উত্তম কথায় জান্নাত প্রাপ্তির ঘোষণা


প্রকাশিত: ১১:৪০ এএম, ০৮ জুলাই ২০১৬

দুনিয়াতে সবচেয়ে উত্তম কথা হলো কুরআনের বাণী। কুরআনে অনেক স্থানে আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন উত্তম কথা বলার জন্য। কারণ ভালো কথার দ্বারা মানুষের কল্যাণ লাভ হয়। মন্দ কথার জবাব যদি ভালো কথা দ্বারা দেয়া হয়; তবে সেখানে অশান্তির পরিবর্তে শান্তি বিরাজ করে। এ কারণেই কুরআন-হাদিসে উত্তম কথা বলার ব্যাপারে অসংখ্য নসিহত রয়েছে। তা থেকে দু’একটি তুলে ধরা হলো-

আল্লাহ তাআলা ঘোষণা দেন- হে মুমিনগণ! আল্লাহকে ভয় কর এবং উত্তম (সঠিক) কথা বল। (তবে) তিনি তোমাদের আমল-আচরণ সংশোধন করবেন এবং তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করবেন। যে কেউ আল্লাহ ও তাঁর রসুলের আনুগত্য করে, সে অবশ্যই মহা সাফল্য অর্জন করবে। (সুরা আহযাব : আয়াত ৭০-৭১)

সুতরাং যারা উত্তম কথা বলবে তাদের দ্বারা কুরআন এবং হাদিসের নির্দেশের ওপর আমল হবে। এ উত্তম কথার আমলের দ্বারাই আল্লাহ তাআলা মানুষকে সংশোধন করবেন এবং সকল প্রকার গোনাহ মাফ করবেন। দুনিয়ার উন্নতির পাশাপাশি আখিরাতের জীবনে মহা সফলতা দান করবেন।

>> হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘জান্নাতের মধ্যে একটি বালাখানা রয়েছে, যার ভেতর থেকে বাইরের এবং বাইরে থেকে ভেতরের দৃশ্য দেখা যায়। এক বেদুঈন বলল, ‘হে আল্লাহর রাসুল! (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এই বালাখানা কার জন্য? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন-|

ক. যে ব্যক্তি মানুষের সাথে ভালো কথা বলে;
খ. যে ব্যক্তি অনাহারীকে খাবার দেয়;
গ. যে ব্যক্তি রোজা রাখে; এবং
ঘ. যে ব্যক্তি সালাত আদায় করে যখন মানুষ ঘুমিয়ে থাকে। (তিরমিজি, মুসনাদে আহমদ, মিশকাত)

এ হাদিসের অনুপম শিক্ষা অনুযায়ী সমগ্র মুসলমানের উচিত যে, পরিবার, সমাজ, তথা জীবনের সর্বক্ষেত্রে উত্তম কথা বলা। অপরকে উত্তম কথা বলতে উৎসাহ দেয়া।  প্রত্যেকে প্রত্যেকের মতো করে উত্তম কথা বলার প্রচলনে সচেষ্ট থাকা। তবেই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদিসের সফল বাস্তবায়ন হবে। উত্তম কথার অধিকারী ব্যক্তি জান্নাতে উত্তম বালাখানা লাভ করবে।

>> হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, ‘ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখিরাত দিবসে ঈমান রাখে, সে যেন উত্তম কথা বলে, অন্যথায় চুপ থাকে।’ (মুসলিম, আবু দাউদ, তিরমজি, মুসনাদে আহমদ, ইবনু মাজাহ)।

এ হাদিসে কোনো কারণে যদি উত্তম কথা বলতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়, তবে সেক্ষেত্রে ধৈর্য্যের সঙ্গে চুপ থাকা। উপরোক্ত হাদিসে উত্তম কথায় অপারগ হলে চুপ থাকতে বিধি-নিষেধ করা হয়েছে।

পরিশেষে…
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছোট্ট একটি আমল উল্লেখ করেছেন- একদিন হজরত মিকদাম রাদিয়াল্লাহু আনহু জানতে চান, ‘কী আমল করলে জান্নাতে যাওয়া যাবে?` রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, `তুমি উত্তম কথা বলো এবং মানুষকে খানা খাওয়াও।` (সিলসিলাহ সহিহাহ)।

সুতরাং আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কথা বলার ক্ষেত্রে সুন্দর সুন্দর বাক্য বিনিময় করার তাওফিক দান করুন। সব সময় পরস্পরের সঙ্গে অন্যায় ও অশালীন বাক্য বিনিময় পরিত্যাগ করে উত্তম কথা বলার অভ্যাস গঠনের তাওফিক দান করুন। এ অভ্যাস গঠনের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা তাঁর প্রিয় বান্দাদের জান্নাত দান করুন। আমিন।

এমএমএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।