আরাফায় উপস্থিতিই হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা


প্রকাশিত: ০৬:১৬ এএম, ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৬

হজ বিশ্ব মুসলিমের আর্থিক ও শারীরিক সামথ্যবানদের ফরজ ইবাদত। এ ইবাদতে তিনটি কাজ ফরজ। যার অন্যতম ও দ্বিতীয় কাজ হলো জাবালে রহমতের পাদদেশে ঐতিহাসিক আরাফার ময়দানে একত্রিত হওয়া। কেননা আরাফার ময়দানের উপস্থিতিই হজের মূল কাজ। আরাফাহ বিষয়ক ক্ষুদ্র লিখনি জাগো নিউজে তুলে ধরা হলো-

৯ জিলহজ হচ্ছে আরাফাত দিবস। এ দিবস সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, اَلْحَجَّ عَرَفَةُ অর্থাৎ ‘হজ হচ্ছে আরাফাহ। এ দিন (৯ জিলহজ) সকালেই হজের সবচেয়ে বড় ও গুরুত্বপূর্ণ রোকন ‘উকুফে আরাফা’ তথা আরাফা ময়দানে অবস্থানের উদ্দেশ্যে মিনাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আরাফার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হতে হয়। যে বা যারা এ আরাফার ময়দানে উপস্থিত হতে পারবে না, তাদের হজ হবে না।

দুপুরের পূর্বেই সম্ভব হলে গোসল অথবা ওজু করে ময়দানে অবস্থান করা মুস্তাহাব। জোহরের ওয়াক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই মসজিদে নামিরায় মুয়াজ্জিন আজান দিলে ইমাম খুতবা শুরু করবেন। যা স্থানীয় সময় ১২টা এবং বাংলাদেশ সময় ৩টা।

আরাফার ময়দানের খুতবায় হজ, কুরবানি, হলক, কসর, মিনায় কংকর নিক্ষেপ, তাওয়াফে জিয়ারাতসহ হজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব বিষয়সহ ইসলামের প্রচার-প্রসার এবং বিশ্বব্যাপী শান্তি প্রতিষ্ঠায় মুসলিম উম্মাহর আগামী দিনের করণীয় কি হবে, সে বিষয়গুলোর ওপর গুরুত্বপূর্ণ দিক-নির্দেশনামূলক খুতবা প্রদান করা হবে।

খুতবা শেষে সমগ্র মুসলিম উম্মাহর জন্য দোয়া ও কল্যাণ কামনা করা হবে। অতঃপর ঐ আজানে আলাদা আলাদা ইকামতে জোহর ও আসর নামাজের জামাআত সম্পন্ন হবে।

নামাজ আদায় পরবর্তী ও মাগরিব পূর্ববর্তী সময়ে আরাফাতের ময়দানের যে কোনো স্থানে অবস্থান করবে। যতক্ষণ সম্ভব দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কিবলামুখী হয়ে আল্লাহ নিকট একান্ত চাওয়া-পাওয়া, দোয়া-দরুদ পাঠসহ তাকবির-তালবিয়া ঘন ঘন পাঠ করে রহমত, বরকত ও মাগফিরাত কামনা করা।

বিশেষ করে তালবিয়া পাঠ করা। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন اِنَّ النَّبِيَّ صلعم مَا زَالَ يُلَبِّيْ حَتّي اَتَي جَمَرَةُ الْعَقَبَةِ  অর্থাৎ নিশ্চয় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জামারাতুল আকাবায় যাওয়া পর্যন্ত তালবিয়া পাঠ করতে থাকতেন। (আবু দাউদ, তিরমিজি)

আরাফায় অবস্থানকালে দুহাত উঠিয়ে এবং দাঁড়িয়ে দোয়া করা সুন্নাত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণিত আছে, তিনি তিনবার ‘আল্লাহু আকবার ওয়া লিল্লাহিল হামদ’ উচ্চারণ করে এ দোয়াটি পাঠ করেছেন-
لَا اِلَهَ اِلَّا اللهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيْكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَ لَهُ الْحَمْدُ اللهُمَّ اهْدِنِي بِالهُدي و نَقِّنِي باِلتَّقْوي وَاغْفِرْلِي فِي الأخِرَةِ وَ الْاُوْلَي-

উচ্চারণ : ‘লা- ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকালা; লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদ; আল্লাহুম্মাহদিনি বিলহুদা; ওয়া নাক্কিনি বিত-তাক্বওয়া; ওয়াগফিরলি ফিল আখিরাতে ওয়াল উলা।’

অর্থ : ‘আল্লাহ ছাড়া কোনো মা’বুদ নেই। তিনি একক, লা শরীক। রাজ্য তারই এবং সমস্ত প্রশংসাও তাঁরই। হে আল্লাহ! তুমি আমাকে হিদায়েতের পথ প্রদর্শন কর এবং তাকওয়া দ্বারা আমাকে পরিচ্ছন্ন কর এবং দুনিয়া ও আখিরাতে ক্ষমা কর।’

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, আমিসহ আমার পূর্ববর্তী সকল নবী-রাসুলগণ যে দোয়াগুলো পাঠ করেছেন, তার মধ্যে সর্বোত্তম দোয়াটি হলো-
لَا اِلَهَ اِلَّا اللهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيْكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَ لَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلي كُلِّ شَيئ قَدِيْر
উচ্চারণ : ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকালাহু, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ওয়া হুওয়া আ’লা কুল্লি শাইয়িন ক্বাদির।’

পরিশেষে...
আল্লাহ তাআলা হজে আগত সকল হজ পালনকারী মুসলিম উম্মাহকে বিশ্বনবির অনুসরণ ও অনুকরণ করে আরাফাতের ময়দানে অবস্থানকালীন কার্যক্রম বাস্তবায়নের তাওফিক দান করুন। আমিন।



এমএমএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।