হজরত উম্মে সালমা রাদিয়াল্লাহু আনহার দোয়া


প্রকাশিত: ১০:৪৪ এএম, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬

আল্লাহ তাআলা বান্দাকে তাঁর দোয়া অনুযায়ী তাঁর প্রাপ্য দান করেন। যা হজরত উম্মে সালমা রাদিয়াল্লাহু আনহার জীবনে বাস্তবায়ন হয়েছিল। তিনি তাঁর স্বামীর মৃত্যুতে আল্লাহ তাআলার নিকট উত্তম প্রতিদান লাভের দোয়া করেছিলেন; আল্লাহ তাআলা তাঁর দোয়া কবুল করেছিলেন। যা সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো-

হজরত উম্মে সালমা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, একদিন আমার স্বামী আবু সালমা রাদিয়াল্লাহু আনহু রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দরবার থেকে আমার নিকট আসেন এবং অত্যন্ত খুশী মনে বলেন, ‘আজ আমি এমন একটি হাদিস শুনেছি; যা শুনে আমি খুবই খুশী হয়েছি।

হাদিসটি হলো- যখন কোনো মুসলমানের ওপর কোনো কষ্ট বা বিপদ আসে এবং সে পড়ে-

Doa

‘আল্লাহুম্মা আঝিরনি ফি মুসিবাতি ওয়াখলুফ লি খাইরাম মিনহা।` অর্থাৎ হে আল্লাহ! আমার এ বিপদে আমাকে প্রতিদান দিন এবং আমাকে এর চেয়ে উত্তম বিনিময় প্রদান করুন।` তখন আল্লাহ তাআলা অবশ্যই তাঁকে বিনিময় ও প্রতিদান দিয়ে থাকেন।

হজরত উম্মে সালমা বলেন আমি দোয়াটি মুখস্ত করি। অতপর হজরত আবু সালমার ইন্তেকাল হলে আমি ‌ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন` পাঠ করি এবং এ দোয়াটিও পড়ি। কিন্তু আমার ধারণা হয় যে, আবু সালমা অপেক্ষা আর ভালো লোক আমি কাকে পাবো?

হজরত উম্মে সালমার দোয়া-
Doa

আমার ইদ্দত অতিবাহিত হলে আমি একদিন একটি চামড়া সংস্কার করতে থাকি। এমন সময় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আগমন করেন এবং ভিতরে প্রবেশের অনুমতি চান। আমি চামড়াটি রেখে হাত পরিষ্কার করে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে ভিতরে আসার আবেদন করি। তাঁকে একটি নরম আসনে বসার ব্যবস্থা করি।

তিনি আমাকে বিয়ে করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! এটাতো আমার জন্য বড়ই সৌভাগ্যের কথা। কিন্তু প্রথমত আমি একজন লজ্জাবতী নারী। আমি আশংকা করছি, না জানি আমার দ্বারা আপনার মতের বিপরীত কোনো কাজ ঘটে যায় এবং এ কারণে আল্লাহ তাআলা আমাকে কোনো শাস্তি দেন কিনা! দ্বিতীয়ত আমি একজন বয়স্ক নারী। তৃতীয়ত আমার ছেলে মেয়ে আছে।

তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, দেখ!‍ আল্লাহ তাআলা তোমার এ অনর্থক লজ্জা দূর দেবেন। আর বয়স আমারওতো কম নয় এবং তোমার ছেলে মেয়ে যেন আমারই ছেলে মেয়ে।

আমি এ কথা শুনে বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! তাহলে আমার কোনো আপত্তি নেই। অতঃপর আল্লাহর নবির সঙ্গে আমার বিয়ে হয়ে যায়। আর এ দোয়ার বরকতে আমি আমার পূর্ব স্বামী আবু সালমা অপেক্ষা উত্তম স্বামী রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে পেয়ে যাই। সুতরাং সমুদয় প্রশংসা মহান আল্লাহ তাআলার জন্য। (মুসনাদে আহমদ)

পরিশেষে...
বিপদাপদে হতাশ না হয়ে আল্লাহ তাআলার নিকট দোয়ার মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা করা। কেননা দোয়ার মাধ্যমেই আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাদেরকে অনেক বিপদাপদ থেকে হিফাজত করেন। ক্ষয়-ক্ষতি থেকে হিফাজত করেন আবার উত্তম প্রতিদানও দান করেন।

সুতরাং আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে বিপদাপদে তাঁর সাহায্য লাভের পাশাপাশি উত্তম প্রতিদান লাভ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।