা পূর্ব পুরুষদের অনুসরনে অটল অবিচল থাকে। অথচ তাদের পূর্ব পুরুষরা সুপথ প্রাপ্ত ছিল না। তা সত্ত্বেও তারা পূর্ব পূরুষদের গোমরাহীর পথে থাকার ব্যাপারে অটল ও অবিচল।

আয়াত নাজিলের কারণ
হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়অ সাল্লাম যখন ইসলামের ইয়াহুদিদেরকে ইসলামের দাওয়াত দিলেন এবং জান্নাতের জন্য উৎসাহিত ও দোজখের ভয় দেখালেন।

তখন রাফে ইবনে হারিমলা এবং মালেক ইবনে আউফ নামক দুই জন ইয়াহুদি বললো- হে আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমরা আপনার অনুসরণ করব না; বরং যে বিষয়ের ওপর আমাদের পূর্ব-পুরুষকে পেয়েছি আমরা তার ওপরই চলবো।

কারণ তারা আমাদের চেয়ে অনেক জ্ঞানী এবং অধিক উত্তম জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন।

ইয়াহুদিদের এ কথা প্রতি উত্তরে এ আয়াতের প্রথমাংশ অর্থাৎ ‘আল্লাহ তাআলা যা নাজিল করেছেন’ নাজিল হয়। এর দ্বারা কুরআন অথবা তাওরাতকে বুঝানো হতে পারে। কারণ তাওরাতেও হজরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে অনুসরণ করার হুকুম করে থাকে।

মূলত তারা কখনোও তাওরাতেরও অনুসারী ছিল না। যদি তাই হতো তবে তারা তাওরাতের হুকুম মেনে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর ঈমান গ্রহণ করতো। ইসলামের সুশীতল ছায়া তলে আশ্রয় গ্রহণ করতো। কিন্তু তারা ইসলাম থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে তাদের পূর্ব পুরুষদের অনুসরণ করে বিপদগামী হয়েছে।

পরিশেষে....
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামরে দাওয়াত গ্রহণ না করে আল্লাহর বিধান না মেনে পূর্ব পুরুষদের পথে চলাচলকারী ব্যক্তিরা সুপথ প্রাপ্ত নয়। তারা নিজেদের পূর্ব-পুরুষদেরকে তাওরাতে ইচ্ছামতো পরিবর্তন-পরিবর্ধন করতে দেখেছে। তারাও তা অব্যাহত রেখেছে।

বর্তমান সময়ে ইসলাম ধর্মের অনুসারী দাবিদার অনেক মানুষই ইসলামের মূলধারা থেকে দূরে সড়ে গিয়ে আল্লাহর সঙ্গে অংশীদার স্থাপনের মতো বড় বড় গোনাহের সঙ্গে সঙ্গে কুরআন-সুন্নাহর সঙ্গে সাংঘর্ষিক অনেক কাজ করে থাকে। যা আমাদেরকে কুরআনের এ আয়াতের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। কারণ যারা কুরআন সুন্নাহ বিরোধী কাজে জড়িত; ইসলামের দাওয়াত থেকে দূরে সরে থাকে; তারাই ক্ষতিগ্রস্ত এবং সঠিক পথ প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত।

আল্লাহ তআলা মুসলিম উম্মাহকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর নাজিলকৃত তাঁর সকল বিধি-বিধান যথাযথভাবে পালন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/এবিএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।