রেস্টুরেন্টে ‘অতিরিক্ত সুবিধা’র জন্য বখশিশ দেওয়া কি জায়েজ?
আমাদের দেশে হোটেল-রেস্টুরেন্টে বয় বা কর্মচারীদের বখশিশ দেওয়ার প্রচলন আছে। কেউ যদি স্বেচ্ছায় খুশি হয়ে এ রকম বখশিশ দেয়, বখশিশ দিয়ে ‘অতিরিক্ত সুবিধা’ (ন্যায্য পাওনার চেয়ে বেশি খাবার ইত্যাদি) গ্রহণ না করে বা সে রকম কোনো শর্ত না থাকে, তাহলে এই বখশিশ দেওয়া জায়েজ হবে এবং রেস্টুরেন্টের বয় বা কর্মচারীদের জন্য তা গ্রহণ করাও জায়েজ হবে।
কিন্তু বখশিশ যদি ‘অতিরিক্ত সুবিধা’র জন্য হয়, তাহলে তা ঘুস বা উৎকোচ হিসেবে গণ্য হবে। এরকম বখশিশ দেওয়া-নেওয়া হারাম। হোটেলের কর্মচারীর জন্য যেমন এরকম বখশিশ গ্রহণ করা নাজায়েজ, গ্রাহকের জন্যও এরকম বখশিশ দেওয়া এবং এর বিনিময়ে অতিরিক্ত সুবিধা নেওয়া নাজায়েজ।
যেহেতু বখশিশের সাথে অন্যায় সুবিধা পাওয়ার শর্ত বা প্রত্যাশা যুক্ত থাকায় তা ঘুসে পর্যবসিত হয়। ঘুস দেওয়া-নেওয়া হারাম। নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ঘুসদাতা ও গ্রহিতাকে অভিশাপ দিয়েছেন। (সুনানে তিরমিজি: ১৩৩৭)
ঘুস দিয়ে চাকরি নেওয়ার বিধান
ঘুস দিয়ে চাকরি নেওয়া নাজায়েজ। ঘুস দিয়ে চাকরি নিলে একদিকে ঘুস প্রদানের গুনাহ হয়, অন্যদিকে ঘুসদাতা অযোগ্য হলে অন্য চাকরিপ্রার্থীর হক নষ্ট করারও গুনাহ হয়। তাই এই কাজ থেকে বিরত থাকা কর্তব্য।
তবে কেউ যদি প্রকৃতপক্ষে চাকরির যোগ্য হয় এবং ঘুস প্রদান হারাম হওয়া সত্ত্বেও ঘুস দিয়ে চাকরি নেয় আর পরবর্তীতে সে যথাযথভাবে দায়িত্ব আঞ্জাম দেয়, তাহলে তার চাকরি নেওয়ার প্রক্রিয়া নাজায়েজ হলেও তার চাকরির বেতন হালাল হবে।
আর যদি সে তার কর্মক্ষেত্রে অযোগ্য হয় এবং যথাযথভাবে দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়, তাহলে তার জন্য ওেই চাকরিতে থাকা জায়েজ হবে না, যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন না করে বেতন নেওয়াও জায়েজ হবে না।
উল্লেখ্য যে, ঘুসদাতা যদি নিজের কোনো ন্যায্য প্রাপ্য জিনিস বা অধিকার আদায়ের জন্য বা কারো জুলুম থেকে বাঁচার জন্য নিরুপায় হয়ে ঘুস দেয়, তাহলে সে গুনাহগার হবে না এবং ওপরে উল্লিখিত আল্লাহর রাসুলের (সা.) অভিশাপের অন্তর্ভুক্ত হবে না। কিন্তু ঘুস গ্রহণকারী সর্বাবস্থায় অভিশপ্ত ও মহাপাপী।
ওএফএফ/এএসএম