শুধু বংশ পরিচয়ের কারণে কেউ জান্নাতে যাবে?

ইসলাম ডেস্ক
ইসলাম ডেস্ক ইসলাম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০২:০৪ পিএম, ২৪ জুলাই ২০২৪

ইসলামে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন, আল্লাহর কাছে মর্যাদার অধিকারী হওয়া ও জান্নাত লাভ করার উপায় হলো উত্তম আমল। কুফর, শিরক বা গুনাহে লিপ্ত থাকলে শুধু বংশ পরিচয়ের কারণে কেউ আল্লাহর কাছে প্রিয় হয় না এবং বংশ পরিচয়ের কারণে কেউ জান্নাতেও যাবে না। কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেছেন,
یٰۤاَیُّهَا النَّاسُ اِنَّا خَلَقۡنٰكُمۡ مِّنۡ ذَكَرٍ وَّ اُنۡثٰی وَ جَعَلۡنٰكُمۡ شُعُوۡبًا وَّ قَبَآئِلَ لِتَعَارَفُوۡا ؕ اِنَّ اَكۡرَمَكُمۡ عِنۡدَ اللّٰهِ اَتۡقٰكُمۡ ؕ اِنَّ اللّٰهَ عَلِیۡمٌ خَبِیۡرٌ

হে মানুষ, আমি তোমাদের এক নারী ও এক পুরুষ থেকে সৃষ্টি করেছি আর বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি যাতে তোমরা পরস্পর পরিচিত হতে পার। তোমাদের মধ্যে আল্লাহর কাছে সেই অধিক মর্যাদাসম্পন্ন যে তোমাদের মধ্যে অধিক তাকওয়া সম্পন্ন। নিশ্চয় আল্লাহ তো সর্বজ্ঞ, সম্যক অবহিত। (সুরা হুজুরাত: ১৩)

কোরআনের বিভিন্ন আয়াতে জান্নাত লাভের শর্ত হিসেবে ঈমান ও নেক আমলের কথা বলা হয়েছে। জাহান্নামে যাওয়ার কারণ হিসেবে বলা হয়েছে শিরক, কুফর, জুলুম ও অন্যান্য পাপাচারের কথা। আল্লাহ তাআলা বলেন,

إِنَّهُ مَن يُشْرِكْ بِاللّهِ فَقَدْ حَرَّمَ اللّهُ عَلَيهِ الْجَنَّةَ وَمَأْوَاهُ النَّارُ وَمَا لِلظَّالِمِينَ مِنْ أَنصَارٍ

নিশ্চয় যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে শিরক করে, আল্লাহ তার জন্যে জান্নাত হারাম করে দেন। তার বাসস্থান হয় জাহান্নাম। অত্যাচারীদের কোন সাহায্যকারী নেই। (সুরা মায়েদা: ৭২)

হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) স্পষ্ট বলেছেন, যার আমল তাকে পিছিয়ে রাখে, বংশ পরিচয়ের কারণে সে এগিয়ে যেতে পারবে না। আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত একটি দীর্ঘ হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন,

مَنْ نَفَّسَ عَنْ مُؤْمِنٍ كُرْبَةً مِنْ كُرَبِ الدُّنيَا نَفَّسَ الله عَنْهُ كُربَةً مِنْ كُرَبِ يَوْمِ القِيَامَةِ وَمَنْ يَسَّر عَلَى مُعْسِرٍ يَسَّرَ الله عَلَيهِ في الدُّنْيَا وَالآخِرَةِ وَمَنْ سَتَرَ مُسْلِماً سَتَرَهُ الله في الدُّنْيَا وَالآخِرَةِ والله في عَونِ العَبْدِ مَا كَانَ العَبْدُ في عَونِ أخِيهِ وَمَنْ سَلَكَ طَريقاً يَلْتَمِسُ فِيهِ عِلْماً سَهَّلَ اللهُ لَهُ طَريقاً إِلَى الجَنَّةِ وَمَا اجْتَمَعَ قَوْمٌ في بَيت مِنْ بُيُوتِ اللهِ تَعَالَى يَتْلُونَ كِتَابَ اللهِ وَيَتَدَارَسُونَهُ بَيْنَهُمْ إلاَّ نَزَلَتْ عَلَيْهِمُ السَّكِينَةُ وَغَشِيتْهُمُ الرَّحْمَةُ وَحَفَّتْهُمُ المَلاَئِكَةُ وَذَكَرَهُمُ الله فِيمَنْ عِندَهُ وَمَنْ بَطَّأ بِهِ عَمَلُهُ لَمْ يُسْرِع بِهِ نَسَبُهُ

যে ব্যক্তি কোনো ‍মুসলমানের দুনিয়ার কোনো বিপদ দূর করবে, আল্লাহ তার কেয়ামতের দিনের কোনো বিপদ দূর করবেন। যে ব্যক্তি কোন ঋণ পরিশোধে অক্ষম ব্যক্তিকে ছাড় দেবে, আল্লাহ দুনিয়া ও আখেরাতে তাকে ছাড় দেবেন। যতক্ষণ পর্যন্ত বান্দা তার মুসলমান ভাইয়ের সহযোগিতা করতে থাকে, আল্লাহও ওই বান্দার সাহায্য করতে থাকেন। যে ব্যক্তি ইলম অর্জনের জন্য কোনো পথে চলে, তার জন্য আল্লাহ জান্নাতের পথ সহজ করে দেন। আর যখনই কোন সম্প্রদায় আল্লাহর কোন এক ঘরে একত্রিত হয়ে আল্লাহর কিতাব পাঠ করে ও অধ্যয়ন করে, তাদের ওপর প্রশান্তি অবতীর্ণ হয়, তাদেরকে আল্লাহর রহমত আচ্ছাদিত করে নেয়, ফেরেশতারা তাদেরকে ঘিরে নেয় এবং আল্লাহ তাআলা তার নিকটবর্তী ফেরেশতাদের মধ্যে তাদের কথা আলোচনা করেন। আর যাকে তার আমল পিছিয়ে রেখেছে, তার বংশ পরিচয় তাকে এগিয়ে নিতে পারবে না। (মুসনাদে আহমদ: ৭৪২৭)

ওএফএফ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।