শবে কদর : আজকের রাত যেভাবে অতিবাহিত করবেন
আজকের রাত রমজানের ২৭তম রাত। রমজনের শেষ দশকের বিজোড় রাত। এ রাতে লাইলাতুল কদর হওয়ার অনেক সম্ভাবনা। মুসলিম উম্মাহ সাধারণত এ রাতকেই লাইলাতুল কদর ভেবে সারারাত জাগরণ করে ইবাদাত-বন্দেগিতে কাটিয়ে দেন। এ রাতের কিছু করণীয় সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো-
১. কদর তালাশ
লাইলাতুল কদরের জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো রাতকে নির্ধারণ করা হয়নি। বরং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, রমজানের শেষ দশকের বিজোড় রাতে লাইলাতুল কদর তালাশ কর। যেহেতু আজ বিজোড় রাত। এ রাতে অধিকাংশ ওলামায়ে কেরাম লাইলাতুল কদর হওয়ার ব্যাপারে মত দিয়েছেন। তাই আজকের রজনীতে বেশি বেশি ইবাদাত করা।
২. আল্লাহ এবং রাসুলের অনুসরণ
মানুষের জীবন পরিচালনা গাইড ও সংবিধান কুরআন এ রাতেই নাজিল হয়েছে। এ কারণে লাইলাতুল কদরের মর্যাদা এত বেশি। এর সম্মানার্থে আল্লাহ ঘোষণা দিলেন- এ রাত হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম। সুতরাং কুরআন নাজিলের রাতে কুরআনকে বাস্তবজীবনে বাস্তবায়ন করার অঙ্গীকার গ্রহণের পাশাপাশি বিশ্বনবির পূর্ণাঙ্গ অনুসরণ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত করাই হবে লাইলাতুল কদরের সেরা প্রাপ্তি।
৩. গোনাহ মাফ চাওয়া
লাইলাতুল কদরের করণীয় সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হজরত আয়িশা রাদিয়াল্লাহু আনহুকে আল্লাহর নিকট গোনাহ মাফের দোয়া শিখিয়েছিলেন। তাই আমাদের উচিত এ দোয়ার মাধ্যমে গোনাহ মাফের জন্য তাওবা করা। আর তা হলো-
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আ`ফুওয়ুন; তুহিব্বুল আ`ফওয়া; ফা`ফু আন্নি।’
অর্থ : হে আল্লাহ! আপনি ক্ষমাশীল; ক্ষমা করতে ভালো বাসেন; অতএব আমাকে ক্ষমা করে দিন। (মুসনাদে আহমাদ, ইবনে মাজাহ, তিরমিজি, মিশকাত)
৪. কল্যাণের আবেদন
লাইলাতুল কদর যেহেতু হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম রাত। তাই এ রাতের হক হলো আল্লাহর নৈকট্য লাভের পাশাপাশি মানুষের দুনিয়ার জীবনে সুখ-শান্তির আবেদন-নিবেদন আল্লাহর দরবারে পেশ করা। যাতে এ রাতে আল্লাহ তাআলা বান্দার জন্য সর্বোত্তম ভাগ্য নির্ধারণ করেন। দুনিয়ার যাবতীয় কল্যাণ দান করেন।
৫. জ্ঞানার্জন করা
রমজান এবং কদর ছাড়াও জ্ঞানার্জনের গুরুত্ব অত্যাধিক। যদি এ জ্ঞানার্জনে কদরের রজনীতে কিছু সময় ব্যয় করা যায়, তবে এর ফায়েদা হবে অনেক বেশি। তাই এ রাতে প্রত্যেক মুসলমানের উচিত কিছু সময় কুরআন হাদিস অধ্যয়নে ব্যয় করা।
৬. কাযা নামাজ পড়া
এ মাস হাজার মাসে চেয়ে উত্তম। এটা আল্লাহ তাআলার ঘোষণা। সে মতে, মানুষ দুনিয়ার জীবনে অসংখ্য নামাজ কাযা করে থাকেন। যারা নামাজ কাযা করেছেন বা পড়তে পারেননি তারাসহ সকল মুমিন বান্দার জন্য কাযা আদায় করার সুবর্ণ সময় হলো লাইলাতুল কদরে বিগত জীবনের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ অন্তত একবার কাযা আদায় করা। আল্লাহ ইচ্ছা করলে এ ওসিলায় বিগত জীবনে কাযাগুলোর আদায় হিসেবে এ নামাজকে কুবল করতে পারেন।
সবোপরি আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে নামাজ, জিকির-আজকার, কুরআন তিলাওয়াত, হাদিস অধ্যয়ন, দান-খয়রাত, মা-বাবার খেদমতসহ ভালো কাজের মাধ্যমে কদরের রাতটি আতিবাহিত করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/এবিএস