মহানবির (সা.) উত্তম জীবনাদর্শ

ইসলাম ডেস্ক
ইসলাম ডেস্ক ইসলাম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬:৩৬ পিএম, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
মদিনার মসজিদে নববি

মুফতি খালেদ সাইফুল্লাহ

মহানবি হজরত মুহাম্মাদের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জীবনই সর্বোৎকৃষ্ট পূর্ণাঙ্গ জীবন। আল্লাহ তাআলা নিজ জ্ঞান ও প্রজ্ঞার ভিত্তিতে তাকে শেষ নবি ও কিয়ামত পর্যন্ত আগত সকল মানুষের জন্য আদর্শ হিসেবে মনোনীত করেছেন, এবং তাকে বানিয়েছেন সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ। তার জীবন আল্লাহ তাআলা তার বিশেষ তত্ত্বাবধানে গড়ে তুলেছেন। তার বরকতময় জীবনের সঙ্গে আমাদের পরিচয় হওয়া আবশ্যক। যেন তার আদর্শ আমাদের মুক্তির পথ হতে পারে।

তার জীবনাদর্শে রয়েছে মানবজাতির জন্য শিক্ষা ও উপদেশ। তার জীবনের প্রতিটি পর্বই উম্মতের জন্য আদর্শ। যুবক হিসেবে তিনি আদর্শ যুবক, স্বামী হিসেবে আদর্শ স্বামী, বন্ধু হিসেবে ছিলেন আদর্শ বন্ধু, শিক্ষক হিসেবে তিনি ছিলেন আদর্শ শিক্ষক, শাসক হিসেবে তিনি ছিলেন একজন আদর্শ শাসক।

নবিজির জিবনীগ্রন্থগুলোতে আমরা তার জীবনের সব দিক সম্পর্কেই জানতে পারি। তিনি শিশুদের সঙ্গে কেমন আচরণ করতেন, পুত্র-কন্যাদের সঙ্গে তিনি কেমন ছিলেন, আত্মীয়-স্বজনদের হক রক্ষায় তাঁর আদর্শ কী ছিল, প্রতিবেশীদের অধিকার রক্ষার জন্য তিনি কতটুকু সচেতন ছিলেন, এমন কি পারিবারিক গোপন বিষয়াদির ব্যপারেও দিকনির্দেশনা পাই তার জীবনবৃত্তান্তে। মহানবির (সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়াসাল্লাম) জীবনের সব দিকই আমাদের সামনে পরিস্কার। তার জীবনের কোনো দিক গোপন নেই।

নবিজির (সা.) নিস্কলুষ জীবন, সততা ও উন্নত চরিত্রই ছিল তার নবুয়্যতের সত্যতার বড় দলিল। কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, আর যখন তাদের সামনে আমার আয়াতসমূহ সুস্পষ্টরূপে পাঠ করা হয়, তখন, যারা আমার সাক্ষাতের আশা রাখে না, তারা বলে, ‘এটা ছাড়া অন্য কোরআন নিয়ে এসো অথবা একে বদলাও’। বলো, ‘আমার নিজের পক্ষ থেকে এতে কোনো পরিবর্তনের অধিকার আমার নেই। আমি তো শুধু আমার প্রতি অবতীর্ণ ওহির অনুসরণ করি। নিশ্চয় আমি যদি রবের অবাধ্য হই তবে ভয় করি কঠিন দিনের আজাবের’। বলো ‘যদি আল্লাহ চাইতেন, আমি তোমাদের সামনে কোরআন পাঠ করতাম না। আর তিনিও তোমাদের এ ব্যাপারে অবহিত করতেন না। আমি তো এর আগে একটা দীর্ঘ সময় তোমাদের মাঝে কাটিয়েছি, তা সত্ত্বেও তোমরা কি বুঝবে না? (সুরা ইউনুস: ১৫, ১৬)

অর্থাৎ আমাকে তোমরা দীর্ঘ দিন দেখেছ। আমার চরিত্র, সততা, আমানতদারিতা সম্পর্কে তোমরা ভালো করেই জান। তাই তোমাদের বোঝা উচিত আল্লাহর ব্যাপারে আমি মিথ্যা বলতে পারি না।

আল্লাহ তাআলা তাকে সমস্ত পাপ-পঙ্কিলতা ও ভুল-ত্রুটি থেকে মুক্ত রেখেছেন। নবি হওয়ার আগেও তিনি কোনো ধরনের পাপে জড়িত হননি। তিনি নবি হওয়ার আগেও নিষ্পাপ, নবি হওয়ার পরও নিষ্পাপ ছিলেন। যেন তিনি সব মানুষের জন্য আদর্শ হতে পারেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, অবশ্যই তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসুলের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ তাদের জন্য যারা আল্লাহ ও পরকাল প্রত্যাশা করে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে। (সুরা আহজাব: ২১)

যেহেতু আল্লাহ তাআলা তার রাসুলকে বিশ্বজগতের জন্য রহমত বানিয়েছেন, তার আদর্শকে অনুসরণ করা মানুষের জন্য আবশ্যক করেছেন, তাই তিনি তার জীবনকে নিজের বিশেষ তত্ত্বাবধানে গড়ে তুলেছেন এবং সমস্ত পাপ ও পঙ্কিলতা থেকে মুক্ত রেখেছেন। তিনি মানবজাতির পথপদর্শক এবং তার আদর্শই সর্বোত্তম আদর্শ। কথা-কাজে, চিন্তা-চেতনায়, আকিদা-বিশ্বাসে, ব্যক্তিগত, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে মহানবির (সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়াসাল্লাম) আদর্শ অনুসরণ করলে আমরা সাফল্য লাভ করবো। আল্লাহ তাআলা আমাদেকে তাওফিক দান করুন!

লেখক: শিক্ষা সচিব, জামিয়াতুল কুরআন আল ইসলামিয়া, ব্রহ্মণবাড়িয়া

ওএফএফ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।