অজুর সময় কথা বলা কি নাজায়েজ?

ইসলাম ডেস্ক
ইসলাম ডেস্ক ইসলাম ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০:৫৪ এএম, ৩১ মে ২০২৪

ইসলামে অজু কিছু অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ধৌত করার মাধ্যমে পবিত্রতা অর্জনের পন্থা ও ইবাদত। কোরআনে আল্লাহ তাআলা নামাজের জন্য অজু করার নির্দেশ দিয়েছেন। নামাজ, তাওয়াফ, কোরআন স্পর্শ করার জন্য অজু অবস্থায় থাকা বাধ্যতামূলক। জিকির, তিলাওয়াতসহ অনেক আমল অজু ছাড়াও করা যায়, কিন্তু অজু অবস্থায় করলে সওয়াব বেড়ে যায়। কোনো আমলের উদ্দেশ্য ছাড়াও অজু করা, অজু অবস্থায় থাকা সওয়াবের কাজ। বিভিন্ন হাদিসে অজু অবস্থায় ঘুমানোরও ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। কোরআনে আল্লাহ সুবাহানাহু ওয়াতাআলা বলেছেন,

اِنَّ اللّٰهَ یُحِبُّ التَّوَّابِیۡنَ وَ یُحِبُّ الۡمُتَطَهِّرِیۡنَ

নিশ্চয়ই আল্লাহ তাওবাহকারীদের ভালবাসেন এবং যারা পবিত্র থাকে তাদেরও ভালবাসেন। (সুরা বাকারা:২২২)

অজু অবস্থায় প্রয়োজনীয় কথা বলা নাজায়েজ নয়। হাদিস থেকে আল্লাহর রাসুলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) অজুর সময় প্রয়োজনীয় কথা বলার দৃষ্টান্ত পাওয়া যায়। মুগিরা (রা.) বলেন, আমি আল্লাহর রাসুলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সাথে এক সফরে ছিলাম। অজু করার সময় আমি তাঁর মোজা খুলতে চাইলে তিনি বললেন, মোজা থাকুক, আমি পবিত্র অবস্থায় মোজা পরেছিলাম। এ কথা বলে তিনি মোজার ওপর ওপর মাসাহ করলেন। (সহিহ বুখারি ২০৬)

এ হাদিসটি যেমন মোজার ওপর মাসাহ জায়েজ হওয়ার দলিল, একইভাবে এই হাদিস থেকে এটাও বোঝা যায় যে, অজু করার সময় প্রয়োজনীয় কথা বলা জায়েজ। কারণ আল্লাহর রাসুল (সা.) অজু করা অবস্থায় হজরত মুগিরাকে (রা.) মোজা না খোলার কথা বলেছেন।

তবে অজু করার সময় অপ্রয়োজনীয় কথা থেকে বিরত থাকা উচিত যেন কথা বলতে গিয়ে অমনোগিতার কারণে অজুর কোনো অঙ্গ শুকনো না থেকে যায় এবং অজুর মাসনুন দোয়াগুলো ছুটে না যায়।

অজুর আগে ও পরে বেশ কিছু দোয়া আছে যেগুলোর ফজিলত বিভিন্ন হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। যেমন ‘বিসমিল্লাহ’ বলে অজু শুরু করা গুরুত্বপূর্ণ ও ফজিলতপূর্ণ সুন্নত। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘বিসমিল্লাহি ওয়াল-হামদুলিল্লাহ’ পড়ে অজু করলে যতক্ষণ অজু থাকবে, ফেরেশতাগণ তার নামে সাওয়াব লিখতে থাকবেন, যদিও সে কোন মুবাহ কাজে লিপ্ত থাকে। (তাবরানি)

ওমর ইবনে খাত্তাব (রা.) থেকে বর্ণিত একটি হাদিসে অজুর পর কালেমায়ে শাহাদাত পড়ার ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, পরিপূর্ণরূপে ওজু করে যে ব্যক্তি এ দোয়া পড়বে,

أَشهَدُ أَنْ لاَ إلهَ إِلاَّ اللهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّداً عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ

উচ্চারণ: আশহাদু আল-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়ারাসূলুহু।

অর্থ: আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন উপাস্য নেই; তিনি একক, তার কোন শরিক নেই এবং আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তার বান্দা ও রাসুল।

তার জন্য জান্নাতের আটটি দরজা খুলে দেওয়া হবে, সে যে দরজা দিয়ে ইচ্ছা জান্নাতে প্রবেশ করবে। (সহিহ মুসলিম: ৫৭৬)

ওএফএফ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।