অসহায় মানুষকে সাহায্য করার জন্য চাঁদাবাজি করা যাবে কি?
মানুষের সম্পদ তার আন্তরিক সম্মতি ও সন্তুষ্টি ছাড়া জোর করে, যে কোনো ধরনের চাপ সৃষ্টি করে নেওয়া নাজায়েজ। কোনো মহৎ বা ভালো উদ্দেশ্যে, জনসেবার জন্য বা অসহায় মানুষকে সাহায্য করার জন্য হলেও তা নাজায়েজ। আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
لَا يَحِلُّ مَالُ امْرِئٍ إِلَّا بِطِيبِ نَفْسٍ مِنْهُ
কারও সম্পদ তার আন্তরিক সন্তোষ ছাড়া হালাল নয়। (মুসনাদে আহমাদ: ২০৬৯৫)
বিশেষত আমাদের দেশে বাজার, স্টেশন, বন্দরসহ বিভিন্ন জায়গায় জনসেবা, জনসভা, খাবার বিতরণ ইত্যাদি অজুহাতে চাঁদাবাজির নামে যা চলে, কিছু মানুষ সম্পূর্ণ অন্যায্য ও অধিকারবহির্ভুতভাবে পেশিশক্তি ব্যবহার করে মানুষের অর্থ লুট করে। ইসলামের দৃষ্টিতে এটা জুলুম; ডাকাতি, ছিনতাই বা চুরির মতোই গর্হিত অপরাধ এবং গুনাহের কাজ। এই প্রক্রিয়ায় যে সম্পদ অর্জন করা হয়, তা নিঃসন্দেহে অবৈধ ও হারাম।
অসহায় মানুষকে সাহায্য করতে চাইলে সেজন্য নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী দান করার পাশাপাশি উন্মুক্তভাবে অনুদান সংগ্রহ করা যেতে পারে। কোনো ধরনের চাপ সৃষ্টি করা ছাড়া মানুষ যদি স্বেচ্ছায় দান করে, তাহলে তা সংগ্রহ করা এবং অসহায় মানুষের সাহায্য বা জনসেবায় কাজে লাগানো জায়েজ হবে।
বিপদগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানো অসহায় মানুষকে সহযোগিতা করা ইসলামে অত্যন্ত উত্তম ও ফজিলতপূর্ণ কাজ। এটা নবিজির (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল। উম্মুল মুমিনিন খাদিজা (রা.) নবিজির বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করে বলেছিলেন,
إِنَّكَ لَتَصِلُ الرَّحِمَ، وَتَحْمِلُ الْكَلَّ، وَتَكْسِبُ الْمَعْدُومَ، وَتَقْرِي الضَّيْفَ، وَتُعِينُ عَلَى نَوَائِبِ الْحَقِّ
আপনি আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষা করেন, অসহায় লোকদের ভার বহন করেন, নিঃস্ব লোকদের উপার্জন করে দেন, অতিথিদের আপ্যায়ন করেন এবং বিপদাপদে পতিত মানুষকে সাহায্য করেন। (সহিহ বুখারি: ০৩)
ওএফএফ/জিকেএস