প্রতিটি কথা-কাজ যেন হয় অর্থবহ

ওমর ফারুক ফেরদৌস
ওমর ফারুক ফেরদৌস ওমর ফারুক ফেরদৌস , আলেম ও লেখক
প্রকাশিত: ০৪:৩৯ পিএম, ২৮ জুলাই ২০২৪
অনর্থক কথা ও কাজে ব্যস্ত থাকা মুমিনের জন্য শোভনীয় নয়

একজন মুমিনের প্রতিটি কথা ও কাজই কল্যাণকর ও অর্থবহ হওয়া উচিত। অনর্থক কথা ও কাজে ব্যস্ত থাকা মুমিনের জন্য শোভনীয় নয়। কোরআনের সুরা মুমিনুনে আল্লাহ তাআলা সফল মুমিনের অনেকগুলো বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করেছেন। অনর্থক কথা-কাজ থেকে বিরত থাকা সেগুলোর অন্যতম। প্রথম বৈশিষ্ট্য হিসেবে নামাজে বিনয়াবনত হওয়ার কথা উল্লেখ করার পরই এ বৈশিষ্ট্যের কথা বলা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন,

قَدۡ اَفۡلَحَ الۡمُؤۡمِنُوۡنَ قَدۡ اَفۡلَحَ الۡمُؤۡمِنُوۡنَ وَ الَّذِیۡنَ هُمۡ عَنِ اللَّغۡوِ مُعۡرِضُوۡنَ

অবশ্যই মুমিনগণ সফল হয়েছে, যারা নিজদের সালাতে বিনয়াবনত। আর যারা অনর্থক কথাকর্ম থেকে বিমুখ। (সুরা মুমিনুন: ১-৩)

আলী ইবনে হোসাইন (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,

مِنْ حُسْنِ إِسْلَامِ الْمَرْءِ تَرْكُهُ مَا لَا يَعْنِيهِ
কোন ব্যক্তির ইসলামের সৌন্দর্য এই যে, সে অনর্থক কথা ও কাজ পরিত্যাগ করবে। (সুনানে তিরমিজি: ২৩১৭)

তাই প্রত্যেকটা কথা বলার আগে, কাজ করার আগে চিন্তা করা উচিত এ কথাটি বা কাজটি আমার বা অন্যান্য মানুষের কল্যাণে কোনো ভূমিকা রাখবে কি না। এর কোনো ইতিবাচক প্রভাব আছে কি না। যদি তা না হয়, তাহলে তা না বলা বা না করাই বাঞ্চনীয়।

অনর্থক কাজ থেকে বিরত থাকার চেয়ে তুলনামূলক কঠিন অনর্থক কথা থেকে বিরত থাকা। অনর্থক কথা আমাদের অনেকের অভ্যাসে পরিণত হয়। মনের ভুলে বা অজান্তেই আমরা অনেক অনর্থক কথা বলে ফেলি। যা অনেক সময় বড় গুনাহের কারণ হয়। শত্রুতা ও বিদ্বেষ সৃষ্টি করে। যেমন অপবাদ, গালি গিবত ইত্যাদি গুনাহে আমরা জড়িয়ে পড়ি অনর্থক কথা বলতে বলতে। ইসলামে এগুলো জুলুম ও গুরুতর পাপ হিসেবে গণ্য হয়। কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেছেন,

مَا یَلۡفِظُ مِنۡ قَوۡلٍ اِلَّا لَدَیۡهِ رَقِیۡبٌ عَتِیۡدٌ
মানুষ যে কথাই উচ্চারণ করে, তা সংরক্ষণ করার জন্যে রয়েছে সদা-প্রস্তুত প্রহরী। (সুরা কাফ: ১৮)

আমরা কি ভাবি, আমার বলা একটা শব্দ বা বাক্যের কারণে আল্লাহ সন্তুষ্ট হয়ে যেতে পারেন। আবার আমার বলা একটা শব্দ বা বাক্য আমাকে জাহান্নামে টেনে নিতে পারে? আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,

إِنَّ الْعَبْدَ لَيَتَكَلَّمُ بِالْكَلِمَةِ مِنْ رِضْوَانِ اللَّهِ لَا يُلْقِي لَهَا بَالًا يَرْفَعُ اللَّهُ بِهَا دَرَجَاتٍ وَإِنَّ الْعَبْدَ لِيَتَكَلَّمُ بِالْكَلِمَةِ مِنْ سَخَطِ اللَّهِ لَا يُلْقِي لَهَا بَالًا يَهْوِي بِهَا فِي جَهَنَّمَ
মানুষ অনেক সময় খুব বেশি চিন্তা ভাবনা না করেই এমন কথা বলে, যে কথার কারণে আল্লাহ তাআলা সন্তুষ্ট হয়ে যান এবং তার মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন। আবার অনেক সময় মানুষ খুব বেশি চিন্তা ভাবনা না করে এমন কথা বলে যাতে আল্লাহ তাআলা অসন্তুষ্ট হন এবং ওই কথা তাকে জাহান্নামের দিকে নিয়ে যায়। (সহিহ বুখারি: ৬৪৭৭)

ওএফএফ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।