মুয়াজ্জিনের আজান দেয়ার মর্যাদা
আজান হলো আল্লাহ তাআলার ইবাদাত। হিজরি প্রথম বছর থেকেই আজান শুরু হয়; যা সুনির্দিষ্ট বিশেষ শব্দের মাধ্যমে নির্ধারিত সময়ে নামাজে যোগদানের জন্য আহ্বান করা হয়।
আজান শব্দের অর্থ হচ্ছে ডাকা, আহবান করা। ইসলামি শরিয়তের পরিভাষায় জামাআতের সহিত নামাজ আদায় করার লক্ষ্যে মানুষকে মসজিদে একত্রিত করার জন্য আরবি নির্দিষ্ট শব্দ ও বাক্যের মাধ্যমে উচ্চকণ্ঠে ডাক দেয়া বা ঘোষণা করাকেই আজান বলা হয়।
আর যিনি এ আজান দেন তাঁকে মুয়াজ্জিন বলা হয়। আজান প্রদানকারীর জন্য রয়েছে অনেক ফজিলত ও মর্যাদা। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আজান প্রদানকারীর অসামান্য ফজিলত ঘোষণা করেছেন। হাদিসে ঘোষিত মুয়াজ্জিনের আজান দেয়ার বরকত ও ফজিলত তুলে ধরা হলো-
মুয়াজ্জিনের মর্যাদা
>> আজান উচ্চ শব্দে হওয়া বিধি সম্মত, কেননা মুয়াজিনের আজানের শব্দ যত দূর যাবে ততদূরের মধ্যে যে কোন মানুষ, জিন বা যে কোনো বস্তু এ শব্দগুলো শুনবে কিয়ামতের দিন এগুলো তার জন্য সাক্ষ্য দিবে। হাদিসে এসেছে-
হজরত মুআবিয়া ইবনে আবু সুফিয়ান রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, ‘কিয়ামাতের দিন সবচেয়ে বেশি লম্বা ঘার হবে মুয়াজ্জিনদের।’ (মুসলিম)
>> মুয়াজ্জিনের শব্দ যতদূর যাবে ততদূর পর্যন্ত তাকে ক্ষমা করে দেয়া হবে। যে কোনো জীব ও জড় পদার্থ তার শব্দ শুনবে; তাকে (মুয়াজ্জিনকে) সমর্থন দেবে বা সত্যায়িত করবে। যত মানুষ মুয়াজ্জিনের আজানের দ্বারা নামাজ পড়বে তাদের সকলের সমপরিমাণ সওয়াব তারও (মুয়াজ্জিনের) হবে। হাদিসে এসেছে-
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘যদি মানুষ জানত আজানে ও নামাজের প্রথম সারিতে কি আছে এবং লটারী ছাড়া তা অর্জন সম্ভব না নয়। তাহলে ঐ ব্যক্তি লটারী করে হলেও তা অর্জনের চেষ্টা করত।’ (বুখারি ও মুসলিম)
পরিশেষে...
আজান প্রদানকারীকে ছোট করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। উল্লেখিত হাদিস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, আজান দেয়া অনেক গুরুত্বপূর্ণ ইবাদাত। মুয়াজ্জিন পরকালে অসামান্য মর্যাদার অধিকারী হবেন। আল্লাহ তাআলা সমাজে নামাজের জামাআত প্রতিষ্ঠায় মুয়াজ্জিনের আজান প্রদানের অসামান্য অবদানকে কবুল করুন। আমিন।
এমএমএস/আরআইপি