তাকবিরে তাহরিমা না বলে রুকুতে চলে গেলে কি নামাজ হবে?
যে তাকবিরের মাধ্যমে নামাজ শুরু করা হয় ওই তাকবিরকে তাকবিরে তাহরিমা বলে। এই তাকবিরের মাধ্যমে নামাজ আদায়কারী নামাজে প্রবেশ করে এবং নামাজের বাইরের সব কাজকর্ম হারাম বা নিষিদ্ধ হয়ে যায়। তাকবিরে তাহরিমার মাধ্যমে নামাজ শুরু করা ফরজ। রাসুল (সা.) বলেন,
مِفْتَاحُ الصَّلاَةِ الطُّهُورُ وَتَحْرِيمُهَا التَّكْبِيرُ وَتَحْلِيلُهَا التَّسْلِيمُ
সালাতের চাবি হল পবিত্রতা। তাকবিরে তাহরিমা নামাজের বাইরের সব কাজ কাজ হারাম করে দেয় আর সালাম তা হালাল করে। (তিরমিজি: ২৩৮)
নামাজের শুরুতে তাকবিরে তাহরিমা না বললে নামাজ শুদ্ধ হবে না। নামাজের জামাতে ইমাম রুকুতে চলে যাওয়ার পর কেউ যদি জামাতে শরিক হয়, তার জন্যও দাঁড়ানো অবস্থায় তাকবিরে তাহরিমা বলে তারাপর রুকুতে যাওয়া জরুরি। কেউ যদি তাড়াহুড়া করে তাকবিরে তাহরিমা না বলেই রুকুতে চলে যায়, তার নামাজ শুদ্ধ হবে না।
আরেকটি জরুরি বিষয় হলো, নামাজের শুরুতে পূর্ণ তাকবীরে তাহরিমা দাঁড়ানো অবস্থায় কিংবা দাঁড়ানোর কাছাকাছি থাকা অবস্থায় বলাও জরুরি। কেউ যদি তাকবিরে তাহরিমা বলতে বলতে রুকুতে চলে যায় এবং রুকুর কাছাকাছি চলে যাওয়ার পর তাকবিরে তাহরিমা শেষ হয় তাহলে তা শুদ্ধ হবে না। তাকবিরে তাহরিমা শুদ্ধ না হলে নামাজও শুদ্ধ হবে না।
তাকবিরে তাহরিমা বলার সময় হাত ওঠানো সুন্নাত। ইমাম নববির মতে তাকবিরে তাহরিমার সময় হাত ওঠানো সুন্নাত হওয়ার ব্যাপারে উম্মাহর আলেমদের ইজমা বা ঐকমত্য রয়েছে। তবে এটা ওয়াজিব নয়, তাই ছেড়ে দিলে নামাজ বাতিল হয়ে যাবে না। যদিও নামাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাত পালনের সওয়াব থেকে নামাজ আদায়কারী বঞ্চিত হবে।
রাসুল (সা.) সব সময় তাকবিরে তাহরিমা বলার সময় হাত ওঠাতেন। আবু হোরায়রা (রা.) বলেন,
كَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا دَخَلَ فِي الصَّلَاةِ رَفَعَ يَدَيْهِ مَدًّا
রাসুল (সা.) যখন নামাজ শুরু করতেন, উভয় হাত প্রসারিত করে ওঠাতেন। (সুনান তিরমিজি: ২৩৯)
তাই নামাজ শুরু করার সময় দুই হাত উঠিয়েই তাকবির বলা উচিত। তবে কখনও যদি তাড়াহুড়া বা অন্য কোনো কারণে কেউ হাত না ওঠাতে পারে বা ভুলে যায়, তাহলে নামাজ হয়ে যাবে এবং এই ভুলের জন্য সাহু সিজদা দেওয়ারও প্রয়োজন নেই। যেহেতু তাকবিরে তাহরিমায় হাত ওঠানো সুন্নাত, ফরজ নয়, ওয়াজিবও নয়।
ওএফএফ/জিকেএস