মৃতব্যক্তির পক্ষে কুরবানি আদায়


প্রকাশিত: ০৯:১২ এএম, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৬

কুরবানির হুকুম বা বিধান হলো জীবিত ব্যক্তিদের ওপর। যদি কোনো ব্যক্তি তাঁর মৃত বাবা-মা বা অন্য কারো নামে কুরবানি করেন, তবে তা আদায় করা বৈধ। সামথ্যবান ব্যক্তি প্রথমত নিজের কুরবানি আদায় করবেন। তারপর মৃতব্যক্তির পক্ষ থেকে কুরবানি করতে পারবেন।

তাছাড়া কুরবানি এক প্রকার সাদাকাহ। তাই মৃতব্যক্তির পক্ষ থেকে যেমন দান-সাদাকাহ করা যায়, তেমনি তার পক্ষ হতে কুরবানিও দেয়া যায়। মৃতব্যক্তির জন্য কুরবানি প্রসঙ্গে সংক্ষেপে কিছু তথ্য তুলে ধরা হলো-

মৃতব্যক্তির পক্ষে কুরবানির বিধান-
>> যদি কোনো কারণে মৃতব্যক্তির জন্য কুরবানি ওয়াজিব হয়ে থাকে তাহলে তার জন্য পূর্ণ একটি কুরবানি করতে হবে।
>> মৃতব্যক্তি যদি মৃত্যুর পূর্বে তার সম্পদ থেকে কুরবানি করার অসিয়ত করে যান তবে তার জন্য কুরবানি করা আবশ্যক।

তাছাড়া মৃতব্যক্তির জন্য কুরবানি সাদকা স্বরূপ। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তাঁর সাহাবাগণ নিজেদের পক্ষ থেকে কুরবানি আদায় করেছেন। হাদিসে এসেছে-

হজরত আয়িশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট এসে জিজ্ঞেস করলেন, হে রাসুল! (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার মা হঠাৎ ইন্তেকাল করেছেন। কোনো অসিয়ত করে যেতে পারেননি। আমার মনে হয় তিনি কোনো কথা বলতে পারলে অসিয়ত করে যেতেন। আমি যদি এখন তার পক্ষ থেকে সদকা করি তাতে কি তার সওয়াব হবে ? তিনি উত্তর দিলেন- ‘হ্যাঁ’। (বুখারি)

নিজের কুরবানি বাদ দিয়ে মৃতব্যক্তির নামে কুরবানি
অনেকেই নিজের কুরবানি বাদ দিয়ে মৃতব্যক্তির জন্য কুরবানি করে থাকেন। এমনটি মোটেই ঠিক নয়। ভাল কাজ প্রথম নিজেকে দিয়েই শুরু করতে হয়; তারপর অন্য জীবিত অতঃপর মৃতব্যক্তির জন্য করা যেতে পারে। এ প্রসঙ্গে হাদিসে এসেছে-

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন কুরবানি দিতে ইচ্ছা করলেন তখন দুটো দুম্বা ক্রয় করলেন। যা ছিল বড়, হৃষ্টপুষ্ট, শিংওয়ালা, সাদা-কালো বর্ণের এবং খাসি। একটি তিনি তার ঐ সকল উম্মতের জন্য কুরবানি করলেন ; যারা আল্লাহর একত্ববাদ ও তাঁর রাসূলের রিসালাতের সাক্ষ্য দিয়েছে; অন্যটি তার নিজের ও পরিবারবর্গের জন্য কুরবানি করেছেন। (ইবনে মাজাহ)

পরিশেষে…
মৃতব্যক্তির জন্য এ ধরনের সাদকা ও কল্যাণমূলক কাজের যেমন যথেষ্ট প্রয়োজন ও তেমনি তার পরকালীন জিন্দেগির জন্যও উপকারী। সুতরাং এভাবে মৃতব্যক্তির জন্য কুরবানি যেমন বৈধ আবার একাধিক মৃতব্যক্তির জন্য সওয়াবের উদ্দেশ্যে একটি পূর্ণাঙ্গ কুরবানিও করা যাবে।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সকল সামথ্যবানদেরকে নিজেদের মৃত মা-বাবা ও আত্মীয়-স্বজনের নামে কুরবানি করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।