স্ত্রীর প্রতি ন্যায় আচরণ ফরজ

ইসলাম ডেস্ক
ইসলাম ডেস্ক ইসলাম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬:৩৩ পিএম, ২৯ আগস্ট ২০২৪
সুখী পারিবারিক জীবন গঠন করতে স্বামী-স্ত্রী দুজনের ভূমিকাই গুরুত্বপূর্ণ

বিবাহিত জীবন, বৈবাহিক সম্পর্ক মানুষের জীবনের বড় একটি অংশ অধিকার করে রাখে। বৈবাহিক সম্পর্ক সুন্দর হলে, সুখী হলে মানুষের দুনিয়াবি জীবন যেমন সুন্দর হয়, দীনের পথে থাকা, দীন পালন করাও সহজ হয়।

বৈবাহিক সম্পর্ককে সুন্দর রাখতে, সুখী পারিবারিক জীবন গঠন করতে স্বামী-স্ত্রী দুজনের ভূমিকাই গুরুত্বপূর্ণ। স্বামীর যেমন স্ত্রীর প্রতি দায়িত্ব আছে, স্বামীর প্রতিও স্ত্রীর দায়িত্ব আছে। দুজনেরই কর্তব্য পরস্পরের অধিকার রক্ষা করা, পরস্পরের প্রতি দায়িত্ব পালন করা। আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَ لَهُنَّ مِثۡلُ الَّذِیۡ عَلَیۡهِنَّ بِالۡمَعۡرُوۡفِ ۪

স্ত্রীদের রয়েছে বিধি মোতাবেক অধিকার যেমন আছে তাদের উপর (স্বামীদের) অধিকার। (সুরা বাকারা: ২২৮)

ইসলাম স্ত্রীকে নিজের চরিত্র হেফাজত করার নির্দেশ দেয়, স্বামীর আনুগত্য করার নির্দেশ দেয়। স্বামীকে নির্দেশ দেয় স্ত্রীর আবাসন ও ভরণপোষণের ব্যবস্থা করতে, স্ত্রীর সাথে উত্তম ও ন্যায় আচরণ করতে, সহনশীল হতে। স্ত্রীর প্রতি সর্বক্ষেত্রে ন্যায় উত্তম আচরণ করা স্বামীর ওপর ফরজ। আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَ عَاشِرُوۡهُنَّ بِالۡمَعۡرُوۡفِ فَاِنۡ كَرِهۡتُمُوۡهُنَّ فَعَسٰۤی اَنۡ تَكۡرَهُوۡا شَیۡئًا وَّ یَجۡعَلَ اللّٰهُ فِیۡهِ خَیۡرًا كَثِیۡرًا

তাদের সাথে দয়া ও সততার সঙ্গে জীবন যাপন কর, যদি তাদেরকে না-পছন্দ কর, তবে হতে পারে যে তোমরা যাকে না-পছন্দ করছ, তারই মধ্যে আল্লাহ বহু কল্যাণ দিয়ে রেখেছেন। (সুরা নিসা: ১৯)

এ আয়াতে স্ত্রীকে অপছন্দ করার কিছু কারণ থাকলেও স্বামীকে ধৈর্য ধারণ করতে, সহনশীল হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

স্ত্রীর প্রতি উত্তম আচরণের প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়েছে বিভিন্ন হাদিসেও। একটি হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, মুমিনদের মাঝে ঈমানে সেই পরিপূর্ণ, তাদের মাঝে যার চরিত্র সুন্দরতম। তোমাদের মধ্যে উত্তম হলো তারা, যারা তাদের স্ত্রীদের কাছে উত্তম। (সুনানে তিরমিজি)

আরেকটি হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, নারীদের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করো তাদেরকে তোমরা আল্লাহর আমানত হিসেবে গ্রহণ করেছো, আল্লাহর কালিমার মাধ্যমে তাদের সাথে সহবাস বৈধ করেছ। (তাবারি ফিত-তাফসীর)

নারীদের আবেগ বেশি। তাই তারা অনেক ক্ষেত্রে বেশি অভিমান করতে পারে, অবুঝের মতো আচরণ করতে পারে। এ সব ক্ষেত্রে স্বামীর কর্তব্য সহনশীল থাকা। রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, নারীদের প্রতি কল্যাণের (ও সদাচরণের) উপদেশ অঙ্গীকার গ্রহণ কর। পাজরের হাঁড়ের সবচেয়ে বেশি বাঁকা হল এর ওপরের অংশ। তুমি তাকে সোজা করতে গেলে তা ভেঙ্গে ফেলবে। আর তাকে যথাবস্থায় রাখলে তা সদা বাঁকাই থেকে যাবে। নারীদের প্রতি কল্যাণের উপদেশ গ্রহণ কর। (সহিহ ‍বুখারি)

তাই স্ত্রীর সাথে মার্জিত, সুন্দর ও সম্মানজনক আচরণ করুন। স্ত্রীর ছোট খাট ভুল-ত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখুন। স্ত্রীর স্বভাব, আচরণ, রুচি পুরোপুরি পছন্দ না হলেও সহনশীল থাকার চেষ্টা করুন।

স্ত্রী যদি গুরুতর অন্যায়ে জড়িয়ে পড়ে, তার সাথে যদি কোনোভাবেই থাকা সম্ভব না হয়, তাহলে সুন্দরভাবে আলাদা হয়ে যান। আল্লাহ তাআলা কোরআনে বৈবাহিক জীবনে সুন্দরভাবে একসাথে থাকা অথবা সুন্দরভাবে আলাদা হয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন,

فَاَمۡسِكُوۡهُنَّ بِمَعۡرُوۡفٍ اَوۡ سَرِّحُوۡهُنَّ بِمَعۡرُوۡفٍ ۪ وَ لَا تُمۡسِكُوۡهُنَّ ضِرَارًا لِّتَعۡتَدُوۡا وَ مَنۡ یَّفۡعَلۡ ذٰلِكَ فَقَدۡ ظَلَمَ نَفۡسَهٗ

হয় ভালোভাবে তাদের (স্ত্রীদের) রেখে দেবে অথবা ভালোভাবে তাদেরকে ছেড়ে দেবে। তাদেরকে কষ্ট দিয়ে সীমালঙ্ঘনের উদ্দেশ্যে তাদেরকে আটকে রেখো না। আর যে তা করবে সে তো নিজের প্রতি জুলুম করবে। (সুরা বাকারা: ২৩১)

ওএফএফ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।