খাঁটি মুসলিম হতে আল্লাহর নির্দেশ


প্রকাশিত: ০৯:৩০ এএম, ২০ জুলাই ২০১৬

ইয়াহুদিরা মুসলমানদেরকে ইয়াহুদি ধর্মের দিকে এবং খ্রিস্টানরা তাদের ধর্মের দিকে দাওয়াত দিত এবং মুসলিমদেরকে বলতো যে, ইয়াহুদি এবং খ্রিস্টান ধর্ম সঠিক। তাদের এহেন চক্রান্তমূলক দাওয়াত ও শিরক মিশ্রিত ধর্মাদর্শ থেকে মুসলিম উম্মাহকে হিফাজত করতে আল্লাহ তাআলা কুরআনে উল্লেখ করেন-

Quran-Inner

‘এবং তারা (ইয়াহুদিরা) বলে, তোমরা ইয়াহুদি অথবা খ্রিস্টান হয়ে যাও, তবেই সুপথ (হিদায়াত) প্রাপ্ত হবে; (হে রাসুল) আপনি বলুন, বরং আমরা (হজরত) ইবরাহিমের সুদৃঢ় ধর্মাদর্শ অনুসরণ করি। এবং সে (হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালাম) অংশীবাদীদের অন্তর্ভূক্ত ছিলেন না। (সুরা বাক্বারা : আয়াত ১৩৫)

ফিরে দেখা
ইয়াহুদি ও খ্রিস্টানদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থগুলোতে হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালামের এক আল্লাহ ছাড়া আর কারো ইবাদাত-বন্দেগি, উপসনা-আরাধনা, প্রশংসা-গুণগান ও আনুগত্য না করার সাক্ষ্য প্রদান করে। আল্লাহর গুণ ও বৈশিষ্ট্যের মধ্যে আর কাউকে শরিক না করাই ছিল তাঁর মিশন।

কাজেই বলা যায় যে, হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালাম যে চিরন্তন সত্য-সরল পথের ওপর প্রতিষ্ঠিত ছিলেন ইয়াহুদিবাদ ও খ্রিস্টবাদ সে সত্য থেকে সরে গিয়েছিল। সে কারণেই তাদের উভয়ের মধ্যে শিরকের মিশ্রণ ঘটেছিল।

এ আয়াত নাজিলের কারণ
এক চক্ষু বিশিষ্ট আবদুল্লাহ বিন সুরিয়া নামক এক ইয়াহুদি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলেছিল, ‘আমরাই সঠিক পথে রয়েছি। তোমরা আমাদের অনুসারি হও তবে তোমরাও সুপথ প্রাপ্ত হবে।’ তখন এ আয়াত নাজিল করে আল্লাহ তাআলা জানিয়ে দেন যে, হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং তাঁর অনুসারীরাই হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালামের সুদৃঢ় ধর্মাদর্শের অনুসারী।

হানিফা’র মর্মার্থ-
হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালাম ছিলেন সঠিক ধর্মের ওপর সুপ্রতিষ্ঠিত। তিনি আল্লাহর অকৃত্রিম প্রেমিক, বাইতুল্লাহর দিকে মনোনিবেশকারী, ক্ষমতা থাকার সময় হজকে আবশ্যক কর্তব্যরূপে মান্যকারী, আল্লাহর আনুগত্য স্বীকারকারী, সমস্ত রাসুলের ওপর বিশ্বাস স্থাপনকারী, আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই এ কথার সাক্ষ্যদানকারী, মা-মেয়ে-খালা ও ফুফুকে হারাম জ্ঞানকারী এবং সমস্ত অবৈধ কাজ হতে দূরে অবস্থানকারী ছিলেন। তাফসিরবিশারদগণ ‘হানিফ’ শব্দ দ্বারা এ গুণগুলো সাব্যস্ত করেছেন।

পরিশেষে লক্ষ্যণীয় বিষয় হচ্ছে...
বর্তমানে দুর্ভাগ্যবশত মুসলিমদের মধ্যেও শিরকের ব্যাপক রূপ ধারণ করেছে। যার ফলে নামধারী মুসলিমদের শিরকি কার্যক্রমের কারণে ইসলামের প্রকৃত রূপ ও বৈশিষ্ট্য বিশ্ববাসীর দৃষ্টিতে অদৃশ্য হয়ে পড়েছে। কারণ, অন্যান্য ধর্মাবলম্বী যারা, তারাতো সহজে কুরআন-হাদিসের কাছাকাছি পৌছতে পারে না। তারা কেবল মুসলিমদের বাহ্যিক আমল দেখেই ইসলামকে অনুমান করে। প্রকৃতপক্ষে ইসলামের মানদণ্ড হলো কুরআন এবং সুন্নাহ।

সুতরাং আলহামদুল্লিাহ যে, ইসলামের সুস্পষ্ট ও সঠিক যাবতীয় শিক্ষা কুরআন-হাদিসে বিদ্যমান এবং সুরক্ষিত। যেখানে ইসলামের (তাওহিদ তথা একত্ত্ববাদের) ধারণা নির্মল ও সুস্পষ্ট এবং যার মাধ্যমে ইয়াহুদি, খ্রিস্টান ও বহুশ্বরবাদীদের ধর্ম থেকে ইসলাম যে একেবারে ভিন্ন এবং মুক্ত তা পরিষ্কার হয়ে যায়।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সকল প্রকার শিরক থেকে হিফাজত করে মিল্লাতা ইবরাহিমা হানিফা’র গুণাবলী অর্জন করে খাঁটি মুসলিমদের অন্তর্ভূক্ত হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।