জাকাতের টাকায় দরিদ্র শিক্ষার্থীর বকেয়া বেতন পরিশোধের বিধান

ইসলাম ডেস্ক
ইসলাম ডেস্ক ইসলাম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪:১৯ পিএম, ২৯ এপ্রিল ২০২৪

জাকাত ইসলামের ফরজ বিধান, ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের একটি। প্রত্যেক স্বাধীন, পূর্ণবয়স্ক ও সম্পদশালী মুসলমান পুরুষ ও নারীর প্রতি বছর নিজের সম্পদের একটি নির্দিষ্ট অংশ দরিদ্র-দুস্থদের মধ্যে বিতরণের নিয়মকে জাকাত বলা হয়। শরিয়ত নির্ধারিত সীমার বেশি সম্পদ হিজরি ১ বছর ধরে কারও কাছে থাকলে তাকে সম্পদশালী গণ্য করা হয় এবং তার বর্ধনশীল সম্পদের ২.৫ শতাংশ বা ১/৪০ অংশ দান করতে হয়। কোরআনে জাকাত শব্দের উল্লেখ এসেছে ৩২ বার, নামাজের পর জাকাতের কথাই সবচেয়ে বেশি বলা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَاَقِیۡمُوا الصَّلٰوۃَ وَاٰتُوا الزَّکٰوۃَ وَمَا تُقَدِّمُوۡا لِاَنۡفُسِکُمۡ مِّنۡ خَیۡرٍ تَجِدُوۡهُ عِنۡدَ اللّٰهِ اِنَّ اللّٰهَ بِمَا تَعۡمَلُوۡنَ بَصِیۡرٌ

আর তোমরা সালাত কায়েম কর ও জাকাত দাও এবং যে নেক আমল তোমরা নিজদের জন্য আগে পাঠাবে, তা আল্লাহর নিকট পাবে। তোমরা যা করছ নিশ্চয় আল্লাহ তার সম্যক দ্রষ্টা। (সুরা বাকারা: ১১০)

কেউ যদি এক বছর ধরে নেসাব পরিমাণ বর্ধনশীল সম্পত্তি অর্থাৎ ৭ তোলা বা ৮৭.৪৫ গ্রাম বা এর বেশি স্বর্ণ অথবা সাড়ে ৫২ তোলা বা ৬১২.৩৫ গ্রাম রৌপ্যের মালিক থাকে অথবা ৮৭.৪৫ গ্রাম বা এর বেশি স্বর্ণের মূল্যের সমপরিমাণ নগদ অর্থ তার কাছে থাকে, তাহলে ইসলামের দৃষ্টিতে সে সম্পদশালী ব্যক্তি গণ্য হবে এবং তার ওপর জাকাত ওয়াজিব হবে। নগদ অর্থ, স্বর্ণ/ রৌপ্য বা ব্যবসায়ের সম্পদ যেদিন নেসাব পর্যায়ে পৌঁছাবে, সেদিন থেকেই জাকাতের বর্ষগণনা শুরু হবে। জাকাতের বর্ষ পূর্ণ হওয়ার দিনে ওই ব্যক্তির মালিকানায় যে পরিমাণ বর্ধনশীল সম্পদ অর্থাৎ নগদ অর্থ, ব্যবসায়ের সম্পদ, স্বর্ণ বা রৌপ্য থাকবে, তার ৪০ ভাগের ১ ভাগ বা ২.৫ শতাংশ জাকাত হিসেবে দান করে দিতে হবে।

হিজরি ক্যালেন্ডার হিসাবে প্রতি বছর একবার জাকাতের হিসাব করতে হয়। আমাদের দেশে অনেকে রমজান মাসে জাকাতের হিসাব করেন। জাকাতের হিসাব করার পর সাথে সাথে পুরো অর্থ আদায় করা জরুরি নয়, বরং ওই অর্থ সারা বছরই অল্প অল্প করে আদায় করা যায়।

ইসলামে জাকাত দেওয়ার কিছু নির্দিষ্ট খাত আছে। যে কোনো নেক কাজে খরচ করলে জাকাত আদায় হয় না। যেমন মসজিদ নির্মাণের কাজে ব্যয় করলে জাকাত আদায় হবে না। জাকাত ব্যয়ের খাতগুলো বর্ণনা করে আল্লাহ বলেন, নিশ্চয় সদাকা হচ্ছে দরিদ্র ও অভাবীদের জন্য এবং এতে নিয়োজিত কর্মচারীদের জন্য, আর যাদের অন্তর আকৃষ্ট করতে হয় তাদের জন্য; তা বণ্টন করা যায় দাস আজাদ করার ক্ষেত্রে, ঋণগ্রস্তদের মধ্যে, আল্লাহর রাস্তায় এবং মুসাফিরদের মধ্যে। এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত, আর আল্লাহ মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়। (সুরা তওবা: ৬০)

স্কুল বা মাদরাসার বকেয়া বেতন ঋণের মতো। কোনো অভাবী শিক্ষার্থীর সম্মতিতে জাকাত আদায়ের নিয়তে তার বকেয়া বেতন পরিশোধ করলে জাকাত আদায় হয়ে যাবে। কেননা জাকাত গ্রহণের উপযুক্ত ব্যক্তির সম্মতিক্রমে জাকাতের টাকা দিয়ে তার ঋণ পরিশোধ করে দেওয়া হলেও জাকাত আদায় হয়ে যায়। এক্ষেত্রে জাকাত থেকে তার ঋণ পরিশোধ করা হচ্ছে- তাকে একথা জানানোও জরুরি নয়।

ওএফএফ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।