কৃষিজাত ফল-ফসলের জাকাতের বিধান


প্রকাশিত: ১০:৪৪ এএম, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬

নামাজের মতো জাকাত আদায়ও ফরজ ইবাদাত। চার ধরনের সম্পদে ওপর জাকাত প্রযোজ্য। এগুলোর মধ্য থেকে কৃষিজাত ফল-ফসলের জাকাতও অন্তর্ভূক্ত। তাই কৃষিজাত শস্যদানা, ফল ও ফসলের জাকাতের বিধান ও পরিমাণ সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো-

ফল-ফসলের জাকাতের বিধান
অধিকাংশ আলেমের মতে উৎপাদিত ফসলের জাকাত তখনই ফরজ হবে, যখন ফসলের নিসাব পূর্ণ হবে। তবে ফসল ও ফলের জাকাত ওয়াজিব হওয়ার জন্য একবছর অতিবাহিত হওয়া শর্ত নয়। যখনই ফসল কাটার সময় তবে তখনই তার জাকাত প্রদান করা। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘এবং তার (ফসলের) হক (জাকাত) আদায় কর, তা কাটার দিবসে। (সুরা আনআ’ম : আয়াত ১৪১)

ফল-ফসলের জাকাত ফরজের শর্ত
জাকাত ফরজ হওয়ার সময় ফল-ফসল মালিকানাভুক্ত হতে হবে। অনুরূপভাবে তা নিসাব পরিমাণ হতে হবে।

ফল-ফসলের নিসাব
ফল-ফসলের নিসাব হলো ৫ (পাঁচ) ওয়াসাক। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘পাঁচ ওয়াসাকের কমে জাকাত ফরজ নয়। (বুখারি ও মুসলিম)

উৎপন্ন ফসলের ক্ষেত্রে
যে সকল ফসল উৎ ১ ওয়াসাক = ৬০ সাআ’। তাহলে ৫ ওয়াসাক = ৩০০ সাআ’। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এক সাআ’ = চার মুদ। এক সাআ’ = ২.৪০ কেজি (২০৪০ গ্রাম)। সে হিসাবে ফল ও ফসলের নিসাব পরিমাণ মাল হলো-  ৬১২ কেজি। আবার কেউ কেউ বলেন, উত্তম গমের দ্বারা নিসাবের পরিমাণ হলো ৬৫২ কেজি ৮০০গ্রাম।

জাকাতের প্রদানের পরিমাণ
১. ২০ ভাগের ১ ভাগ (৫%)
উৎপন্ন ফসলের ক্ষেত্রে জাকাত প্রদান করতে হবে এক বিশমাংশ অর্থাৎ বিশ ভাগের এক ভাগ। যে ব্যক্তি ৬১২ কেজি ফল বা ফসল উৎপন্ন করতে সক্ষম হবে, সে এ ফসলের ২০ ভাগের এক ভাগ জাকাত আদায় করবে। যেমন : কুপ বা গভীর নলকুপ অথবা নদির পানি মেশিনে সেচ দিয়ে উৎপন্ন ফসল।

২. ১০ ভাগের ১ ভাগ (১০%)
যে সকল ফসল বিনা পরিশ্রমে পানি সরবরাহ হয়ে উৎপন্ন হয়েছে, সে সকল পণ্যের জাকাতের নির্ধারিত পরিমাণ হলো ১০ ভাগের একভাগ। যেমন বৃষ্টির পানি, ঝর্নার পানি দ্বারা।

৩. তিন দশমাংশ (৭.৫%)
যে সকল ফল-ফসল সেচ এবং বৃষ্টির পানি দ্বারা উৎপন্ন হয়ে থাকে। একবার সেচের পানি আবার বৃষ্টি অথবা নদির জোয়ার-ভাটার পানি দ্বারা হয়ে থাকে। এ সকল ফল বা ফসলের ক্ষেত্রে শতকরা ৭.৫ ভাগ জাকাত আদায় করতে হবে।

পরিশেষে...
বিশ্বনবির হাদিসের উদ্ধৃতি দিয়ে  শেষ করতে চাই- হজরত ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেছেন, ‘যা বৃষ্টি ও ঝর্নার পানি দ্বারা সেচ হয় বা বৃষ্টির পানিতে সিক্ত শষ্যক্ষেত্র তার জাকাত একদশমাংশ (১০%)। আর যা সেচ দ্বারা পানি দেওয়া হয় তার জাকাত একবিশমাংশ (৫%)। (বুখারি মুসলিম)
সুতরাং মুসলিম উম্মাহর সকল নিসাব পরিমাণ ফল-ফসলের মালিকের ওপর জাকাত আদায়কে ফরজ করে দিয়েছেন। তাই আল্লাহ তাআলা প্রত্যেক নিসাব পরিমাণ ফল-ফসলের মালিকদেরকে নির্ধারিত হারে জাকাত আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/এবিএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।