অবিশ্বাসীদের আফসোসের কারণ


প্রকাশিত: ০৬:৪৩ এএম, ১১ অক্টোবর ২০১৬

কুরআন-সুন্নাহর বিরোধিতা করে অবিশ্বাসী নেতাদের কথা মতো জীবন পরিচালনার শাস্তি হবে ভয়াবহ। কিয়ামতের দিন এ সকল পরিণতি দেখে অবিশ্বাসী নেতাদের অনুসারীরা দুনিয়ায় ফিরে আসার আকাংখা পোষণ করবে। কিন্তু পরকালে সকল অবিশ্বাসীদের অফসোস প্রকাশ এবং দুনিয়ায় ফিরে আসার আকাংখা সফল হবে না।

দুনিয়াতে যারা কুরআন-সুন্নাহ বিরোধী কর্মকাণ্ডের জন্য আল্লাহ তাআলার নিকট তাওবা করে সঠিক পথে ফিরে আসবে তারাই সফলতা লাভ করবে। এ কারণেই আল্লাহ তাআলা পরকালের বিচার ফয়সালার বিষয়গুলো কেমন হবে এবং বিচার দেখে সেখানে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে তা কুরআনুল কারিমে সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন-

Quran

‘আর যে সব লোক দুনিয়ায় তাদের (অবিশ্বাসী নেতাদের) অনুসারী ছিল তারা বলতে থাকবে, হায় আফসোস! যদি আমাদের আর একবার সুযোগ দেয়া হতো, তাহলে আজ তারা যেমন আমাদের সঙ্গে সম্পর্কহীনতা প্রকাশ করছে, তেমনি আমরাও তাদের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ করে দেখিয়ে দিতাম। এভাবেই দুনিয়ায় তারা যে সকল কাজ করেছে, সেগুলো আল্লাহ তাআলা তাদের সামনে এমনভাবে উপস্থিত করবেন, যাতে তারা কেবল দুঃখ ও আক্ষেপই করতে থাকবে কিন্তু জাহান্নামের আগুন থেকে বের হওয়ার কোনো পথই খুঁজে পাবে না।’ (সুরা বাক্বারা : আয়াত ১৬৭)

পূর্ববর্তী আয়াতে আল্লাহ তাআলা কিভাবে কিয়ামতের দিন মানুষের প্রতিটি কর্মের জবাবদিহিতা গ্রহণ করবেন, তা তুলে ধরেছেন। সেখানে সাধারণ মানুষের মধ্যে যারা অবিশ্বাসী নেতাদের কথা মতো জীবন যাপন করেছে; কিয়ামতের দিন সে সকল নেতারা আল্লাহ তাআলার দরবারে তাদের নেতৃত্বের কথা, তাদের কথা মতো তাদের অনুসারীদের জীবন পরিচালনার কথা অস্বীকার করবে; অনুসারীদের কার্যকলাপের জবাবদিহিতার দায়িত্ব গ্রহণ থেকে সরে দাঁড়াবে।

এ আয়াতে সে সকল অনুগামী অনুসারী মানুষেরাই আফসোস করতে থাকবে। যে আফসোসের কোনো মূল্য নেই। কুরআন হাদিসের বাণী গ্রহণ না করে তারা দুনিয়ায় অবিশ্বাসী নেতাদের কথা মতো চলার কারণেই তারা কিয়ামতের দিন আফসোস করে বলবে- হায়! এদের কথামতো উপাসনা-পূজা করে কত বড় জঘন্য ভুল করেছি!

তারা আকাংখা করবে- যদি সুযোগ পেতাম, যদি পৃথিবীতে পুনরায় ফিরে যাওয়ার ব্যবস্থা হতো, তবে এ সকল নেতাদের উপযুক্ত প্রতিশোধ নিতাম। তাদের সঙ্গে সকল সম্পর্ক ছিন্ন করতাম। আজ যেমন তারা আমাদের সঙ্গে সকল সম্পর্ক ছিন্ন করেছে।

এভাবেই আল্লাহ তাআলা কুরআন-সুন্নাহ’র বিরোধীতাকারীদের, তাওহিদ ও রিসালাতের অস্বীকারকারীদের কৃতকর্মের ব্যর্থতা এবং তার ভয়াবহ পরিণামের কথা উল্লেখ করে দুনিয়অর মানুষকে সতর্ক করেছেন।

পরকালের তাদের সকল আক্ষেপ-অনুতাপ সম্পূর্ণ বৃথা প্রমাণিত হবে; কেননা, তারা আর কখনো দোজখ থেকে নিষ্কৃতি পাবে না; দুনিয়ায়ও ফিরে আসতে পারবে না। তারা চরম ভাগ্যাহত; এ সকল অবিশ্বাসী অপরাধীদের চির শাস্তি অবধারিত।

পরিশেষে....
এ আয়াতে পথভ্রষ্টকারী নেতৃবর্গ ও তাদের নির্বোধ অনুসারীদের করুণ পরিণতি উল্লেখ করার মূল কারণ হলো- পূর্ববর্তী নবিদের উম্মতগণ যে সমস্ত ভুলের শিকার হয়ে বিভ্রান্ত হয়েছিল এবং সঠিক পথ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছিল। মুসলমানগণ যেন সে বিষয়ে সতর্ক হয় এবং ভুল-নির্ভুল ও সঠিক-বেঠিক নেতৃত্বের মধ্যে পার্থক্য করতে শিখে। ভুল এবং বেঠিক নেতৃত্বের পেছনে চলা থেকে যেন তারা নিজেদেরকে বিরত রাখতে পারে।

সুতরাং কুরআন-সুন্নাহ, তাওহিদ-রিসালাত-আখিরাতের প্রতি অবিশ্বাস পোষণ নয়, বরং এগুলোকে মনে প্রাণে বিশ্বাস করা; কুরআনের দাওয়াত পরিপূর্ণরুপে গ্রহণ করা, বিশ্বনবির হাদিস অনুযায়ী জীবনকে সাজানো প্রত্যেক মুসলমানের একান্ত কর্তব্য। কারো কথায় জীবন পরিচালনা নয় বরং কুরআন-সুন্নাহ মোতাবেক জীবন পরিচালনায় রয়েছে পরকালীন জীবনের সফলতা লাভের একমাত্র উপায়।

আল্লাহ তআলা মুসলিম উম্মাহকে কুরআন-সুন্নাহ বিরোধী নেতা, আত্মীয়-স্বজন এবং বন্ধু-বান্ধব থেকে হিফাজত করুন। শিরকমুক্ত ঈমান লাভ করে পরকালের কঠিন অবস্থা থেকে মুক্ত থাকার তাওফিক দান করুন। পরকালের আজাব দেখে পুনরায় দুনিয়ায় ফিরে আসার আকাংখা থেকেও হিফাজত করুন। আমিন।

এমএমএস/এবিএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।