যে জান্নাতি ব্যক্তির কথা বলে হেসেছিলেন নবিজি (সা.)

ইসলাম ডেস্ক
ইসলাম ডেস্ক ইসলাম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৮:৪৭ পিএম, ০৪ অক্টোবর ২০২৪
মসজিদে নববি

আল্লাহ রাহমানুর রাহিম; পরম করুণাময়, দয়ার আধার। বান্দার প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ ও ইহসানের কোনো সীমা নেই। দুনিয়াতে মানুষ পাপাচারে লিপ্ত হয়, চরম সীমালঙঘন করে, এরপরও আল্লাহ ছাড় দেন, তওবার জন্য সময় দেন। আল্লাহর দয়া না হলে দুনিয়ার বেশিরভাগ মানুষই অবাধ্যতার অপরাধে ধ্বংস হয়ে যেতো।

বান্দা গুনাহ করলে আল্লাহ অনেক সময় ক্ষমা করে দেন, অনেক সময় দুনিয়া বা আখেরাতের শাস্তির ফয়সালা করেন। গুনাহের শাস্তি হয় গুনাহের সমপরিমাণ। আল্লাহ জুলুম করেন না। আর যদি বান্দা আল্লাহর আনুগত্য করে, নেক কাজ করে, তাহলে আল্লাহ বহুগুণ বেশি সওয়াব দান করেন। আল্লাহ বলেন, নিশ্চয় আল্লাহ অণু পরিমাণও জুলুম করেন না। আর যদি সেটি ভাল কাজ হয়, তিনি তাকে দ্বিগুণ করে দেন এবং তাঁর পক্ষ থেকে বিপুল প্রতিদান প্রদান করেন। (সুরা নিসা: ৪০)

এ আয়াতে বিপুল পরিমাণ সওয়াবের কথা বলা হয়েছে, সওয়াবর বৃদ্ধির কোনো পরিমাণ উল্লেখ করা হয়নি। অন্য দুটি আয়াত ও হাদিস থেকে বোঝা যায় মুমিনের নেক কাজের সওয়াব কমপক্ষে দশগুণ বাড়ে, আর আল্লাহর ইচ্ছায় তা সাত শত গুণেরও বেশি বাড়তে পারে। আল্লাহ তাআলা বলেন, যে সৎকাজ নিয়ে এসেছে, তার জন্য হবে তার দশ গুণ। আর যে অসৎকাজ নিয়ে এসেছে, তাকে অনুরূপই প্রতিদান দেয়া হবে এবং তাদের ওপর জুলুম করা হবে না। (সুরা আনআম: ১৬০)

বান্দা যদি শয়তানের ধোঁকায় পড়ে গুনাহ করে ফেলে পরে যথাযথভাবে অনুতপ্ত হয়, তওবা করে, তাহলে আল্লাহ তাআলা বান্দাকে ক্ষমা করে দেন। শুধু তাই নয়, অনেক ক্ষেত্রে আল্লাহ রাহমানুর রাহিম তার গুনাহগুলো পূণ্যে পরিণত করে দেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, যে তাওবা করে, ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, আল্লাহ তাদের পাপগুলোকে পূণ্য দ্বারা পরিবর্তন করে দেবেন। আল্লাহ অতীব ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (সুরা ফুরকান: ৭০)

গুনাহ পূণ্য দ্বারা পরিবর্তন করার একটা অর্থ হলো, যে বান্দা তওবা করে আল্লাহর পথ অবলম্বন করে, আল্লাহ তাআলা তার অবস্থার পরিবর্তন ঘটান। আগে সে পাপাচারে লিপ্ত থাকতো, এখন সে সৎকর্ম করে। আগে মানুষকে গুনাহের পথে নিয়ে যেতো, ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে কাজ করতো, এখন সম্পূর্ণ বিপরীত কাজ করে। এভাবে আল্লাহ তার গুনাহগুলো পূণ্যে পরিবর্তন করেন। এর অন্য একটি অর্থ হলো, তার পাপগুলো নেকি দিয়ে পরিবর্তন করে দেওয়া হয়। এ রকম নেয়ামতের উল্লেখ হাদিসেও পাওয়া যায়।

হজরত আবু জর (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, আমি ওই ব্যক্তির ব্যাপারে জানি যে জাহান্নাম থেকে সবার শেষে মুক্তি পাবে এবং সবার শেষে জান্নাতে প্রবেশ করবে। ওই ব্যক্তিকে যখন নিয়ে আসা হবে, আল্লাহ বলবেন, বড় পাপগুলো গোপন রেখে তার ছোট পাপ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করো। তাকে বলা হবে, তুমি অমুক অমুক পাপ অমুক অমুক দিন করেছ। অমুক অমুক পাপ অমুক অমুক দিন করেছ। তারপর তাকে বলা হবে, তোমার প্রত্যেক পাপের পরিবর্তে তোমাকে একটি করে নেকি দেওয়া হচ্ছে। সে বলবে, হে আমার রব! আমি এমন অনেক কিছু (গুনাহ) করেছি, এখানে তা দেখছি না! বর্ণনাকারী বলেন, এ কথা বলে রাসুল (সা.) এত হাসলেন যে তার মাড়ির দাঁত পর্যন্ত দেখা গেলো। (তাফসিরে ইবনে কাসির: ৬/১২৭)

আল্লাহ আমাদেরকে তার সন্তুষ্টি, রহমত এবং অপরিসীম নেয়ামতে পূর্ণ জান্নাত লাভ করার তওফিক দান করুন!

ওএফএফ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।