কুকুর শোয়ার কারণে মসজিদের আঙিনা নাপাক হবে কি?

ইসলাম ডেস্ক
ইসলাম ডেস্ক ইসলাম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১:২৫ পিএম, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
মসজিদের আঙিনায় একটি কুকুর

কুকুরের শরীর নাপাক নয়। তবে কুকুরের মলমুত্র ও লালা নাপাক। কুকুর যদি মসজিদের সিঁড়িতে বা আঙিনায় শুয়ে থাকে বা ঘুমায়, লালা বা অন্য কোনো নাপাকির চিহ্ন দেখা না যায়, তাহলে শুধু শরীর লাগার কারণে মসজিদের সিঁড়ি বা আঙিনা নাপাক হবে না।

পবিত্র পানি পড়ে কুকুরের শরীর ভিজলে ওই ভেজা শরীরও নাপাক নয়। তাই বৃষ্টি বা এ রকম পবিত্র পানিতে ভেজা কোনো কুকুর যদি মসজিদের আঙিনায় বসে বা শোয়, তাহলেও আঙিনা নাপাক হবে না। তবে কুকুরের শরীর নাপাক কোনো তরলে ভেজার সম্ভাবনা থাকলে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।

একইভাবে শরীরে বা কাপড়ে কুকুরের শুকনো বা পবিত্র পানিতে ভিজে যাওয়া শরীর লাগলে কাপড় বা শরীর নাপাক হবে না। তবে কুকুরের লালা যেহেতু নাপাক, তাই কুকুর যদি কামড়ে ধরে, জিহ্বা দিয়ে চাটে বা অন্য যে কোনোভাবে কুকুরের লালা লাগলে কাপড় ও শরীর নাপাক হয়ে যাবে।

উল্লেখ্য যে, কোনো প্রয়োজন ছাড়া শখ করে কুকুর পোষা ইসলামে নিষিদ্ধ। তবে প্রয়োজন থাকলে যেমন বাড়িঘর, ক্ষেত-খামার, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা, অপরাধের উৎস অনুসন্ধান বা অপরাধী চিহ্নিত করা, শিকার করা ইত্যাদির জন্য কুকুর পোষা বৈধ। রাসুল সা. বলেছেন,

مَنِ اقْتَنَى كَلْبًا، لَيْسَ بِكَلْبِ صَيْدٍ، وَلَا مَاشِيَةٍ، وَلَا أَرْضٍ، فَإِنّهُ يَنْقُصُ مِنْ أَجْرِهِ قِيرَاطَانِ كُلّ يَوْمٍ.

যে ব্যক্তি শিকার করা বা গবাদি পশু অথবা শস্যক্ষেত পাহারা দেওয়ার উদ্দেশ্য ছাড়া কুকুর পোষে ওই ব্যক্তির প্রতিদিন দুই কিরাত পরিমাণ নেকি হ্রাস পায়। (সহিহ মুসলিম: ১৫৭৫)

এ হাদিস এবং আরও কিছু হাদিসে সওয়াবের পরিমাণ বোঝাতে ‘কিরাত’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। এ হাদিসের ব্যাখ্যায় ‘কিরাত’ শব্দের অর্থ সম্পর্কে ইমাম নববি (রহ.) লিখেছেন, ‘‘কিরাত” একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ যা আল্লাহ তাআলা জানেন।’ অর্থাৎ বিনা প্রয়োজনে কুকুর পুষলে আমলনামা থেকে আল্লাহর ইচ্ছা অনুযায়ী কিছু পরিমাণ সওয়াব কমে যেতে পারে।

তবে আল্লাহর সৃষ্টি হিসেবে সব জীবজন্তুর মতোই কুকুর প্রতি দয়া করা, কুকুরকে খাবার-পানি দেওয়া, কোনো বিপদে পড়লে উদ্ধার করা সওয়াবের কাজ। বিপদজনক বা ক্ষতিকর না হয়ে উঠলে কুকুরকে কোনোভাবে কষ্ট দেওয়া, হত্যা করা গুনাহের কাজ। হাদিসে এসেছে বনি ইসরাইলের এক ব্যাভিচারী নারী কুকুরকে পানি পান করানোর কারণে আল্লাহর ক্ষমা লাভ করেছিলো। রাসুল (সা.) বলেন, একবার এক তৃষ্ণার্ত কুকুর কূপের পাশে ঘোরাঘুরি করছিল। তৃষ্ণায় তার প্রাণ বের হওয়ার উপক্রম হয়। বনি ইসরাইলের এক ব্যভিচারী নারী তা দেখতে পেয়ে নিজের পায়ের মোজা খুলে মোজায় পানি ভরে কুকুরটিকে পানি পান করায়। এ কারণে তার আগের সব পাপ ক্ষমা করে দেওয়া হয়। (সহিহ বুখারি: ৩৪৬৭)

ওএফএফ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।