রোজার ফিদিয়া আদায়ের পর সুস্থতা ফিরে পেলে করণীয়
কারো ওপর যদি ফরজ বা ওয়াজিব আমলের কাজা ওয়াজিব থাকে এবং সে ওই আমল করতে পুরোপুরি অপারগ হয়ে পড়ে, ভবিষ্যতে কাজা করতে পারবে সেরকম সম্ভাবনাও না থাকে, তাহলে ওই আমলের বদলে দরিদ্রদের সদকা করাকে ফিদয়া বলা হয়। কোরআনে অক্ষম ব্যক্তিদের রোজার ফিদয়া আদায়ের নির্দেশ দিয়ে আল্লাহ বলেন,
اَیَّامًا مَّعۡدُوۡدٰتٍ فَمَنۡ کَانَ مِنۡکُمۡ مَّرِیۡضًا اَوۡ عَلٰی سَفَرٍ فَعِدَّۃٌ مِّنۡ اَیَّامٍ اُخَرَ وَعَلَی الَّذِیۡنَ یُطِیۡقُوۡنَهٗ فِدۡیَۃٌ طَعَامُ مِسۡکِیۡنٍ فَمَنۡ تَطَوَّعَ خَیۡرًا فَهُوَ خَیۡرٌ لَّهٗ وَ اَنۡ تَصُوۡمُوۡا خَیۡرٌ لَّکُمۡ اِنۡ کُنۡتُمۡ تَعۡلَمُوۡنَ
(রোজা) নির্দিষ্ট কয়েক দিন। তবে তোমাদের মধ্যে যে অসুস্থ হবে, কিংবা সফরে থাকবে, তাহলে অন্যান্য দিনে সংখ্যা পূরণ করে নেবে। আর যাদের জন্য তা কষ্টকর হবে, তাদের কর্তব্য ফিদয়া- একজন দরিদ্রকে খাবার প্রদান করা। অতএব যে স্বেচ্ছায় অতিরিক্ত সৎকাজ করবে, তা তার জন্য কল্যাণকর হবে। আর সিয়াম পালন তোমাদের জন্য কল্যাণকর, যদি তোমরা জান। (সুরা বাকারা: ১৮৪)
রোজা রাখার সক্ষমতা থাকলে ফিদিয়া আদায় করা যায় না। অসুস্থতা বা অন্য কোনো কারণে ছুটে যাওয়া রোজার কাজা আদায় করার সক্ষমতা থাকলে কাজাই আদায় করতে হবে, ফিদিয়া দেওয়া যাবে না।
কেউ যদি সুস্থ হয়ে ওঠা বা রোজা রাখার সক্ষমতা অর্জনের ব্যাপারে নিরাশ হয়ে তার জিম্মায় ওয়াজিব থাকা কাজা রোজার ফিদিয়া আদায় করে, কিন্তু পরবর্তীতে আবার রোজা রাখার সক্ষমতা ফিরে পায়, তাহলে তার জন্য ওই রোজাগুলোর কাজা আদায় করা আবশ্যক। পূর্বের আদায়কৃত ফিদিয়া বাতিল হয়ে যাবে এবং তা নফল সদকা গণ্য হবে।
অন্তিম অসুস্থতায় রোজা কাজা হলে ফিদিয়া দিতে হবে?
জীবনের অন্তিম অসুস্থতায় রমজানের রোজা কাজা হলে অর্থাৎ যে অসুস্থতায় রোজা কাজা হয়েছে, ওই অসুস্থতার মাঝেই যদি কেউ মারা যায়, কাজা আদায়ের সুযোগ না পায়, তাহলে তার ছুটে যাওয়া রোজার ফিদিয়া দিতে হবে না। কারণ কাজা আদায়ের সুযোগ না পেলে কাজা ওয়াজিবই হয় না।
সাঈদ ইবনে জুবাইর (রহ.) থেকে বর্ণিত রয়েছে, আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেছেন, কোনো ব্যক্তি যদি রমজানে অসুস্থ হয় (যার কারণে রোযা রাখতে পারেনি) এবং ওই অসুস্থতার মধ্যেই মারা যায়, তাহলে তার ওপর কোনো কিছু ওয়াজিব হবে না। (মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক: ৭৬৩০)
ওএফএফ/জিকেএস