ধূমপানের পর নামাজ আদায় করলে কি তা কবুল হবে?
ধূমপানের অভ্যাসে আর্থিক অপচয় ও সাস্থ্যগত গুরুতর ক্ষতি থাকায় ধূমপানের অভ্যাস করা গুনাহের কাজ। আল্লাহ তাআলা বলেছেন,
وَلا تُلْقُوا بِأَيْدِيكُمْ إِلَى التَّهْلُكَةِ
তোমরা নিজের হাতে নিজেদের ধ্বংসে নিক্ষেপ করো না। (সুরা বাকারা: ১৯৫)
কিন্তু ধূমপান করলে শরীর নাপাক হয়ে যায় বা ৪০ দিন শরীর নাপাক থাকে এ রকম ধারণা সঠিক নয়। ধূমপান করলে অজুও ভাঙে না। ধূমপানের কারণে ইবাদত কবুল না হওয়ারও কোনো কারণ নেই।
তবে দুর্গন্ধযুক্ত অবস্থায় নামাযে দাঁড়ানো মাকরুহ বা অপছন্দনীয় হওয়ায় ধূমপানের পর মুখের দুর্গন্ধ দূর না করে নামাজে দাঁড়ানো মাকরুহ হবে। মুখে দুর্গন্ধ নিয়ে মসজিদে ঢুকতেও নিষেধ করা হয়েছে হাদিসে। রাসুল (সা.) বলেছেন,
مَنْ أَكَلَ الْبَصَلَ وَالثُّومَ وَالْكُرَّاثَ فَلَا يَقْرَبَنَّ مَسْجِدَنَا، فَإِنَّ الْمَلَائِكَةَ تَتَأَذَّى مِمَّا يَتَأَذَّى مِنْهُ بَنُو آدَمَ
যে পেঁয়াজ, রসুন এবং পেঁয়াজের মতো গন্ধ হয় এমন কোনো সবজি খাবে, সে যেন আমাদের মসজিদের ধারে কাছেও না আসে, কারণ মানুষ যে খারাপ গন্ধে কষ্ট পায়, ফেরেশতারাও কষ্ট পায়। (সহিহ মুসলিম)
বিড়ি-সিগারেটের দুর্গন্ধ পেঁয়াজ-রসুনের দুর্গন্ধের চেয়ে তীব্র হয়ে থাকে। তাই সিগারেট খেয়ে মসজিদে গিয়ে অন্যদের কষ্ট দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। তবে সিগারেট খাওয়ার অভ্যাস ছাড়তে না পারলে নামাজ পড়া বা মসজিদে যাওয়া ছেড়ে দেওয়া যবে না। সিগারেট খাওয়ার অভ্যাস ছেড়ে দেওয়ার চেষ্টা করার পাশাপাশি মসজিদে ঢোকা বা নামায আদায়ের আগে ব্রাশ করে বা অন্য যে কোনো উপায়ে মুখ ও শরীরের দুর্গন্ধ দূর করে নিতে হবে।
মদ খেলে কি ৪০ দিন শরীর নাপাক থাকে?
একটি হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন কেউ মদ পান করলে পরবর্তী ৪০ দিন আল্লাহর কাছে তার নামাজ কবুল হয় না। (সুনানে তিরমিজি) এ হাদিসের উদ্দেশ্য মদ্যপান কত গর্হিত গোনাহ তা বোঝানো এবং মানুষকে সাবধান করা। মদ্যপান করলেও ৪০ দিন শরীর নাপাক থাকে না বা নামাজ নিষিদ্ধ হয়ে যায় না। মদ নাপাক ও মদ্যপান গর্হিত হারাম কাজ হলেও, শয়তানের ধোঁকায় পড়ে কখনও মদ খেয়ে ফেললে সেজন্য নামাজ বাদ দেওয়া যাবে না। নামাজ পড়তে হবে এবং মদ খাওয়ার গর্হিত গুনাহের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে।
ওএফএফ/জেআইএম