মূল্য বৃদ্ধির আশায় খেতের ফসল দেরিতে বিক্রয়ের বিধান

ইসলাম ডেস্ক
ইসলাম ডেস্ক ইসলাম ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০:৫০ এএম, ২৫ অক্টোবর ২০২৪
খাদ্য-শস্যের যে কোনো রকম মজুতকরণ ইসলামে নিষিদ্ধ নয়

মজুতদারি অর্থাৎ বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির উদ্দেশ্যে খাদ্য-শস্য মজুত করা ইসলােমে নিষিদ্ধ। আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,

مَنِ احْتَكَرَ فَهُوَ خَاطِئٌ
যে ব্যক্তি (খাদ্য ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী) মজুত করে সে গুনাহগার। (সহিহ মুসলিম: ১৬০৫)

তবে ইসলামের এ নিষেধাজ্ঞা খাদ্য-শস্যের যে কোনো রকম মজুতকরণের ক্ষেত্রেই পযোজ্য নয়। বরং বাজারে সংকট সৃষ্টি হয়, মানুষ অভাব অনটনের শিকার হয় এবং দ্রব্যমূল্য অস্বাভাবিক বেড়ে যায় -এ রকম মজুতকরণের ক্ষেত্রে পযোজ্য। বর্তমানে যেটিকে মনোপলি বা সিন্ডিকেট বলা হয়ে থাকে। দেখা যায়, মুষ্টিমেয় কতক ব্যবসায়ীর হাতেই খাদ্য-পণ্যের মূল কারবারগুলো থাকে এবং অনেক সময় তারা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে দাম বাড়িয়ে থাকে।

কাঙ্খিত মুনাফা লাভের আশায় নিজের খেতের ফসল বিক্রি না করে মূল্য বৃদ্ধির অপেক্ষায় রেখে দেওয়া শরীয়ত নিষিদ্ধ ইহতিকার বা মজুতদারির অন্তর্ভুক্ত নয় এবং নাজায়েজও নয়।

একইভাবে কোনো ফসল উৎপন্ন হওয়ার মৌসুমে তা বাজার থেকে কিনে গুদামজাত বা মজুত করা এবং সাধারণভাবে দাম বৃদ্ধির পর বিক্রি করাও নিষিদ্ধ বা নাজায়েজ নয় যদি ওই মজুতকরণের কারণে বাজারে ওই পণ্যের সংকট সৃষ্টি না হয়, মানুষ কষ্টে না পড়ে এবং অস্বাভাবিকভাবে দাম বেড়ে না যায়।

কেউ যদি ধানের মৌসুমে বাজার প্রভাবিত হয় না এই পরিমাণ ধান কিনে মজুত করে রাখে, এরপর স্বাভাবিকভাবে বাজারে ধানের দাম বেড়ে গেলে বিক্রি করে, তাহলে তা নিষিদ্ধ ‘ইহতিকার’ তথা মজুদকরণের আওতায় পড়বে না।

কিন্তু যদি একই এলাকায় বহু মানুষ এ পরিমাণ ধান কিনে মজুদ করে রাখে যার দ্বারা এলাকায় ধানের সংকট দেখা দেয় এবং বাজারে ধানের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যায়, তাহলে তখন তা অন্যায় ও গুনাহের কাজ হবে।

কেউ যদি অনেক জমির মালিক হয় এবং তার গোডাউনে অনেক বেশি পরিমাণে খাদ্যশস্য জমা করে রাখে, অন্যদিকে বাজারে খাদ্য সংকট সৃষ্টি হয়ে যায়, তবে সেক্ষেত্রেও তার ফসলগুলো বিক্রি করে দিয়ে বাজারের খাদ্য সংকট দূর করা এবং গণমানুষের কষ্ট লাঘব করা তার জন্য আবশ্যক হবে।

ওএফএফ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।