মাকামে ইবরাহিমে যেভাবে নামাজ আদায় করেছিলেন নবিজি (সা.)

ওমর ফারুক ফেরদৌস
ওমর ফারুক ফেরদৌস ওমর ফারুক ফেরদৌস , আলেম ও লেখক
প্রকাশিত: ০৭:২১ পিএম, ০৪ জুন ২০২৪

যে পাথরে দাঁড়িয়ে আল্লাহর নবি ও খলিল হজরত ইবরাহিম (আ.) পবিত্র কাবা ঘর পুননির্মাণের সময় কাজ করেছিলেন, তাকে মাকামে ইবরাহিম বলা হয়। মসজিদুল হারামে কাবা ঘরের অদূরে পাথরটি স্থাপিত রয়েছে। হাদিসে পাথরটিকে জান্নাতের পাথর বলা হয়েছে। আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত রয়েছে আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,

إِنَّ الرُّكْنَ وَالْمَقَامَ يَاقُوتَتَانِ مِنْ يَاقُوتِ الْجَنَّةِ طَمَسَ اللَّهُ نورَهما وَلَو لم يطمِسْ نورَهما لأضاءا مَا بينَ المشرقِ والمغربِ
হাজারে আসওয়াদ ও মাকামে ইবরাহিম জান্নাতের ইয়াকুতসমূহের মধ্যে দুটি ইয়াকুত। আল্লাহ এগুলোর জ্যোতি দূর করে দিয়েছেন। যদি এ দুটি পাথরের জ্যোতি আল্লাহ তাআলা দূর করে না দিতেন, তবে এগুলোর আলোয় পূর্ব ও পশ্চিম দিগন্তের মধ্যকার সমস্ত ভূখণ্ড আলোকময় হয়ে যেতো। (সুনানে তিরমিজি: ৮৭৮)

কোরআনে নবি ইবরাহিম ও ইসমাইলকে (আ.) মাকামে ইবরাহিমের কাছে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায়ের নির্দেশ দেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَاِذۡ جَعَلۡنَا الۡبَیۡتَ مَثَابَۃً لِّلنَّاسِ وَ اَمۡنًا وَ اتَّخِذُوۡا مِنۡ مَّقَامِ اِبۡرٰهٖمَ مُصَلًّی
আর স্মরণ কর, যখন আমি কাবাকে মানুষের জন্য মিলনকেন্দ্র ও নিরাপদ স্থান বানালাম এবং বললাম, ‘তোমরা মাকামে ইবরাহিমকে নামাজের স্থানরূপে গ্রহণ কর’। (সুরা বাকারা: ১২৫)

তাওয়াফ-পরবর্তী ওয়াজিব দুই রাকাত নামাজ মাকামে ইবরাহিমের পেছনে দাঁড়িয়ে পড়া সুন্নত। নবিজি (সা.) তাওয়াফের নামাজ মাকামে ইবরাহিমের পেছনে দাঁড়িয়ে আদায় করেছিলেন। জাবের (রা.) বলেন, (বিদায় হজের সময়) নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মক্কায় এসে মসজিদুল হারামে প্রবেশ করলেন। হাজরে আসওয়াদে ইস্তিলাম করে ডান দিকে অগ্রসর হলেন। তিন চক্করে রমল করলেন, আর চার চক্করে স্বাভাবিকভাবে হেটে গেলেন। তারপর মাকামে ইবরাহিমে এসে কোরআনের আয়াত এ আয়াত পাঠ করলেন,

‏وَاتَّخِذُوا مِنْ مَقَامِ إِبْرَاهِيمَ مُصَلًّى
তোমরা মাকামে ইবরাহিমকে নামাজের স্থান হিসাবে গ্রহন কর। (সুরা বাকারা: ১২৫)

এবং মাকামে ইবরাহিমকে তার ও বায়তুল্লাহর মাঝে রেখে দুই রাকাত নামাজ আদায় করলেন। (সুনানে তিরমিজি: ৮৫৮)

এ হাদিস থেকে বোঝা যায়, নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বিদায় হজের সময় তাওয়াফের পরে নামাজ আদায় করেছিলেন মাকামে ইবরাহিমের পেছনে দাঁড়িয়ে কাবার দিকে মুখ করে।

তাওয়াফে সাতবার কাবা প্রদক্ষিণ করা শেষ হলে এ দুই রাকাত নামাজ পড়া ওয়াজিব। এই নামাজ মাকামে ইবরাহিমের পেছনে পড়া উত্তম হলেও ভিড়ের কারণে জায়গা না পেলে মসজিদে হারামের যে কোনো জায়গায় বা হারামের সীমার ভেতরে যে কোনো জায়গায় এই নামাজ পড়া যায়।

হারামের সীমার বাইরে তাওয়াফের নামাজ পড়া মাকরুহ; কিন্তু কেউ পড়লে ওয়াজিব আদায় হয়ে যাবে।

ওএফএফ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।