ওমরাহর সময় মাফলার ব্যবহার করা যাবে কি?

ইসলাম ডেস্ক
ইসলাম ডেস্ক ইসলাম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০২:৫১ পিএম, ১০ জানুয়ারি ২০২৫
ওমরাহ অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ ইবাদত

ওমরাহর সময় ইহরাম অবস্থায় গলায় মাফলার ব্যবহার করা যাবে। এ কারণে কোনো জরিমানা আসবে না। কারণ ইহরাম অবস্থায় ঘাড়, গলা ঢেকে রাখা নিষিদ্ধ নয় আর মাফলার মানুষের শরীরের অবয়ব অনুযায়ী বানানো সেলাইকৃত কোনো পোশাক নয়। তবে ইহরাম অবস্থায় পুরুষের জন্য যেহেতু মাথা ও চেহারা ঢাকা নিষিদ্ধ, নারীদের চেহারা ঢাকা নিষিদ্ধ, তাই মাফলার দিয়ে পুরুষদের মাথা ও চেহারা এবং নারীদের চেহারা ঢাকা থেকে বিরত থাকতে হবে।

হজ ও ওমরাহর গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ ইহরাম। নির্দিষ্ট স্থান থেকে হজ ও ওমরাহর নিয়তে নির্ধারিত নিয়মে ইহরাম বাঁধতে হয়। ইহরাম পরিধানের পর বৈধ অনেক কিছু হারাম হয়ে যায়। এগুলোর একটি হলো সেলাইকৃত পোশাক। সাধারণ অবস্থায় সেলাইকৃত পোশাক স্বাভাবিক ও বৈধ হলেও ইহরাম অবস্থায় পুরুষের জন্য সেলাইকৃত পোশাক পরিধান করা নিষিদ্ধ।

সালেম (রহ.) তার বাবা থেকে বর্ণনা করেন যে, নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, মুহরিম ব্যাক্তি জামা, পাগড়ি, টুপি, পায়জামা, জাফরান বা ওয়ার্‌স দ্বারা রঞ্জিত কাপড় এবং মোজা পরিধান করবে না। কিন্তু চপ্পল না পেলে সে টাখনুর নীচ থেকে মোজা কেটে তা পরিধান করতে পারবে। (সহিহ মুসলিম: ২৬৬৩)

ইহরাম অবস্থায় পুরুষের জন্য শরীরের কোনো অঙ্গের আকৃতিতে সেলাইকৃত সব ধরনের পোশাক পরিধান করা নিষিদ্ধ যেমন পাঞ্জাবি, জুব্বা, ফতুয়া, শার্ট, পায়জামা, প্যান্ট, গেঞ্জি, কোট, সুয়েটার, জাহিঙ্গা, হাতমোজা, টুপি, পাগড়ি ইত্যাদি। ইহরামের কাপড় ছিড়ে গেলে তা সেলাই করা বা জোড়া দেওয়া যাবে, রিফু করা বা তালি লাগানো যাবে। তবে ইহরামের কাপড়ে এ রকম সেলাইও না থাকা উত্তম।

ইহরামের নিয়ত ও তালবিয়া পড়ার পর সেলাইকৃত কাপড় পরা অবস্থায় এক দিন বা এক রাত অর্থাৎ বার ঘণ্টা বা তার চেয়ে বেশি সময় কাটালে একটা দম দেওয়া ওয়াজিব হবে। অর্থাৎ মিনা বা মক্কায় একটি ছাগল বা দুম্বা জবাই করে তার মাংস দরিদ্রদের মধ্যে বণ্টন করে দিতে হবে। বারো ঘণ্টার কম এবং এক ঘণ্টার বেশি সময় সেলাইকৃত কাপড় পরিধান করে থাকলে পৌনে দুই কেজি গম বা তার মূল্য সদকা করতে হবে। এক ঘণ্টার কম সময় সেলাইকৃত কাপড় পরিধান করে থাকলে এক মুষ্টি গম বা তার মূল্য সদকা করতে হবে।

ইহরাম অবস্থায় পুরুষের জন্য মাথা ও চেহারা ঢাকা নিষিদ্ধ। নারীদের জন্য ইহরাম অবস্থায় সেলাইকৃত পোশাক পরিধান করা নিষিদ্ধ নয়। মাথা ঢেকে রাখাও নিষিদ্ধ নয়। তবে ইহরাম অবস্থায় নারীদের চেহারা ঢাকা ও হাত মোজা পরা নিষিদ্ধ। আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, মুহরিম নারী নেকাব পরবে না, হাত মোজাও পরবে না। (সহিহ বুখারি: ৫৮০৩)

পুরুষের মাথা বা চেহারা এবং নারীর চেহারার এক চতুর্থাংশ বা তার চেয়ে বেশি অংশ যদি বার ঘণ্টা লাগাতার কাপড়ে ঢাকা থাকে, তাহলে দম দেওয়া ওয়াজিব হবে। অর্থাৎ মিনা বা মক্কায় একটি ছাগল বা দুম্বা জবাই করে তার মাংস দরিদ্রদের মধ্যে বণ্টন করে দিতে হবে। বারো ঘণ্টার কম সময় বা এক চতুর্থাংশের কম অংশ ঢাকা থাকলে শুধু পৌনে দুই কেজি গম সদকা করতে হবে।

পুরুষের জন্য ইহরাম অবস্থায় এমন জুতা পরাও নিষিদ্ধ যার দ্বারা পায়ের পাতার ওপরের দিকের উত্থিত হাড় ঢাকা পড়ে। মোজা পরিধান করাও নিষিদ্ধ। তবে নারীরা পূর্ণ পা ঢাকা পড়ে এমন জুতা ও মোজা পরিধান করতে পারবে।

ওএফএফ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।